Tourist Death In Uttarakhand: কফিনে ফিরলেন দুর্গাপুরের ভট্টাচার্য দম্পতি! বাঁধ ভাঙল পড়শিদের কান্না

TV9 Bangla Digital | Edited By: সায়নী জোয়ারদার

Oct 30, 2021 | 8:48 PM

Trekkers Death In Uttarakhand গত ২৭ অক্টোবর দুর্যোগের বাগেশ্বরে পাহাড়ের খাদে গাড়ি পড়ে গিয়েছিল সুব্রত ভট্টাচার্য (৬১), রুনা ভট্টাচার্যদের (৫৬)। পাহাড়ের কোলেই শেষ হয়ে যায় দু'টি প্রাণ।

Tourist Death In Uttarakhand: কফিনে ফিরলেন দুর্গাপুরের ভট্টাচার্য দম্পতি! বাঁধ ভাঙল পড়শিদের কান্না
২১ অক্টোবর দুর্গাপুরের ধান্ডাবাগ রবীন্দ্রপল্লির বাড়ি থেকে উত্তরাখণ্ডে বেড়াতে গিয়েছিলেন ভট্টাচার্য দম্পতি। নিজস্ব চিত্র।

Follow Us

পশ্চিম বর্ধমান: ঠিক এক সপ্তাহ আগের ঘটনা। ২১ অক্টোবর দুর্গাপুরের ধান্ডাবাগ রবীন্দ্রপল্লির বাড়ি থেকে উত্তরাখণ্ডে (Uttarakhand) বেড়াতে যান ভট্টাচার্য দম্পতি। ফেরার কথা ছিল ৩১ অক্টোবর। কিন্তু ফিরে এলেন একদিন আগেই। তবে পায়ে হেঁটে নয়! কফিনবন্দি হয়ে। গত ২৭ অক্টোবর দুর্যোগের বাগেশ্বরে পাহাড়ের খাদে গাড়ি পড়ে গিয়েছিল সুব্রত ভট্টাচার্য (৬১), রুনা ভট্টাচার্যদের (৫৬)। পাহাড়ের কোলেই শেষ হয়ে যায় দু’টি প্রাণ। এদিন যখন রবীন্দ্রপল্লির বাড়িতে দেহ এসে পৌঁছল, অঝোরে কেঁদে চলেছেন পড়শিরা। এমন ‘দাদা-বৌদি’কে হারিয়ে তাঁরাও শোকস্তব্ধ, বাক্যহারা!

দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানায় চাকরি করতে সুব্রত ভট্টাচার্য। অবসর নেওয়ার পর স্ত্রী রুনাকে নিয়ে এদিক ওদিক বেরিয়ে পড়তেন। লক্ষ্মীপুজোর পরের দিন উত্তরাখণ্ডে ঘুরতে গিয়েছিলেন তাঁরা। উত্তরাখণ্ডের মুনশিয়ারি থেকে কৌশানি যাওয়ার পথে যে ১২ জন পর্যটকের গাড়ি খাদে পড়ে যায়। তাঁদের মধ্যে মৃত্যু হয় পাঁচজনের। পাঁচজনই পশ্চিম বর্ধমানের।

মৃতদের মধ্যে ছিলেন রানিগঞ্জের সিয়ারশোলের কিশোর ঘটক (৫৯), আসানসোলের শ্রাবণী চক্রবর্তী(৫৫,) দুর্গাপুরের সুব্রত ভট্টাচার্য (৬১) ও তাঁর স্ত্রী রুনা ভট্টাচার্য (৫৬) ও রানিগঞ্জের চন্দনা খান ভট্টাচার্যের (৬৪)। এই চন্দনাদেবী আবার সুব্রতবাবুরই দিদি। বরাত জোরে এই দুর্ঘটনায় প্রাণে বেঁচে যান চন্দনাদেবীর স্বামী।

শনিবার মৃতদেহ নিয়ে সঙ্গে কলকাতা থেকে দুর্গাপুরে যান রাজ্যের মন্ত্রী মলয় ঘটক। উপস্থিত ছিলেন দুর্গাপুর নগর নিগমের মেয়র দিলীপ অগস্তি-সহ প্রশাসনের পদস্ত আধিকারিকরা। ঠিক ২টো বেজে পাঁচ মিনিটে সুব্রত ভট্টাচার্য ও রুনা ভট্টাচার্যের নিথর দেহ দুর্গাপুরে পৌঁছয়। তার আগে থেকেই ধান্ডাবাগের রবীন্দ্রপল্লির বাড়িতে প্রচুর মানুষের ভিড় জমে যায়। সুব্রতবাবুর সহকর্মী ও আত্মীয় পরিজনরা আসেন শেষ শ্রদ্ধা জানাতে।

সেখানেই কান্নায় ভেঙে পড়েন স্বজন-পরিজনরা। রবীন্দ্রপল্লিরই বাসিন্দা চৈতালি ভট্টাচার্য। রুনাদেবীর সঙ্গে খুব কাছের সম্পর্ক ছিল তাঁর। এমনকী চৈতালিদেবীরও এই ভট্টাচার্য দম্পতির সঙ্গে ঘুরতে যাওয়ার কথা ছিল উত্তরাখণ্ডে। কিন্তু অফিস ছুটি পাননি। তাই আর যাওয়া হয়নি। যেদিন ঘটনাটি ঘটে, সেদিন সকালেও রুনাদেবী ফোন করেছিলেন তাঁকে। কিন্তু ব্যস্ততার জন্য সেই ফোন ধরতে পারেননি। শনিবার আফশোস-যন্ত্রণায় একেবারে কুঁকড়ে যাচ্ছিলেন তিনি।

চৈতালি ভট্টাচার্য কাঁদতে কাঁদতেই বলে চলেন, “ওনারা ভীষণ ভাল ছিলেন। গোটা পাড়ার মানুষের কাছে ওনারা দাদা বৌদি। সকলের সঙ্গে এত ভাল ব্যবহার করতেন। নিজের পরের কোনও ভেদাভেদ ছিল না। আমারও বৌদিদের সঙ্গে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ছুটি পাইনি তাই যাওয়া হয়নি। বৌদি সবসময় বলত, শুধু অফিস অফিস না করে নিজের জন্যও একটু সময় দাও। আমি ভাবতেই পারিনি বৌদি এ ভাবে আমাকে ছেড়ে চলে যাবে ভাবতেই পারছি না।”

রবীন্দ্রপল্লিতে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের আইনমন্ত্রী মলয় ঘটকও। মলয় ঘটক বলেন, “একই পরিবারের তিনজন মারা গিয়েছেন। দু’জন এখানকার, একজনের বাড়ি রানিগঞ্জে। আজই দেহ এসে পৌঁছেছে। সরকার দেহ ফিরিয়ে আনতে সমস্ত রকম উদ্যাগ নেয়। সকালেই দেহ কলকাতা বিমানবন্দরে পৌঁছয়। আমরা সেখানে ছিলাম। সেখান থেকে বাড়ি পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। আমি নিজে এসেছি।”

আরও পড়ুন: COVID Update: আবারও বাড়ল করোনায় মৃত্যু! ‘বিপদ কেন্দ্র’ সেই উত্তর ২৪ পরগনা, কলকাতা

Next Article