অন্ডাল: মাঝ আকাশে ঝড়ের কবলে বিমান। মুম্বই থেকে অন্ডাল (Andal Flight Accident) বিমানবন্দরে আসার পথে ভয়ঙ্কর দুর্যোগে বিমান পড়ায় আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৪০ জন যাত্রী। সোমবারের পাওয়া খবর অনুযায়ী, প্রাথমিক চিকিত্সার পর অধিকাংশ যাত্রীকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। দুই হাসপাতালে এখনও ভর্তি ১০ জন। এক মহিলার অবস্থা আশঙ্কাজনক। বিমানে ১৮৫ জন যাত্রী ছিলেন। অন্ডালের বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন এক বিমানযাত্রী। এই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বাকিদের পরিবারের লোকজন ব্যক্তিগত বন্ডে অন্যত্র নিয়ে গিয়েছেন বলে খবর। দুই বিমান যাত্রীরই মাথায় আঘাত লেগেছে বলে জানা গিয়েছে। সোমবার সকালেই ডিরেক্টরেট জেনারেল অব সিভিল অ্যাভিয়েশন (ডিজিসিএ) এই ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
পরপর দুদিন। শনিবার ঝড়ের কবলে পড়ে পরিষেবা বিঘ্নিত হয় ইন্ডিগোর বিমানের। রবিবার ফের খারাপ আবহাওয়ার জেরে বিপত্তি। মাঝ আকাশে তুমুল ঝাঁকুনি। মুম্বই থেকে অন্ডাল ফেরার মাঝ পথে সাক্ষাত্ যেন মৃত্যু মুখ থেকে ফিরলেন ১৮৫ জন যাত্রী। পাইলটের তত্পরতায় বেঁচে বিমানটি অন্ডাল এয়ারপোর্টে নামলেও ততক্ষণে হাড়হিম অভিজ্ঞতা হয়ে গিয়েছে যাত্রীদের।
ঠিক কী হয়েছিল?
মু্ম্বই থেকে অন্ডাল বিমানবন্দরে ফিরছিল স্পাইস জেটের বিমান। বিমানবন্দরে অবতরণের আগেই ঝড়ের কবলে পড়ে বিমানটি। মাঝ আকাশে এয়ার টার্বুল্যান্সের কবলে পড়ে স্পাইস জেটের বিমানটি। সন্ধে ৭টা ২৭-এ অন্ডাল বিমানবন্দরে অবতরণের সময় ছিল বিমানটির। অবতরণের আগেই এয়ার টার্বুল্যান্সে মারাত্মক ঝাঁকুনি তৈরি হয়। জানা যাচ্ছে, প্রবল ঝাঁকুনির জেরে অনেকেরই সিট বেল্ট ছিঁড়ে যায়। যাত্রীরা হুমড়ি খেয়ে পড়েন সামনের দিকে। মাথায় চোট লাগে অনেকের। ঘটনার বিবরণে পরিস্থিতি যতটা ভয়ঙ্কর বলে মনে হচ্ছে, তার থেকেও ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি বলছেন যাত্রীরাই। অনেকের অভিজ্ঞতা, রীতিমতো প্রাণ হাতে নিয়ে সেই সময় কাটিয়েছিলেন তাঁরা।
Inside visual of the aircraft that suffered mid air turbulence before landing in #Bengal Andal airport. This due to a sudden squall. Crazy visuals https://t.co/CQxtamd7hF pic.twitter.com/IfCgofLE3l
— Tamal Saha (@Tamal0401) May 1, 2022
বিমান-বিভ্রাটের জেরে সওয়ার হওয়া ১৮৫ জন যাত্রীর অধিকাংশই যেভাবে আহত হয়েছেন তাতে প্রশ্ন উঠছে সবাই কি সিট বেল্ট বেঁধেছিলেন? কর্তৃপক্ষ কি এ বিষয়ে সতর্ক ছিলেন? তবে অনেক যাত্রীদের দাবি, মাঝ আকাশে ঝাঁকুনির তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল. যে সেফটি বেল্ট খুলে যায় যাত্রীদের।
শনিবার ইন্ডিগোর বিমানে ছিলেন চিকিত্সক সুনন্দন বসু। রবিবারের ঘটনার পর তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি TV9 বাংলাকে জানান তাঁর ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার কথা। তিনি বলেন, “এই পরিস্থিতিতে সাইকোলজিক্যাল ট্রমাটা ভীষণভাবে কাজ করে। একজন মানুষ ফ্রি ফল হচ্ছেন, তাঁর হাতে কোনও কন্ট্রোল নেই, অনেকে বলছেন সিট বেল্ট ছিঁড়ে গিয়েছে… তখন কী অবস্থা কেউ জানে না, কেউ বলতে পারবেন না…হাই স্পিডে এক-দু’হাজার ফিট নীচে পড়ে যাচ্ছে বিমান, এই পরিস্থিতিতে পেটের মধ্যে কী অবস্থা হয়, বমি বমি ভাব হয়, মাথায় আঘাত লাগে, মেরুদণ্ডেও আঘাত লাগতে পারে। এই আতঙ্ক সবার মধ্যে অনেকদিন ধরেই থাকবে।”