পশ্চিম মেদিনীপুর: চিকিৎসায় গাফিলতির যেন সবচেয়ে খারাপ উদাহরণ এটাই। হাসপাতালে এসেও বাড়ি ফেরা হলো না একরত্তি আলোর। বরং পাড়ি দিতে হলো অজানা এক অন্ধকারের দেশে। চিকিৎসা গাফিলতিতে এই শিশু মৃত্যুর ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম মেদিনীপুরে ঘাটাল মহকুমা হাসপাতালে।
চিকিৎসক দেখতে আসা তো দূর অস্ত, একরত্তি রোগীর স্যালাইনটিও নাকি পরীজনদেরই লাগিয়ে নিতে বলেছিলেন কর্তব্যরত নার্সরা। এরপর ক্রমশ রোগীর অবস্থার অবনতি হলেও, কেউ আসেননি চিকিৎসার জন্য। বহুবার এমার্জেন্সি দরজাতে কড়া নেড়েও শূন্য হাতেই ফিরতে হয়েছে পরিজনদের। আর সবশেষে মৃত্যু। সরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে ওঠা এহেন চরম অভিযোগ শুনেই আঁতকে উঠছেন বাকি রোগীদের পরিজনরা।
জানা গিয়েছে, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনার রানিগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা বুলু আড়ির মাত্র সাড়ে তিন বছরের মেয়ে আলো। শনিবার সকালে হঠাৎই বাড়িতে অসুস্থ হয়ে পড়ে সে। সঙ্গে সঙ্গে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় চন্দ্রকোনা গ্রামীণ হাসপাতালে। কিন্তু অবস্থার অবনতি হতে থাকায় স্থানান্তরিত করা হয় ঘাটাল মহকুমা হাসপাতালে। মেয়েকে সুস্থ করতে আসা বাবা-মার কোল শূন্য হয় এখনেই। অভিযোগ, দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত কার যত বিনা চিকিৎসায় ফেলে রাখা হয় আলোকে। রাত ন’টা নাগাদ চিকিৎসক এসে ওই শিশুটির বাবা-মাকে জানান, মৃত্যু হয়েছে তাদের একরত্তি মেয়ের। এরপরেই চিকিৎসার গাফিলতির অভিযোগ তুলে সরব হয় পরিবার। হাসপাতালে বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয় থানায়।
এদিকে, এই ঘটনার পর বুলু ও তার পরিবারের পাশে দাঁড়ান বিজেপির ঘাটালের বিধায়ক শীতল কপাট। শনিবার রাতেই মৃত্যুর শিশুর পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন। তার দাবি, এই বিষয়টি নিয়ে তিনি হাসপাতাল সুপার সুব্রতদের সঙ্গে কথাও বলেছেন। একই সঙ্গে তিনি রাজ্যের চিকিৎসার বেহাল অবস্থার বিরুদ্ধে সুর চড়ান। ঘাটাল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের সুপার সুব্রত দে বলেন, ‘গতকাল একটি শিশু চন্দ্রকোনা হাসপাতাল থেকে স্থানান্তরিত হয়ে আসে। তার একাধিক রোগ ছিল। চিৎসা সংক্রান্ত বিভিন্ন ওষুধ দেওয়া হয়। ওই রোগী অজ্ঞানই ছিল। প্রয়োজনীয় চিকিৎসাও দেওয়া হয়েছিল। চিকিৎসার গাফিলতি হয়নি। ডাক্তারবাবু ও নার্স যথাযথ ব্যবস্থা নিয়েছেন।’