বিজেপি সমর্থক হওয়ার ‘অপরাধে’ টিকার লাইনে গলাধাক্কা, আত্মহত্যার চেষ্টা মহিলার!

TV9 Bangla Digital | Edited By: tista roychowdhury

Sep 06, 2021 | 7:09 PM

Suicide: আক্রান্ত ঝর্ণা দাসের স্বামী সুজিত দাসের অভিযোগ, বৃহস্পতিবার লাইনে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়েও টিকা না পেয়ে চেঁচামেচি শুরু করেন ঝর্ণা। অভিযোগ করেন সকলে যখন টিকা পাচ্ছেন তখন তিনি কেন টিকা পাবেন না।

বিজেপি সমর্থক হওয়ার অপরাধে টিকার লাইনে গলাধাক্কা, আত্মহত্যার চেষ্টা মহিলার!
ঝর্ণা দাস, নিজস্ব চিত্র

Follow Us

দুর্গাপুর: শুধু আধার কার্ড নয়। করোনা ভ্যাকসিন নিতে নাকি আর একটা পরিচয় জরুরি। তা হল শাসক দলের কর্মী অথবা সমর্থক। বরাবরই অভিযোগ বিজেপির (BJP)। রাজনীতির রঙ দেখে বেছে টিকা দেওয়ার অভিযোগ বিভিন্ন জায়গা থেকেই আসছিল। তবে দুর্গাপুর নগরনিগমের ৪২ নম্বর ওয়ার্ডের যে ঘটনা প্রকাশ্যে এল তাতে উদ্বেগ ছড়িয়েছে। বিজেপি কর্মীর স্ত্রীকে লাইন থেকে ঘাড়ধাক্কা দিয়ে বের করে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে স্থানীয় তৃণমূল (TMC) কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে।

ঝর্ণা দাস নামে ওই গৃহবধূ অপমানিত বোধ করে দুর্গাপুর ব্যারাজ থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তিনি ভর্তি হাসপাতালে। ৪২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রিয়াঙ্কি পাঁজার বিরুদ্ধে কোকওভেন থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন মহিলার স্বামী, সুজিত দাস। কাউন্সিলরের অভিযোগ, তাঁকে বদনাম করতেই নাকি আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন ওই মহিলা।

আক্রান্ত ঝর্ণা দাসের স্বামী সুজিত দাসের অভিযোগ, বৃহস্পতিবার লাইনে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়েও টিকা না পেয়ে চেঁচামেচি শুরু করেন ঝর্ণা। অভিযোগ করেন সকলে যখন টিকা পাচ্ছেন তখন তিনি কেন টিকা পাবেন না। এই নিয়ে বচসা শুরু হলে, তৃণমূল কাউন্সিলর প্রিয়াঙ্কা পাঁজি  ও তাঁর অনুগামীরা আচমকা এসে সকলের সামনে গলা ধাক্কা দিয়ে বের করে দেন বলে অভিযোগ। ঘটনায় অত্যন্ত অপমানিত বোধ করেন ঝর্ণা। শুক্রবার কাউকে কিছু না বলে আচমকা ঘর থেকে বেরিয়ে যান ওই গৃহবধূ। এদিকে ঘরে অনেকক্ষণ না ফেরায় সুজিতবাবু স্ত্রীর খোঁজখবর শুরু করেন। থানাতেও যান। পরে বাঁকুড়ার বড়জোড়া থানার পুলিশ সুজিতকে জানায়, দামোদরে ঝাঁপ দিয়েছিলেন তাঁর স্ত্রী। কোনও ক্রমে তাঁকে উদ্ধার করে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।

সুজিতের কথায়, ‘‘ গত বিধানসভা নির্বাচন থেকে আমরা বিজেপির হয়ে প্রচার হয়ে। স্রেফ বিজেপি করার অপরাধে আমার স্ত্রীকে টিকাকেন্দ্রের লাইন থেকে গলা ধাক্কা দিয়ে বের করে দেওয়া হয়েছে। ওই অপমান সহ্য করতে না পেরেই আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে ঝর্ণা। আমার সামান্য মুদিখানার দোকান রয়েছে। আমার যে ক্ষতি হল তার দায় কে নেবে!”

গোটা ঘটনাকে বাংলার লজ্জা বলে মন্তব্য করেন দুর্গাপুর নগর নিগমের ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা বিজেপি নেতা চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায়। অবিলম্বে অভিযুক্ত কাউন্সিলরকে গ্রেফতারের দাবিও জানিয়েছেন তিনি। দুর্গাপুর নগর নিগমের স্বাস্থ্য দফতরের মেয়র পারিষদ রাখী তেওয়ারি বিষয়টি খোঁজ নিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।

যদিও সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত তৃণমূল কাউন্সিলর। তিনি বলেন, “আমি এমন কোনও ঘটনা ঘটাইনি। আমি জনপ্রতিনিধি। জনগণের জন্যই আমার কাজ। কেউ যদি এধরনের কথা ছড়িয়ে থাকেন, তবে আমায় বদনাম করার জন্যই তা করা হচ্ছে। প্রয়োজনে আমি থানায় যাব। লিখিত অভিযোগ দায়ের করব।” অন্যদিকে অভিযুক্ত কাউন্সিলর গ্রেফতার না হলে আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন দুর্গাপুর পশ্চিমের বিজেপি বিধায়ক লক্ষণ ঘোড়ুই। গোটা ঘটনা তদন্ত করে দেখছে দুর্গাপুর থানার পুলিশ। আরও পড়ুন: নবান্নের প্যাডে ছাপানো পূর্ত দফতরের নিয়োগপত্র, ৪ লক্ষ টাকা দিয়েই মাথায় হাত যুবকের!

 

Next Article