কেতুগ্রাম: উদ্যোগ নিয়েছিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী। চাকরি দেওয়ার কথাও জানানো হয়েছি সরকারিভাবে। অবশেষে মঙ্গলবার দুপুরে কেতুগ্রামের নির্যাতিতা রেণু খাতুন জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য দফতরে গিয়ে স্টাফ নার্স গ্রেড ২ পদে যোগ দিলেন। যোগ দেওয়ার পরই জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের কর্মীরা তাঁকে সংবর্ধনা জানান। এরপর তিনি জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের আধিকারিক প্রণব রায়ের কাছ থেকে তার কাজের দ্বায়িত্বভার বুঝে নেন। কাজে যোগদান করেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ধন্যবাদ জানান রেণু। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার প্রবল ইচ্ছাও প্রকাশ করেন তিনি। তবে কাজে যোগ দেওয়ার পর আগামীতে তিনি নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করবেন বলেও জানান। স্বাস্থ্য ভবন থেকে কোনও নির্দেশ না আশা পর্যন্ত আপাতত রেণু খাতুন জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য দপ্তরে কর্মরত থাকছেন বলে জানিয়েছেন জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রণব রায়।
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের অক্টোবর মাসে পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রামের চিনিসপুর গ্রামের বাসিন্দা আজিজুল হকের মেয়ে রেণু খাতুনের সঙ্গে কোজলসার সরিফুল শেখের বিয়ে হয়। বিয়ের আগে দীর্ঘদিন তাঁদের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। নার্সিংয়ের প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন। একাধিক বেসরকারি সংস্থায় কাজ করার পর তিনি সম্প্রতি রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরে নার্সপদে চাকরির পরীক্ষায় উত্তীর্ণও হয়েছিলেন। সেই চাকরিতে যোগ দেওয়ারও কথা ছিল। কিন্তু, চাকরিতে আপত্তি ছিল তাঁর স্বামী সরিফুল শেখের। স্ত্রী চাকরির পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর থেকেই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে শুরু করে সরিফুল। সরিফুলের ধারণা ছিল স্ত্রী সরকারি চাকরিতে যোগ দিলে তাঁদের সম্পর্কের অবনতি হতে পারে। এই ধারণার বশবর্তী হয়েই নক্কারজনক কাণ্ড ঘটিয়ে ফেলে সে।
রেণু যাতে যাতে কখনও চাকরি করতে না পারে সে জন্য ঘুমন্ত অবস্থায় স্ত্রীর হাতে কোপ দেয় সরিফুল। ঘটনাটি ঘটে ৪ জুন রাতে। ওই ঘটনার পরের দিন ৫ জুন এনিয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন রেণুর বাবা আজিজুল হক। অভিযোগ পাওয়ার পর পুলিশ দু’দিনের মধ্যেই সরিফুলকে গ্রেফতার করে। তারপর তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে মুর্শিদাবাদের ভরতপুর থানার তালগ্রাম থেকে গ্রেফতার করা হয় আসরফ আলি শেখ ও হাবিবুর রহমানকে। তারপর এই ঘটনায় গ্রেফতার করা হয় অন্যতম মাস্টারমাইন্ড সরিফুলের মাসতুতো ভাই চাঁদ মহম্মদকে। চারজনেই এখন পুলিশ হেফাজতে রয়েছে।