Mahalaya 2021: ‘মেঘ দেখলেই ভয় লাগছে, আবার যদি…’, নৌকায় বসেই মহালয়া শুনলেন ঘাটালবাসী

Ghatal: এখনও বানভাসি ঘাটাল। পরিস্থিতির খুব একটা উন্নতি হয়নি। নৌকা নিয়েই চলছে নিত্যদিনের কাজ।

Mahalaya 2021: 'মেঘ দেখলেই ভয় লাগছে, আবার যদি...', নৌকায় বসেই মহালয়া শুনলেন ঘাটালবাসী
ঘাটালে এভাবেই মহালয়া শুনছেন বাসিন্দারা (নিজস্ব চিত্র)
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Oct 06, 2021 | 7:39 AM

ঘাটাল: শুধু ঘাটাল (Ghatal) নয়। বানভাসি রাজ্যের বিস্তীর্ণ এলাকা। গত কয়েকদিনে অনেক মর্মান্তিক ঘটনার সাক্ষী থাকতে হয়েছে এইসব এলাকাকে। তবিও তো উৎসব আসে, আনন্দের আবহ নিয়েই। যে কোনও পরিস্থিতি বা প্রতিকূলতার মধ্যেও সব কিছু কাটিয়ে উঠে সেটুকুই আঁকড়ে ধরতে চায় মানুষ। আপামর বাঙালি যখন আজ মহালয়ার (Mahalaya) আনন্দে মেতে উঠেছে, তখন তাঁরাই বা বাদ পড়বেন কেন। ঘরের ভিতরে জল, বিদ্যুৎ বা কেবলের যোগাযোগও বিচ্ছিন্ন। তবু নৌকায় বসে মহালায়া শুনলেন ঘাটালের বাসিন্দারা।

মহালয়ার ভোরে নৌকো ও ডিঙ্গিতে চড়ে রেডিও হাতে মহালয়া শুনতে ব্যস্ত ঘাটালের বানভাসি মানুষ। বন্যায় ভাসছে গোটা ঘাটাল, নেই বিদ্যুৎ। তবু আনন্দ থেকে বাদ পড়তে চাননা কেউই। পুজো কেমন কাটবে জানা নেই। তাই এটুকু নস্টালজিয়া আঁকড়েই আনন্দ খোঁজার চেষ্টা করছেন তাঁরা। তাই মহালয়ার ভোরে রেডিওতে মহালয়া শুনতে ব্যস্ত মানুষ। বন্যায় ভেসেছে সব কিছুই, নেই কেবল সংযোগ, টিভির কেবল লাইনও বন্ধ। মহালয়াও দেখার উপায় নেই। ভরসা করতে হচ্ছে সেই পুরনো রেডিওর ওপর। নৌকায় বসেই রেডিওর নব ঘুরিয়ে বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্রের চেনা কন্ঠে মহালয়া শুনছেন বানভাসি ঘাটালের লোকজন।

এক বাসিন্দা জানান, ঘরে বিদ্যুৎ এলেও কেবল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। তাই টিভি দেখার কোনও উপায় নেই। আনন্দটুকু সবার সঙ্গে ভাগ করে নিতে তাই নৌকায় করেই রাস্তায় বেরিয়ে পড়েছেন তিনি। নৌকার ওপরে বসে মহালয়া শুনছেন তাঁরা। অনুপ সামন্ত নামে ঘাটালের আর এক বাসিন্দা জানান, কখন আবার মেঘ করবে আর বৃষ্টি নামবে এই আতঙ্কে কাটছে দিন। তিনি বলেন, ‘গত একমাস ধরে জল নামেনি। পুজোতেও জল নামার কোনও আশা নেই। পুজো বা মহালায়া এসবের আনন্দই শেষ।’ শুধু পুরসভা থেকে একটু পানীয় জল মিলেছে। সেটুকু কে ভরসা করেই জীবনযাপন করছেন তাঁরা।

প্রায় একমাস ধরে খারাপ অবস্থা ঘাটালের। ঘাটাল পাঁশকুড়া রাজ্য সড়কের বরদা চাতাল থেকে জল কমলেও এখনও জলমগ্ন ঘাটাল পৌরসভা কার্যালয়। পৌরসভার ১৭ টি ওয়ার্ডের মধ্যে এখনও ১৪ টি ওয়ার্ড জলমগ্ন। অজবনগর গ্রাম পঞ্চায়েত মনসুকস গ্রাম পঞ্চায়েত-সহ বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকাতেও এখনও জল। যাতায়াতের একমাত্র উপায় ডিঙি বা নৌকায় অসুস্থ ব্যক্তি ও প্রসূতিদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। বোটের মাধ্যমে এনডিআরএফ ও পুলিশকর্মীরা উদ্ধারকাজ চালাচ্ছেন। শুধু তাই নয়, দাসপুর ১ ও ২ ব্লকের বেশ কয়েকটি গ্রাম পঞ্চায়েত এখনও জলমগ্ন। চন্দ্রকোণা ১ ও ২ ব্লকের কৃষি জমি জলের তলায়।

বিদ্যুৎ নেই বিস্তীর্ণ এলাকায়। অজবনগর নগর গ্রাম পঞ্চায়েতের বহু পরিবার ভিটেমাটি হারিয়ে এখনও বসবাস করছেন রাজ্য সড়কে। পানীয় জলের সংকট দেখা দিয়েছে। শেষ হয়ে আসছে শুকনো খাবার। এবার দেখা দিচ্ছে খাদ্য সঙ্কট।

আরও পড়ুন: COVID: দেবীপক্ষের সূচনায় পিতৃপুরুষের উদ্দেশে ঘাটে ঘাটে তর্পণ, উধাও করোনা বিধি!