মেদিনীপুর ও কাটোয়া: প্রথমে কলকাতার বিভিন্ন হাসপাতালে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছিল। ধীরে ধীরে তা জেলাতেও ছড়িয়ে পড়েছে। হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স থেকে স্বাস্থ্যকর্মী সংক্রমণের শিকার হচ্ছেন সকলেই। শনিবার জানা গিয়েছে, মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী মিলিয়ে প্রায় ১০০ জনের কাছাকাছি করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। অন্যদিকে পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়াতেও স্বাস্থ্যমহলে করোনার কোপ। কাটোয়া হাসপাতালে চিকিৎসক, নার্স মিলিয়ে এখনও অবধি ১৫ জন করোনা আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে।
স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিনে প্রতিদিনই তুলে ধরা হয় জেলাওয়াড়ি সংক্রমণের ছবিটা। অধিকাংশ জেলার ক্ষেত্রেই সেখানে উদ্বেগের ছবি স্পষ্ট। সতর্কতার ঢিলেমিতেই ডালপালা মেলছে করোনা। উল্লেখযোগ্য মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ছবিটা। মেদিনীপুর মেডিকেলে ডাক্তার, নার্স-সহ করোনা আক্রান্ত স্বাস্থ্যকর্মীর সংখ্যা ১০০-এর কাছাকাছি বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
ইন্ডিয়ান মেডিকেল এসোসিয়েশন-এর সম্পাদক চিকিৎসক কৃপাসিন্ধু গাঁতাইত জানিয়েছেন, করোনার প্রথম ও দ্বিতীয় ঢেউয়ে এই জেলায় এত বেশি সংখ্যক ডাক্তার, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীকে করোনা আক্রান্ত হতে দেখা যায়নি। এবার ভয়ঙ্করভাবে আক্রান্ত হচ্ছেন তাঁরা। ফলে কিছুটা হলেও তার প্রভাব পড়ছে হাসপাতালে চিকিৎসা পরিষেবায়। হাসপাতালের পিজি পড়ুয়া বা ডাক্তারবাবুরা বেশিরভাগই আক্রান্ত হওয়ায় সমস্যা বাড়ছে মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
অন্যদিকে করোনার থাবা পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়া হাসপাতালেও। হাসপাতাল সূত্রের খবর, সুপার-সহ দুই চিকিৎসক ও নার্স মিলিয়ে মোট ১৫ জন কোভিড পজিটিভ। দুই নার্সের শারীরিক অসুস্থতা দেখা দেওয়ার পরে পরীক্ষায় তাঁদের করোনা পজিটিভ ধরা পড়ে। এরপরই হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের টেস্ট করা হলে ১৫ জনের নমুনা পজিটিভ হয়। করোনা সংক্রমিত সকলেই হোম আইসোলেশনে রয়েছেন। তবে চিকিৎসক, নার্স সংক্রমিত হলেও পুরোদমে স্বাস্থ্য পরিষেবা দিচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ২২ হাজার ৬৪৫ জন। ২৮ জনের মৃত্যু হয়েছে করোনায়। পশ্চিম মেদিনীপুরে সংক্রমিত হয়েছেন ৪৭৯ জন। অন্যদিকে পূর্ব বর্ধমানে গত ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমিত ৭৬৭ জন। জেলার সংক্রমণের ছবিটা চিন্তা বাড়াচ্ছে। একইসঙ্গে সংক্রমণের কারণ ডেল্টা নাকি ওমিক্রন তা নিয়েও একটা ধন্দ তৈরি হয়েছে মানুষের মনে।
যদিও রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর এবার সংক্রমণের শিকড় খুঁজতে নয়া পরিকল্পনা নিয়েছে। আইসিএমআর অনুমোদিত যে নমুনা পরীক্ষার কিট তা ব্যবহার করতে চায় তারা। ওমিশিওর নামে এই কিটই বলে দেবে সংক্রমিত ব্যক্তি আসলে ডেল্টা নাকি ওমিক্রন স্ট্রেনে আক্রান্ত। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সংক্রমণের স্ট্রেন নির্দিষ্ট করে বোঝা গেলে কমানো সম্ভব মৃত্যুর হার।
আরও পড়ুন: Covid Bulletin: উত্তর ২৪ পরগনায় বাড়ছে সংক্রমণ! একদিনের মৃত্যুতে কলকাতাকে টেক্কা!