আসানসোল: শিল্পনগরী আসানসোল (Asansole) কুলটির লছিপুর। এই এলাকার ভেতর বিশাল অবৈধ মাণ্ডির ১৫০ টি দোকান আগেই সিলা করা হয়েছে। এবার লছিপুরের ভেতর অন্যান্য দোকানগুলিতেও অভিযান চালাল আসানসোল পুরনিগম। আর তাতেই কার্যত হতবাক আধিকারিকরা। একটি দোকানেরও ট্রেড লাইসেন্স (Trade License) নেই!
শুক্রবার বিশেষ সদস্যের ওই অভিযানকারী দল দেখল লছিপুরের ভেতর একটি দোকানেরও বৈধ ট্রেড লাইসেন্স নেই। দুজনের মাত্র ট্রেড লাইসেন্স পাওয়া গিয়েছে। তবে তাদেরও ট্রেড লাইসেন্সের রিনিউয়ালই হয়নি। অথচ এই দোকানগুলি থেকে মাসে লাখো টাকার কারবার হয় বলে পুরসভা সূত্রে খবর।
এদিন লছিপুর নিষিদ্ধপল্লি এলাকায় আসানসোল পুরনিগমের কুলটি বরো অফিস ও নিয়ামতপুর পুলিশ ফাঁড়ির সহযোগিতায় সমস্ত দোকানের ট্রেড লাইসেন্স পরীক্ষা করে দেখার জন্য অভিযান চালায়। পুরনিগমের ট্রেড লাইসেন্স বিভাগের আধিকারিক আদিত্য দেওঘরিয়া জানান, পুলিশি অভিযানের পর এখন ওই এলাকার সব দোকান বন্ধ করা হয়েছে। বর্তমানে মাত্র কয়েকটি দোকান খোলা রয়েছে। যেখানে মাত্র দুটি দোকানের ট্রেড লাইসেন্স রয়েছে, সেগুলিও আবার রিনিউ করা হয়নি। বাকি যে দোকানদারদের ট্রেড লাইসেন্স নেই, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
জানা গিয়েছে, এই সমস্ত দোকানগুলিই দিনে নয়তো রাতের বেলা খোলা হত। স্টেশনারি দোকানের নাম থাকলেও দোকানগুলি অবৈধ মদের ব্যবসা চলত বলে স্থানীয়দের একাংশের অভিযোগ। উল্লেখ্য, গত অগস্ট মাসের শুরুতেই চাইল্ড ও ওয়েম্যান ওয়েলফেয়ার কমিশন, পুলিশ কমিশনার ও জেলাশাসকের যৌথ অভিযানে লছিপুর নিষিদ্ধপল্লি এলাকা থেকে ৪৭ জন নাবালিকা উদ্ধার হয়। তারপরেই বন্ধ করে দেওয়া হয় লছিপুরের যৌন ব্যবসা। এই ঘটনার পরেই প্রশাসনের নজরে আসে এক অবৈধ প্রাসাদোপম বাড়ি। সেখান থেকেই চলত নিষিদ্ধ কাজ। দোকানের স্টলের মতো এক একজন যৌনকর্মীর ‘দোকান’ খুঁজে পাওয়া যায়। এক নাবালিকাকে উদ্ধার করতে গিয়েই ওই বিশাল অবৈধ নির্মাণের হদিশ পেয়ে কার্যত হাঁ হয়ে গিয়েছে পুলিশ।
কিন্তু কে বানাল এই বাড়ি? অনুমতিই বা কোথা থেকে নেওয়া হয়েছে? তার উত্তর খুঁজতে গিয়েই আবার একবার তাজ্জব বনে গেল প্রশাসন। আগে প্রশাসন জানিয়েছিল শীঘ্রই ওই বাড়ি ভাঙা হবে। তারপরেই শুরু হয়েছে পুরনিগমের ট্রেড লাইসেন্স অভিযান। সেখানেও দেখা যাচ্ছে, এই এলাকায় একটি দোকানেরও বৈধ লাইসেন্স নেই। একই এলাকা থেকে একের পর এক বেআইনি কাজ সামনে আসায় চমকে উঠছেন প্রশাসনের আধিকারিকরা।
ইতিমধ্যে স্থানীয় মাফিয়া রাজ সোলাঙ্কি সহ ২৮ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আসানসোল পুরনিগমের পুরপ্রশাসক অমরনাথ চট্টোপাধ্যায় জানান, নিষিদ্ধপল্লি লছিপুর এলাকায় অবৈধভাবে নির্মিত ঘরবাড়ি ভেঙে ফেলা হবে। তার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। যারা অবৈধ ভাবে ব্যবসা চালাচ্ছিল তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আরও পড়ুন: তৃণমূল নেতার ‘দাদাগিরি’, স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বন্ধই হয়ে গেল গর্ভবতীদের টিকাকরণ!