দুর্গাপুর: ইঞ্জেকশন কাণ্ডের পর ফের খারাপ খবর দুর্গাপুরে। করোনা আক্রান্ত তিন শিশু। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সমস্ত শিশুরই করোনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এরমধ্যে গতকাল তিন শিশুর শরীরে মেলে সংক্রমণ। তড়ি-ঘড়ি তিনজনকেই কোভিড ওয়ার্ডে স্থানান্তরিত করা হয়। পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর।
পশ্চিম বর্ধমান জেলার ডেপুটি CMOH কেকা মুখোপাধ্যায় বলেন, “করোনার তৃতীয় ডেউ নিয়ে স্বাস্থ্য দফতর চিন্তিত। ” শিশুদের অভিভাবকদের পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। জানান,” শিশুরা করোনায় আক্রান্ত হচ্ছে তাদের অভিভাবকদের থেকে। অনেকেই ভাবছেন ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজ় নেওয়া রয়েছে। তাই মাস্ক না পরলেও চলবে। প্রত্যেককে অনুরোধ মাস্ক পরুন। অযথা ভিড় করবেন না। আরও সচেতন হন। ”
উল্লেখ্য, গত ২৪ সেপ্টেম্লর সন্ধে নাগাদ দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতাল থেকে আসে খারাপ খবর। শিশুদের ভুল ইঞ্জেকশন দেওয়ার অভিযোগ উঠে দুর্গাপুর হাসপাতালের বিরুদ্ধে। যার কারণে অসুস্থ হয়ে পড়তে থাকে একের পর এক শিশু। দুপুরের পর থেকে হাসপাতালে ভর্তি শিশুদের অসুস্থতা বেড়ে যায়। কর্তৃপক্ষকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন শিশুদের পরিজনরা।
সূত্রের খবর, দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে ২৪ তরিখ পর্যন্ত ভর্তি ছিল ৪৫ জন শিশু । যার মধ্যে গুরতর অসুস্থ হয় ১৫জন। এক শিশুর মা অভিযোগ জানিয়েছিলেন, তাঁর সন্তানের হাতে চ্যানেল করা ছিল। সেই চ্যানেলে দেওয়া হয় ভুল ইঞ্জেকশন। সেই ইঞ্জেকশন দেওয়ার পরই অসুস্থ হতে শুরু করে শিশুটি। শুরু হয় খিঁচুনি। শুধু সেই বাচ্চাটিই নয়, গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে ১৫ শিশু।
ঘটনার বিষয়ে হাসপাতাল সুপার জানান, “শিশুদের ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়েছিল। তবে আতঙ্কিত হওয়ার কোনও কারণ নেই। কিন্তু পরিবারের সদস্যরা যেভাবে ভয় পেয়ে গিয়েছেন এতটাও চিন্তার বিষয় নয়।”ঘটনাস্থানে পৌঁছায় আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের নিউটাউনশিপ থানার বিশাল পুলিশবাহিনী। পুলিশকে ঘিরে ধরেও বিক্ষোভ শুরু হয়। তবে কী ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়েছে প্রশ্ন করায় কোনও উত্তর দেয়নি হাসপাতাল সুপার ও চিকিৎসকরা।
এরপর গতকাল ‘ইঞ্জেকশনকাণ্ডে’ অসুস্থ চার শিশুকে স্থানান্তরিত করা হয় CCU ( ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট)-এ। গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়া ১৪ শিশুর মধ্যে ১১ শিশুর অবস্থার উন্নতি হয়। আজ সকালে বাকি চার শিশুকে শিশু বিভাগ থেকে স্থানান্তিরিত করে চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে অক্সিজেন সাপোর্টে রাখা হয়েছে।
রাজ্যে একের পর জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। গতকাল প্রকাশ্যে আসে কার্শিয়াংয়ে তিন শিশুর করোনা আক্রান্ত হওয়ার খবর। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ থেকেও শিশুমৃত্যুর খবর এসেছিল। তবে ওই শিশুদের মৃত্যুর কারণ ছিল অজানা জ্বর। তিনদিনে প্রাণ যায় তিন শিশুর। এর আগে গত ১৮ সেপ্টেম্বর জ্বর, শ্বাসকষ্ট, সর্দি নিয়ে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হয় তিন মাসের শিশুকন্যা। কিন্তু বাঁচানো যায়নি তাকেও।
আরও পড়ুন: Digha: গুটি গুটি করে উপকূলগামী ‘গুলাব’, আগেভাগেই দিঘার সমস্ত হোটেল খালি করার নির্দেশ