দুর্গাপুর: দুয়ারে সরকার (Duare Sarkar) শিবিরে ছুটে এসেছিলেন লক্ষ্মীর ভাণ্ডার (Lakshmir Bhandar) প্রকল্পের ফর্মের জন্য। কিন্তু ভিড়ের চাপে অসুস্থ হয়ে পড়লেন এক হার্টের রোগিণী। প্রবল শ্বাসকষ্ট শুরু হয় তাঁর। কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন আত্মীয়স্বজন। খবর পেয়ে ছুটে এলেন এলাকার বিধায়ক। তার পর ভদ্রমহিলাকে টোটোট চাপিয়ে নিজেই ছুটলেন হাসপাতালে। বুধবার এমনই ছবি ধরা পড়ল দুর্গাপুর ফরিদপুর ব্লকের লাউদোহা উচ্চ বিদ্যালয়ে।
জানা গিয়েছে, এদিন সকাল থেকে অন্যদের মতো দুয়ারের সরকার শিবিরে লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন এক প্রৌঢ়া। কিন্তু এতটা ভিড় হবে বোধহয় ভাবতে পারেননি তিনি। ভিড়ের চাপে হাঁসফাস করতে শুরু করেন তিনি। শুরু হয় শ্বাসকষ্ট। সবাই যখন কী করবেন ভাবছেন, তখন হঠাৎই সেখানে উপস্থিত হন পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী। পুরো ঘটনা শুনে তড়িঘড়ি মহিলাকে নিয়ে একটা টোটোয় চাপান। তার পর নিজে টোটো চালকের সামনে বসে হাসপাতালে যান। রাস্তার মধ্যেই হাসপাতালে ফোন করে অক্সিজেন রেডি রাখতে বলেন। বিধায়কের এহেন উদ্যোগের প্রশংসা করছেন স্থানীয়রা। আর নরেন্দ্রনাথের কথায়, ‘এঁরা তো সবাই আমার আত্মীয়। এংদের জন্য এটুকু করব না, বলুন?’
রাজ্য জুড়ে চলছে দুয়ারে সরকার (Duare Sarkar) শিবির। আর তাতে ভিড়ও হচ্ছে তেমনই। বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পাওয়ার জন্য শিবিরে জমা নেওয়া হচ্ছে ফর্ম। কম বেশি সব ক’টি শিবিরে ভিড় হচ্ছে চোখে পড়ার মতো। সবচেয়ে বেশি ভিড় হচ্ছে রাজ্যের নয়া প্রকল্প লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের সুবিধা পাওয়ার জন্য। বুধবার লাউদোহা পঞ্চায়েতের কেবিটি উচ্চ বিদ্যালয়ে এরকম একটি শিবিরে ভিড়ের চাপে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন রুপালি ঘটক নামে এক মহিলা। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের ফর্ম জমা দেওয়ার জন্য তিনি নির্দিষ্ট কাউন্টারের লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। সেই লাইনে ভিড়ও ছিল যথেষ্ট। সেখানে হঠাৎই রুপালি দেবী অসুস্থ হয়ে পড়েন। শিবিরে ছড়িয়ে পড়ে চাঞ্চল্য। উপস্থিত অন্যান্যরাও রুপালি দেবীর সহায়তায় এগিয়ে আসেন। এমতাবস্থায় সেই সময় শিবিরের কাছেপিঠেই ছিলেন পাণ্ডবেশ্বরে বিধায়ক তথা তৃণমূল নেতা নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী। খবর যায় তাঁর কানে।
তিনি নিজে রুপালি দেবীকে চিকিৎসার জন্য তড়িঘড়ি টোটো করে লাউদোহা সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যান। বর্তমানে সেখানে রুপালি দেবী চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তাঁর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল বলে জানা গিয়েছে। তবে সময়মতো চিকিৎসা শুরু হওয়ার কারণে বড় ধরনের বিপদ এড়ানো গিয়েছে বলে হাসপাতাল সূত্রে খবর।
আর বিধায়ক নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী জানিয়েছেন যে, তিনি শুধু নিজের কাজ করেছেন। বাকিটা করেছেন চিকিৎসকেরা। জনগণের ভোটে বিধায়ক নির্বাচিত হয়ে জনগণের পাশে থাকাই তো তাঁর কাজ। এলাকার প্রত্যেকেই নিজের আত্মীয় বলে জানান বিধায়ক নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী। বিধায়কের কথায়, “ভদ্রমহিলা হার্টের পেশেন্ট। লক্ষ্মীর ভাণ্ডারে লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। সাপোকেশনে হঠাৎ ওনার কষ্ট শুরু হয়। আমরা সামনেই ছিলাম। সঙ্গে সঙ্গে ওঁনাকে তুলে নিয়ে এসেছি। সবাই মিলে হাসপাতালে নিয়ে এসেছি। আপাতত চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে আছেন। অক্সিজেন চলছে। এঁরা আমার আত্মীয়। ভগবানকে ডাকুন উনি যেন শীঘ্র সুস্থ হয়ে যান।” আরও পড়ুন: নম্র স্বভাব, কাজের ছেলে, হেল্পফুলও! কর্মচারীকে বাড়িতে আশ্রয় দেন মালিক, দুঃসাহসিক পরিণতি