পশ্চিম বর্ধমান: ডেপুটি সুপারিনটেনডেন্ট অব পুলিশ (DSP) সেজে তোলা আদায়ের অভিযোগে দুই যুবককে গ্রেফতার করল পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের একজন সিভিক ভলান্টিয়ার হিসাবে কাজ করেন। অপরজন নিজেকে ইসিএলের নিরাপত্তা রক্ষী হিসাবে পরিচয় দিয়েছেন। মূলত ওই নিরাপত্তারক্ষীই ডিএসপি সেজেছিলেন বলে অভিযোগ। তাঁর হাত শক্ত করার ভার নিয়েছিলেন অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ার। শুক্রবার রাতে আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশ আসানসোল স্টেশন সংলগ্ন বাসস্ট্যান্ড থেকে গ্রেফতার অভিযুক্ত দু’জনকে গ্রেফতার করে। এই ঘটনায় এলাকার লোকজনের চোখ কপালে ওঠার পরিস্থিতি।
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের নাম কৌস্তুভ বন্দ্যোপাধ্যায় ও জিতেন্দ্র শর্মা ওরফে জিতু। প্রথমজন ভুয়ো ডিএসপি সেজেছিলেন বলে অভিযোগ। এই কৌস্তুভ আসানসোল দক্ষিণ থানার এসবি গরাই রোডের ইসমাইল মোড় এলাকার বাসিন্দা। অন্যদিতে জিতু পেশায় সিভিক ভলান্টিয়ার। তাঁর বাড়ি আসানসোল দক্ষিণ থানার বুধার রামকানাইয়া স্থানের হনুমান মন্দির এলাকায়। আসানসোল দক্ষিণ থানারই সিভিক ভলান্টিয়ার হিসাবে কাজ করেন তিনি। এই দু’জনের বিরুদ্ধে রাজ্য পুলিশের ডিএসপি পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে তোলা আদায় করার অভিযোগ আসে আসানসোল দক্ষিণ থানায়। এরপরই ঘটনাস্থলে পৌঁছে পুলিশ হতবাক হয়ে যায়।
শনিবার দুই অভিযুক্তকে আসানসোল আদালতে তোলা হলে বিচারক তাঁদের জামিনের আবেদন নাকচ করে তিনদিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন। এই মামলায় তদন্তকারী অফিসার হিসাবে রয়েছেন পুলক কুমার দাস। অভিযোগ, শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশের কাছে খবর আসে, দুই যুবক আসানসোল রেলস্টেশন সংলগ্ন এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন। তার মধ্যে একজন নিজেকে রাজ্য পুলিশের অফিসার বলে পরিচয় দিয়ে হুমকি দিয়ে টাকা তুলছেন।
এরপরই পুলিশের একটি দল সেখানে যায়। কৌস্তুভ ও জিতুকে প্রথমে আটক করে। পুলিশ সূত্রে খবর, ধরা পড়তেই কৌস্তুভ বন্দ্যোপাধ্যায় পুলিশকে জানান, তিনি রাজ্য পুলিশের ডিএসপি। বর্তমানে তিনি পশ্চিম মেদিনীপুরে রয়েছেন। সন্দেহ হওয়ায় আসানসোল দক্ষিণ থানার আইসি অভিজিৎ চট্টোপাধ্যায় পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।
তখন আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশ বুঝতে পারেন গোটা বিষয়টিতেই গোলমাল আছে। পুলিশ এরপর কৌস্তুভের এসবি গড়াই রোডের ইসমাইল মোড় সংলগ্ন বাড়িতে তল্লাশি করে একটি কর্মস্থলের পরিচয়পত্র, পুলিশের নকল পোশাক, পুলিশের লোগো লাগানো টুপি, কার্ড, ব্যাজ ও পুলিশের স্টিকার লাগানো দু’টি মোটর সাইকেল উদ্ধার করে। গ্রেফতার করা হয় কৌস্তুভ ও জিতুকে।
এই প্রসঙ্গে আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশের ডিসিপি (সেন্ট্রাল) ডক্টর কুলদীপ এস এস বলেন, “নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে দুই যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার মধ্যে একজন ভুয়ো ডিএসপি বলে পরিচয় দিয়ে তোলা আদায় করছিলেন। অন্য জন সিভিক ভলান্টিয়ার। তাঁদের হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। গোটা ঘটনার তদন্ত করা হচ্ছে।”
আরও পড়ুন: Tourist Death In Uttarakhand: কফিনে ফিরলেন দুর্গাপুরের ভট্টাচার্য দম্পতি! বাঁধ ভাঙল পড়শিদের কান্না