পশ্চিম মেদিনীপুর: জল যন্ত্রণা পিছু ছাড়ছে না ঘাটালবাসীর (Ghatal)। পরপর পাঁচবার লাগাতার বর্ষায় প্লাবিত পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটালের বিস্তীর্ণ এলাকা। এখনও জলবন্দি হয়ে ঘরে বসে রয়েছেন মানুষ। মশামাছির উপদ্রব বাড়ছে, বাড়ছে পানীয় জলের সমস্যা। তার মধ্যে স্থলপথে এখনও চালাতে হচ্ছে নৌকা। পুজোর পরেও এটাই ঘাটালের ছবি। সব মিলিয়ে নাজেহাল ঘাটালবাসী বলছেন, ‘এ যেন নরক যন্ত্রণা!’
ঘাটালে গত কয়েক দিনে আবারও জল বেড়েছে। ডুবেছে যাতায়াতের পথ, নৌকা ডিঙি চালিয়ে চলছে পারাপার। স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, গত কয়েকদিনের টানা বর্ষণের পুরো এলাকাই কার্যত জলের তলায় চলে গিয়েছে। ঘাটাল পুর এলাকা যেন আস্ত জলাশয়। পুর এলাকা থেকে ঘাটাল ব্লক ও দাসপুরে সহ বেশ কয়েকটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় আবারও জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। আর লক্ষ্মীপুজোতে এমনই জলযন্ত্রণায় নাজেহাল হয়ে উঠেছেন ঘাটাল মহকুমার বাসিন্দারা। উঠছে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন।
ঘাটালের মানুষজন বলছেন প্রায় চার মাস ধরে তারা এই রকমই জলযন্ত্রণা ভোগ করছেন। বাধ্য হয়ে গলা ও কোমরজল ডিঙিয়ে নিত্যদিনের যাতায়াত করছেন তাঁরা। তার পর সাপের ভয়, জলের সমস্যা- এসব তো বাড়তি মাথাব্যথা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ঘাটালবাসী বলছেন, এবার যা বৃষ্টি দেখছেন আর যে পরিস্থিতির মধ্যে দিনযাপন করছেন তা অতীতের বছরের সব জলযন্ত্রোণার রেকর্ড ভেঙে ডুবিয়ে দিয়েছে।
আর এই ভোগান্তি, এই জলযন্ত্রণার ফলে শুধু যে মানুষের যাতায়াতের সমস্যা হচ্ছে তা নয়, লাগাতার বর্ষণ আর বন্যার জেরে ঘাটাল মহকুমার বিস্তীর্ণ এলাকায় ক্ষতি হয়েছে। তাই এবার চাষবাসও মাথায় উঠেছে। এই মরসুমে কৃষিকাজ থেকে শুরু করে একশো দিনের কাজ, মানুষের রুজিরোজগারে কোপ পড়েছে। সংসারে অভাব শুরু হয়েছে। বাজারে আগুন মূল্য। সব মিলিয়ে যেন চক্রব্যূহে বন্দি হয়েছেন তাঁরা। পরিত্রাণের উপায় খুঁজছেন, কিন্তু পাচ্ছেন কই?
আরও পড়ুন: Weather Update: এ বৃষ্টি যেন নাছোড়! কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টির পূর্বাভাস হাওয়া অফিসের
ঘাটাল ছাড়া পশ্চিম মেদিনীপুরের বেশিরভাগ জায়গায় চিত্রটা কমবেশি একই। পুজোর আগেই প্রবল বর্ষণের জেরে মেদিনীপুর শহরের মহানালার জল উপচে জলমগ্ন হয়ে পড়েছিল পুরসভার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের বিস্তীর্ণ অংশ। তার পর থেকে এখনও জল নামেনি! গত একমাস ধরে জলবন্দি অবস্থায় রয়েছেন ওই ওয়ার্ডের দুই শতাধিক মানুষ। অনেকের বাড়ির ভিতরে জল ঢুকে রয়েছে। সেসব মেনে নিয়েই চলছে সংসার। এদিকে প্রশাসনের কোনও ভ্রুক্ষেপ নেই বলে অভিযোগ করছেন বাসিন্দারা। সবার প্রশ্ন এই যন্ত্রণার শেষ কবে, এই হয়রানির শেষ কোথায়?
আরও পড়ুন: Asansole: ‘কেন পচা জল খেতে হবে আমাদের?’ প্রশ্ন করতেই গ্রামবাসীর মাথায় বোতল ঠুকলেন উপপ্রধান!
আরও পড়ুন: সাংবাদিক সেজে এলাকায় সে কী দাপট! সীমান্তে গ্রেফতার ‘ভুয়ো জার্নালিস্ট’!