পশ্চিম মেদিনীপুর: ফাঁকা ক্লাসরুম, কয়েক জন ছাত্রী, ওপার দাঁড়িয়ে মোবাইলে ভিডিয়ো করছে কেউ আর এপ্রান্তে তখন ইউনিফর্ম পরিহিত এক কিশোরী সিগারেট টান, নাক-মুখ দিয়ে ধোঁয়া বের করছে। তারপর প্রাণখোলা হাসি। প্রায় দু’বছর পর খুলল স্কুল। স্কুলের ক্লাস রুমের মধ্যে সিগারেটে টান দেওয়ার ছাত্রীর ভিডিয়ো হল ভাইরাল। নিন্দার ঝড় নেটাগরিকদের। স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে চরম গাফিলতির অভিযোগ তুলছে এলাকার মানুষজন। পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোণার একটি হাইস্কুলের ঘটনা।
ভাইরাল হয়েছে আরও একটি ভিডিয়ো। দেখা যাচ্ছে, ক্লাসরুমের মধ্যেই হিন্দি গানের সঙ্গে টিকটক করছে ছাত্রীরা। তবে এই প্রথমবার ওই স্কুল বিতর্কে জড়ায়নি। এর আগেও স্কুলের ভেতরে ক্লাস চলাকালীন ছাত্রীদের মদ্যপান করার অভিযোগও প্রকাশ্যে এসেছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রধান শিক্ষকের গাফিলতির জন্যই স্কুলের মধ্যে এই ধরনের ঘটনা ঘটছে। তাই অনান্য ছাত্রীদের মধ্যেও প্রভাব পড়ছে। শুধু তাই নয় এলাকার মানুষজন বলছে, বারে বারে প্রশাসনকে এই কথা জানানো হয়েছে। কিন্তু প্রশাসনের তরফেও কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
শনিবার ক্লাসরুমের মধ্যে ধূমপানের এই ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এসেছে। এই খবর চাউর হতেই চরম ক্ষোভ অভিভাবকদের মধ্যে। কিন্তু আরও বড় ব্যাপার, এই স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বিরুদ্ধেই নিয়ম ভাঙার অভিযোগ রয়েছে। স্কুলে শিক্ষক-শিক্ষিকারা নির্দিষ্ট সময়ে আসেন না বলেও অভিযোগ করেছেন অভিভাবকদের একাংশ। আর সেই সত্য প্রমাণিত TV9 বাংলার প্রতিনিধির সামনেও।
সোমবার সকালে ১১ টার সময় স্কুলের গেটের সামনে খবর করতে দাঁড়িয়েছিলেন TV9 বাংলার প্রতিনিধি। তখন দেখেন স্কুলের এক শিক্ষিকা ঢুকছেন। নির্দিষ্ট সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরও কেন তিনি স্কুলে ঢুকছেন, সে প্রশ্ন করতেই রীতিমতো তেড়েফুঁড়ে ওঠেন তিনি। সাংবাদিককেই ধমকে পাল্টা প্রশ্ন করেন, কেন তিনি তাঁর ভিডিয়ো তুলছেন? স্কুলে কেন দেরি করে এসেছেন, সেই ‘কৈফিয়ত’ তিনি কেন দেবেন, সে প্রশ্নও করেন।
এই সমস্ত বাগবিতণ্ডা যখন চলছে, তখনও দেখা গেল স্কুলের আরও কয়েকজন শিক্ষক-শিক্ষিকা ঢুকছেন। ঘড়ির কাঁটায় তখন ১১.২০। অথচ নির্দেশিকা অনুযায়ী সকাল সাড়ে ১০টার মধ্যে স্কুলে ঢুকতে হবে প্রত্যেক শিক্ষক-শিক্ষিকাকে। প্রশ্ন হচ্ছে, যেখানে শিক্ষক-শিক্ষিকারাই নিয়ম ভাঙছেন, সেখানে কীভাবে ছাত্রছাত্রীদের নিয়ন্ত্রণ করবেন তাঁরা?
জানা যাচ্ছে, ক্লাসরুমে ধূমপানের ঘটনায় একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির মোট ৫ জন ছাত্র-ছাত্রী যুক্ত রয়েছে। তাদেরকে সাময়িক সাসপেন্ড করা হয়েছে। অভিভাবকদের অভিযোগ, বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের সময়ই স্কুলে এই ধরনের ঘটনা বারবার ঘটছে। শৃঙ্খলা মানছেন না কোনও শিক্ষক-শিক্ষিকাই।
অভিভাবকদের বক্তব্য, তাঁরা বিষয়টি স্কুল পরিচালন সমিতি থেকে শুরু করে স্কুল কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন। কিন্তু তাঁরাও উদাসীন। স্কুল শিক্ষক-শিক্ষিকাদের উদাসীনতায় ভাল ছেলেমেয়েদেরও পড়াশোনায় ব্যাঘাত ঘটছে।
অভিভাবকদের বক্তব্য, “অভিযুক্ত ছাত্রছাত্রীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। না হলে সব ছাত্রছাত্রীরাই নষ্ট হয়ে যাবে। মা-বাবাকেও সচেতন হতে হবে। মোবাইল নিয়ে স্কুলে কীভাবে আসছে, সেটাও দেখতে হবে। স্কুলে সিসিটিভি লাগানোর কথা বলা হয়েছে।”
আরেক অভিভাবকের বক্তব্য, “এই ঘটনা প্রথম নয়। আমরা এর আগেও প্রতিবাদ করেছিলাম। প্রধান শিক্ষকের স্কুল পরিচালনার ক্ষেত্রে যোগ্যতা-দক্ষতা নেই। নানান সময়ই সিদ্ধান্তহীনতার ভোগেন।”
প্রধান শিক্ষকের বক্তব্য, “ঘটনা ঘটে গেছে। আমরা দুঃখিত। যে কজন ছাত্রছাত্রী এর সঙ্গে যুক্ত ছিল, তাদের সাময়িক সাসপেন্ড করেছি। তবে পরীক্ষা দিতে দেব। তবে ওদের একেবারে বহিষ্কার করব না। শৃঙ্খলার ব্যবস্থা আরও কড়াকড়ি করব।”
আরও পড়ুন: Diamond Harbour Fraud Case: চাকরি দেওয়ার নাম করে লক্ষ লক্ষ টাকা প্রতারণা, ফের পুলিশের জালে ১
দেখুন ভিডিয়ো:
পশ্চিম মেদিনীপুর: ফাঁকা ক্লাসরুম, কয়েক জন ছাত্রী, ওপার দাঁড়িয়ে মোবাইলে ভিডিয়ো করছে কেউ আর এপ্রান্তে তখন ইউনিফর্ম পরিহিত এক কিশোরী সিগারেট টান, নাক-মুখ দিয়ে ধোঁয়া বের করছে। তারপর প্রাণখোলা হাসি। প্রায় দু’বছর পর খুলল স্কুল। স্কুলের ক্লাস রুমের মধ্যে সিগারেটে টান দেওয়ার ছাত্রীর ভিডিয়ো হল ভাইরাল। নিন্দার ঝড় নেটাগরিকদের। স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে চরম গাফিলতির অভিযোগ তুলছে এলাকার মানুষজন। পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোণার একটি হাইস্কুলের ঘটনা।
ভাইরাল হয়েছে আরও একটি ভিডিয়ো। দেখা যাচ্ছে, ক্লাসরুমের মধ্যেই হিন্দি গানের সঙ্গে টিকটক করছে ছাত্রীরা। তবে এই প্রথমবার ওই স্কুল বিতর্কে জড়ায়নি। এর আগেও স্কুলের ভেতরে ক্লাস চলাকালীন ছাত্রীদের মদ্যপান করার অভিযোগও প্রকাশ্যে এসেছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রধান শিক্ষকের গাফিলতির জন্যই স্কুলের মধ্যে এই ধরনের ঘটনা ঘটছে। তাই অনান্য ছাত্রীদের মধ্যেও প্রভাব পড়ছে। শুধু তাই নয় এলাকার মানুষজন বলছে, বারে বারে প্রশাসনকে এই কথা জানানো হয়েছে। কিন্তু প্রশাসনের তরফেও কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
শনিবার ক্লাসরুমের মধ্যে ধূমপানের এই ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এসেছে। এই খবর চাউর হতেই চরম ক্ষোভ অভিভাবকদের মধ্যে। কিন্তু আরও বড় ব্যাপার, এই স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বিরুদ্ধেই নিয়ম ভাঙার অভিযোগ রয়েছে। স্কুলে শিক্ষক-শিক্ষিকারা নির্দিষ্ট সময়ে আসেন না বলেও অভিযোগ করেছেন অভিভাবকদের একাংশ। আর সেই সত্য প্রমাণিত TV9 বাংলার প্রতিনিধির সামনেও।
সোমবার সকালে ১১ টার সময় স্কুলের গেটের সামনে খবর করতে দাঁড়িয়েছিলেন TV9 বাংলার প্রতিনিধি। তখন দেখেন স্কুলের এক শিক্ষিকা ঢুকছেন। নির্দিষ্ট সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরও কেন তিনি স্কুলে ঢুকছেন, সে প্রশ্ন করতেই রীতিমতো তেড়েফুঁড়ে ওঠেন তিনি। সাংবাদিককেই ধমকে পাল্টা প্রশ্ন করেন, কেন তিনি তাঁর ভিডিয়ো তুলছেন? স্কুলে কেন দেরি করে এসেছেন, সেই ‘কৈফিয়ত’ তিনি কেন দেবেন, সে প্রশ্নও করেন।
এই সমস্ত বাগবিতণ্ডা যখন চলছে, তখনও দেখা গেল স্কুলের আরও কয়েকজন শিক্ষক-শিক্ষিকা ঢুকছেন। ঘড়ির কাঁটায় তখন ১১.২০। অথচ নির্দেশিকা অনুযায়ী সকাল সাড়ে ১০টার মধ্যে স্কুলে ঢুকতে হবে প্রত্যেক শিক্ষক-শিক্ষিকাকে। প্রশ্ন হচ্ছে, যেখানে শিক্ষক-শিক্ষিকারাই নিয়ম ভাঙছেন, সেখানে কীভাবে ছাত্রছাত্রীদের নিয়ন্ত্রণ করবেন তাঁরা?
জানা যাচ্ছে, ক্লাসরুমে ধূমপানের ঘটনায় একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির মোট ৫ জন ছাত্র-ছাত্রী যুক্ত রয়েছে। তাদেরকে সাময়িক সাসপেন্ড করা হয়েছে। অভিভাবকদের অভিযোগ, বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের সময়ই স্কুলে এই ধরনের ঘটনা বারবার ঘটছে। শৃঙ্খলা মানছেন না কোনও শিক্ষক-শিক্ষিকাই।
অভিভাবকদের বক্তব্য, তাঁরা বিষয়টি স্কুল পরিচালন সমিতি থেকে শুরু করে স্কুল কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন। কিন্তু তাঁরাও উদাসীন। স্কুল শিক্ষক-শিক্ষিকাদের উদাসীনতায় ভাল ছেলেমেয়েদেরও পড়াশোনায় ব্যাঘাত ঘটছে।
অভিভাবকদের বক্তব্য, “অভিযুক্ত ছাত্রছাত্রীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। না হলে সব ছাত্রছাত্রীরাই নষ্ট হয়ে যাবে। মা-বাবাকেও সচেতন হতে হবে। মোবাইল নিয়ে স্কুলে কীভাবে আসছে, সেটাও দেখতে হবে। স্কুলে সিসিটিভি লাগানোর কথা বলা হয়েছে।”
আরেক অভিভাবকের বক্তব্য, “এই ঘটনা প্রথম নয়। আমরা এর আগেও প্রতিবাদ করেছিলাম। প্রধান শিক্ষকের স্কুল পরিচালনার ক্ষেত্রে যোগ্যতা-দক্ষতা নেই। নানান সময়ই সিদ্ধান্তহীনতার ভোগেন।”
প্রধান শিক্ষকের বক্তব্য, “ঘটনা ঘটে গেছে। আমরা দুঃখিত। যে কজন ছাত্রছাত্রী এর সঙ্গে যুক্ত ছিল, তাদের সাময়িক সাসপেন্ড করেছি। তবে পরীক্ষা দিতে দেব। তবে ওদের একেবারে বহিষ্কার করব না। শৃঙ্খলার ব্যবস্থা আরও কড়াকড়ি করব।”
আরও পড়ুন: Diamond Harbour Fraud Case: চাকরি দেওয়ার নাম করে লক্ষ লক্ষ টাকা প্রতারণা, ফের পুলিশের জালে ১
দেখুন ভিডিয়ো: