আসানসোল : বাঙালিয়ানা তাঁর মননে। বাংলা ভাষা, সংস্কৃতি তাঁর মজ্জায়। এমন মন্তব্য করে ‘বহিরাগত’ বিতর্কে আরও একবার জল ঢালার চেষ্টা করলেন বলিউড অভিনেতা তথা আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী শত্রুঘ্ন সিনহা। তিনি বলেন, “কোনও বাঙালির থেকে কম বাঙালিয়ানা নেই আমার মধ্যে। আমি কোনোভাবেই বহিরাগত নই। বাংলা ভাষা, বাংলা সংস্কৃতি আমার ভালোভাসা। ” গত মঙ্গলবারই শেষ হয়েছে আসানসোলের উপনির্বাচন পর্ব। এই ভোটের হাত ধরেই বাংলার রাজনীতিতে পা দেন তিনি। তাঁকে ওই কেন্দ্রে প্রার্থী করেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেখান থেকেই ‘বহিরাগত’ বিতর্ক সূত্রপাত।
বৃহস্পতিবার সংবাদ মাধ্যমকে শত্রুঘ্ন সিনহা বলেন, “আমি বাংলায় অনেক সিনেমা করেছি। গৌতম ঘোষের অন্তর্জলী যাত্রা থেকে শক্তি সামন্তের মস্তান। এই সমস্ত সিনেমাতে কোনও ডাবিং ছাড়াই বাংলাতেই সংলাপ বলেছি।” যদিও এই মন্তব্য প্রথম নয় তাঁর। আসানসোলে প্রার্থী হওয়া ইস্তক, নিজেকে ‘বাঙালি’ প্রমাণে আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন শত্রুঘ্ন। এ দিনও তা অন্যথা হয়নি। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রে হিন্দিভাষী ভোটার বেশি থাকায় শত্রঘ্নকে প্রার্থী করে তৃণমূল। আর তার পর থেকেই বহিরাগত তত্ত্ব ব্যুমেরাং হয়ে দাঁড়ায় তৃণমূলের কাছে। আসানসোলে বহিরাগত অস্ত্রে শান দিয়েই নির্বাচন লড়তে দেখা গিয়েছে বিরোধীদের।
একুশে নির্বাচনে বহিরাগত অস্ত্র ছিল তৃণমূলের হাতেই। নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহ-সহ জাতীয় স্তরের একাধিক বিজেপি নেতা বাংলায় প্রচার করতে এলে বহিরাগত বলে কটাক্ষ করে তৃণমূল। পাল্টা স্লোগান তোলে ‘খেলা হবে’। এ দিন এই স্লোগানেও শান দিলেন শত্রুঘ্ন সিনহা। তৃণমূল সুপ্রিমোর প্রশংসা করে শত্রুঘ্ন বলেন, “মমতা বন্দোপাধ্যায়ের হাতেই রয়েছে দেশের ভবিষ্যৎ। খেলা হবে স্লোগানকে গোটা দেশে ছড়িয়ে দিয়ে আমি তাঁর হাতই আরও শক্ত করব।”
প্রসঙ্গত, গত বিধানসভা নির্বাচনে গোটা রাজ্যজুড়ে তীব্র প্রতিষ্ঠান বিরোধী হাওয়ার মধ্যেও ‘খেলা হবে’ স্লোগানের হাত ধরেই বিজেপির বাড়া ভাতে ছাই দেয় ঘাসফুল শিবির। তৃতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় আসে মমতা ব্রিগেড। আর তারপর থেকেই খেলা হবে স্লোগানের জনপ্রিয়তা রাজ্যের গণ্ডি ছাড়িয়ে পা রাখে জাতীয় রাজনীতির ময়দানেও। সদ্য সমাপ্ত উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনেও শোনা যায় খেলা হবে ঢক্কানিনাদ। অখিলেশের পালে লাগে পরিবর্তনের হাওয়া। এবার এই স্লোগানই নতুন উদ্যোমে গোটা দেশে ছড়িয়ে দিতে নয়া কৌশল নিতে চলেছেন শত্রুঘ্ন। এমনটাই মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের।
আরও পড়ুন : TMC Behala Clash: বেহালায় গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব, রাতভর তাণ্ডব, দল থেকে বহিষ্কৃত যুব সভাপতি বাপন