আসানসোল: কয়লা পাচারকাণ্ডে এই প্রথম চার্জশিট জমা পড়ল আদালতে। আসানসোলের বিশেষ আদালতে এই চার্জশিট জমা পড়েছে। মোট ৪১ জনের নাম প্রাথমিক ভাবে উল্লিখিত হয়েছে।
সূত্রের খবর, জমা হওয়া ওই চার্জশিটে কয়লা ‘মাফিয়া’ অনুপ মাজি ওরফে লালা সহ তাঁর সহযোগীদের নাম রয়েছে। বিনয় মিশ্র, বিকাশ মিশ্র, জয়দেব মণ্ডল, গুরুপদ মাজি, নিরোধ মণ্ডল, নারায়ণ নন্দা সহ গ্রেফতার হওয়া আট ইসিএল আধিকারিকদের নাম রয়েছে। এছাড়াও রয়েছে আসানসোল দুর্গাপুরের দশটি বেসরকারি কারখানার ডিরেক্টরদের নাম। জানা গিয়েছে, এরা প্রত্যেকেই বেআইনি কয়লা কেনাবেচা করতেন।
এছাড়াও চার্জশিটে উল্লেখ রয়েছে পনেরো জন অবৈধভাবে কয়লা খননকারী মাফিয়ার নাম। উল্লেখ্য, অনুপ মাজি ওরফে লালার কাছে সুপ্রিম কোর্টের বিশেষ রক্ষাকবচে রয়েছে। যার সৌজন্যে তাঁকে এখনই গ্রেফতার করা যাবে না। এ দিকে, বিনয় মিশ্র আপাতত পলাতক। তাঁর ভাই বিকাশ মিশ্র রয়েছেন জেলে। এছাড়াও জয়দেব, গুরুপদ,নিরোদ ও নারায়ণ সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হওয়ার পর বর্তমানে জামিনে মুক্ত রয়েছেন।
বস্তুত, সোমবার কয়লা পাচার কাণ্ডে বিনয় মিশ্র-সহ চারজনের নামে ‘ওপেন এনডেড ননবেলেব্যাল ওয়ারেন্ট’ জারি করা হয়। বিনয় মিশ্রের পাশাপাশি রত্নেশ্বর ভার্মা, নীরজ সিং ও অমিত সিংয়ের বিরুদ্ধে এই গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। অভিযোগ, এর মধ্যে রত্নেশ্বর মূলত ইসিএল আধিকারিকদের সঙ্গে সংযোগ করতেন। এবং টাকা পাচারের কাজ চালিয়ে যেতেন। অভিযোগ, এই চারজনই কয়লাকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত অনুপ মাজি ওরফে লালার সঙ্গী। গত শনিবার বিনয় মিশ্র-সহ বাকি তিনজনের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করতে চেয়ে আদালতে বিশেষ রিপোর্ট জমা দেয় সিবিআই। সেদিনই তারা এই চারজনকে গ্রেফতার আদালতে আর্জি জানান। জানা গিয়েছে নীরজ ও অমিতের কলকাতার বড়বাজারে শাড়ির ব্যবসা রয়েছে। এরা বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তির সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করে টাকা পাঠানোর কাজ করতেন।
অপরদিকে, কয়লাকাণ্ডে নাম জড়ায় প্রাক্তন ও বর্তমান মিলিয়ে মোট সাত ইসিএল (ECL) কর্তার। তাঁদের গ্রেফতার করে সিবিআই। সোমবার তাঁদের আসানসোল বিশেষ সিবিআই আদালতে পেশ করা হয়। কলকাতার নিজাম প্যালেস থেকে গাড়িতে তাঁদের কলকাতায় নিয়ে আসা হয়। সড়কপথে বিশেষ নিরাপত্তার সঙ্গে ইসিএলের প্রাক্তন ও বর্তমান জেনারেল ম্যানেজার ও নিরাপত্তা আধিকারিকদের আসানসোলে আনা হয়।