Panchayat Election Death Toll: ভোট ঘোষণার পর থেকে রাজ্যে মৃত ১৭, কোন জেলায় কত মৃত্যু জেনে নিন

Panchayat Election Death Toll: পঞ্চায়েত ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা হতেই মুর্শিদাবাদ থেকে কোচবিহার রাজ্যের নানা প্রান্ত থেকে লাগাতার এসেছে মৃত্যুর খবর। অসমর্থিত সূত্রে খবর, এখনও পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ১৫ জনের।

Panchayat Election Death Toll: ভোট ঘোষণার পর থেকে রাজ্যে মৃত ১৭, কোন জেলায় কত মৃত্যু জেনে নিন
গ্রাফিক্স - অভীক দেবনাথ
Follow Us:
| Updated on: Jul 07, 2023 | 10:59 PM

কলকাতা: পঞ্চায়েত ভোটের (Panchayat Election 2023) ঢাকে কাঠি পড়তেই রাজ্যের নানা প্রান্ত থেকে লাগাতার এসেছে অশান্তির খবর। মনোনয়ন থেকে স্ক্রুটিনি পর্ব, নির্বাচন ঘোষণা হওয়ার পর থেকে এখনও পর্যন্ত নির্বাচনী হিংসায় মৃত ১৭। অসমর্থিত সূত্রে খবর এমনই। মুর্শিদাবাদ থেকে কোচবিহার, ভাঙড় থেকে পুরুলিয়া, রাজ্যের নানা প্রান্ত থেকে লাগাতার এসেছে মৃত্যুর খবর। অসমর্থিত সূত্রে খবর, ভোট ঘোষণার পর থেকে এখনও পর্যন্ত গোটা রাজ্যে মৃত্যু হয়েছে ১৭ জনের।

৭ জুলাই বনগাঁয় মৃত ১

শুক্রবার বনগাঁর কালোপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে ধর্মপুর বিলের মাঠ এলাকায় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় এক ব্যক্তির দেহ উদ্ধার হয়। পাশে গুরুতর আহত অবস্থায় আরও এক ব্যক্তিকে উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় তৃণমূলকেই কাঠগড়ায় তুলেছেন বনগাঁ দক্ষিণের বিজেপি বিধায়ক স্বপন মজুমদার।

৭ জুলাই মুর্শিদাবাদে মৃত্যু কংগ্রেস কর্মীর

ভোটের একদিন আগে ফের রক্ত ঝরল মুর্শিদাবাদে। মৃত্যু হয়েছে অরবিন্দ মণ্ডল নামে এক কংগ্রেস কর্মীর। তাঁর পরিবারের সদস্যদের দাবি, তৃণমূলের লোকেরাই তাঁকে পিটিয়ে মেরে ফেলেছে। 

৬ জুলাই মৃত্যু তপনে

দক্ষিণ দিনাজপুরের তপনে দেহ উদ্ধার হয় পেশায় গ্রামীণ চিকিৎসক সমীর বর্মনের (৩৪)। এলাকায় তিনি তৃণমূল কর্মী বলে পরিচিত ছিলেন। পিকনিক করতে যাচ্ছি বলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আর ফিরে আসনেনি তিনি।

৬ জুলাই কুলপিতে মৃত কংগ্রেস কর্মী

সোমবার কুলপির চুনফুলি মোড়ে তৃণমূলের কর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় কংগ্রেস কর্মীদের। আহত হয়েছিলেন কুলপির দক্ষিণ গাজিপুর পঞ্চায়েতের দৌলতপুর গ্রামের বাসিন্দা কংগ্রেস কর্মী আলফাজ হালদার (৪২)। ভর্তি ছিলেন কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে। সেখানেই বৃহস্পতিবার সকালে তাঁর মৃত্যু হয়।

৪ জুলাই মৃত্যু ১৭ বছরের তৃণমূল সমর্থকের

উত্তর ২৪ পরগনার দেঙ্গার শোয়াইসেতপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের গার্টি এলাকায় মঙ্গলবার রাতে তৃণমূলের বেশ কিছু কর্মী-সমর্থকরা মিটিং করছিলেন। আচমকা শুরু হয় বোমাবাজি। তাতেই মৃত্যু হয় ১৭ বছরের বয়সী ওই নাবালকের। দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়ত সে। এলাকায় তৃণমূল কর্মী বলেই পরিচিতি ছিল।

৩ জুলাই বিজেপি কর্মী খুনের অভিযোগ

রবিবার বিকেল থেকে নিখোঁজ ছিলেন পুরুলিয়ার বিজেপি কর্মী বঙ্কিম হাঁসদা। আজ সকালে তাঁর দেহ উদ্ধার হয়। ঘটনাটি ঘটেছে পুরুলিয়ার মানবাজার-২ ব্লকে। অভিযোগের তির তৃণমূলের দিকে। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করছে তৃণমূল।

৩ জুলাই হারোয়ায় বিস্ফোরণ

ভোটের মুখে ফের বিস্ফোরণ হারোয়ায়। হারোয়ার শালিপুর এলাকার ঘটনা। সোমবার সকালে ওই ঘটনায় এক তৃণমূল কর্মীর মৃত্যু হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। মৃতের নাম পরিতোষ মণ্ডল

১ জুলাই শাসক দলের কর্মী খুনের অভিযোগ

ঘটনাস্থল বাসন্তী। তৃণমূল কর্মী জিয়ারুল মোল্লাকে খুনের অভিযোগ। রাতের অন্ধকারে একদল দুষ্কৃতী তাঁর উপর হামলা চালায়। তৃণমূল কর্মীকে লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয় বলে অভিযোগ। ঘটনাকে কেন্দ্র উঠে আসছে শাসকের গোষ্ঠী কোন্দলের অভিযোগ।

২৯ জুন পশ্চিম মেদিনীপুরে বিজেপির বুথ সভাপতির রহস্যমৃত্যু

বাড়ি থেকেই ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় দীপক সামন্ত নামে ওই বিজেপি নেতার। স্থানীয় বিজেপি নেতাদের অভিযোগ, একুশের বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকেই দীপকের ওপর নানা রকম অত্যাচার চলছিল।

২২ জুন আদ্রায় তৃণমূল নেতা খুন 

বৃহস্পতিবার পুরুলিয়ার আদ্রায় শহর তৃণমূল সভাপতি ধনঞ্জয় চৌবেকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় দুষ্কৃতীরা। চলে তিন রাউন্ড গুলি। তাঁর তলপেটে গুলি লাগে। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাঁকে ভর্তি করা হয় করা হয় রঘুনাথপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়।

২১ জুন চোপড়ায় গুলিবদ্ধ সিপিআইএম কর্মীর মৃত্যু 

মনোনয়ন জমাকে কেন্দ্র করে গত ১৫ জুন ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়েছিল উত্তর দিনাজপুরের চোপড়ায়। মিছিল করে মনোনয়ন দিতে যাওয়ার পথে আক্রমণের মুখে পড়ে বাম-কংগ্রেসের জোট প্রার্থীরা। অভিযোগের তির তৃণমূলের দিকে। গুলিবিদ্ধ হন সিপিএম কর্মী মনসুর আলম। তারপর থেকে চোপড়ার গেন্দাগছের বাসিন্দা মনসুর ভর্তি ছিলেন শিলিগুড়ির প্যারামাউন্ট নার্সিংহোমে সেখানেই দুদিন আগে মৃত্যু হয় তাঁর।

১৮ জুন রক্ত ঝরল কোচবিহারে  

দিনহাটায় বিজেপি প্রার্থীর দেওরকে খুনের অভিযোগ তৃণমূলের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে দিনহাটা ২ নম্বর ব্লকের কিসামত দশগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের টিয়াদহ এলাকায়। শনিবার গভীর রাতে বিজেপি প্রার্থী বিশাখা দাসের দেওয়ার শম্ভু দাসকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে খুন করা হয় বলে অভিযোগ। যদিও দলের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ উড়িয়ে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ন গুহ বলছেন, “শম্ভু দাস কোনও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব নয়। এর পিছনে কোনও মহিলাঘটিত ব্যাপার রয়েছে। আমরা খোঁজ নিয়ে এটা জানতে পেরেছি। শুনছি এর পিছনে একটা রাজনৈতিক রং লাগিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। বিজেপির নেতারা বলছে তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মীরা এই খুনের সঙ্গে যুক্ত। এর ফলে প্রকৃত যাঁরা দোষী তাঁরা গায়ে হাওয়া লাগিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে।”

১৭ জুন রক্ত ঝরে মালদহে

মালদহের সুজাপুরে তৃণমূলের এক নেতাকে খুনের অভিযোগ কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। জানা যায়, বাড়ি থেকে বের হতেই বাঁশ-লাঠি দিয়ে পিটিয়ে মারা হয় তৃণমূল নেতা মোস্তফা শেখকে। সূত্রের খবর, প্রার্থী তালিকা নিয়ে বিগত কয়েকদিন ধরে দলের কিছু কর্মীর সঙ্গে তাঁর ঝামেলা চলছিল। তাঁরা সম্প্রতি যোগ দেন কংগ্রেসে। তাঁদের বিরুদ্ধেই ওই ব্যক্তিকে খুনের অভিযোগ উঠেছে। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে কংগ্রেস। জেলার কার্যকরী সভাপতি কালী সাধন রায় বলেন, “এর সঙ্গে কংগ্রেস জড়িত নয়। এটা ওদের গোষ্ঠী কোন্দল।”

 ১৫ জুন অগ্নিগর্ভ ভাঙড়ে মৃত ৩, রক্ত ঝরে নবগ্রামেও

মনোনয়ন জমার শেষদিনে দফায় দফায় উত্তেজনা ছড়ায় ভাঙড়ে। অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি তৈরি হয় ভাঙড়ের বিজয়গঞ্জ বাজারে। চলে দেদার বোমাবাজি। চলে গুলি। মৃত্যু হয় তিনজনের। সূত্রের খবর, এর মধ্যে ২ জন তৃণমূলের কর্মী। একজন আইএসএফের কর্মী। মৃত আইএসএফ কর্মী মইনুদ্দিন মোল্লার বাড়ি ভাঙড়ের কাশীপুর থানার জয়পুরে। অন্যদিকে মৃত তৃণমূল কর্মী রাজু নস্করের বাড়ি কলকতার লেদার কমপ্লেক্স থানা এলাকার হাটগাছায়। মারা গিয়েছেন তৃণমূল কর্মী রশিদ মোল্লা। তাঁর বাড়ি জীবনতলা থানা এলাকার মৌখালি এলাকায়।

এই দিনই আবার মুর্শিদাবাদের নবগ্রামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয় বলে খবর মেলে। এলাকায় তিনি তৃণমূল কর্মী হিসাবেই পরিচিত ছিলেন বলে জানা যাচ্ছে। মোজাম্মেল শেখ নামে ওই ব্যক্তি হজবিবি ডাঙা এলাকার তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি ছিলেন বলে খবর। অভিযোগের তির কংগ্রেসের দিকে। 

৯ জুন রক্ত ঝরে মুর্শিদাবাদে  

মুর্শিদাবাদের খড়গ্রামে শুটআউট। রতনপুরে গুলিতে মৃত্যু হয় ফুলচাঁদ শেখ নামে এক ব্যক্তির। অভিযোগের তির তৃণমূলের দিকে। আহত হন কবিরুল শেখ নামে আরও এক ব্যক্তি। রক্তাক্ত অবস্থায় ফুলচাঁদকে উদ্ধার করে কান্দি মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। সেখানেই ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়। মৃতের পরিবারের সদস্যদের দাবি, তিনি কংগ্রেস করতেন। এ ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে রাজ্যপালের কাছে চিঠিও দেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী।  

Pabchayat Election Death Toll

অসমর্থিত সূত্রে পাওয়া খবরের ভিত্তিতে মৃত্যুর পরিসংখ্যান। গ্রাফিক্স – অভীক দেবনাথ।