মহালয়া মানে দুর্গা পূজার সূচনা। বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব। কিন্তু আপামর বাঙালি কি এবার পুজোয় সত্যিই মেতে উঠতে পারবে আনন্দে? একদিকে রয়েছে করোনা অতিমারির ভয়। তারই মধ্যে দোসর কন্যা। দুই মেদিনীপুর, হাওড়া, হুগলির বিস্তীর্ণ অঞ্চলজুড়ে জমে আছে জল। বৃষ্টি থেমে গেলেও এখনও স্বাভাবিক ছন্দে ফেরেনি জনজীবন। তবু মন চায় সমস্ত প্রতিকূলতার মধ্যেও আচার, রীতি বা ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে। জল ঠেঙিয়ে জল নদীর পাড়ে যাওয়ার প্রয়োজন পড়ল না। বাড়ির উঠোনে এক কোমর জল। তাই সেই জলেই হল পিতৃ তর্পণ।
পিতৃপক্ষের অবসানে মহালয়ার ভোরে পূর্বপুরুষদের উদ্দেশে তর্পণ করাই বাঙালির রীতি। বন্যা পরিস্থিতির মধ্যেও সেই রীতিতে পড়ল না ভাটা। বন্যার সৌজন্যে দুয়ারেই হাজির গঙ্গা। বাড়ির উঠোনে এসেছে নদীর জল। তাই বাড়ির সামনে চলছে পিতৃ তর্পণ। ঘাটাল পুরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের আড়গোড়ার বাসিন্দা অরূপ বেরা এ ভাবেই করলেন তর্পণ।
অন্যান্য বছর ঘাটালের শিলাবতী নদীতে তর্পণ করতে যেতে হয় এলাকার বাসিন্দাদের। এ বছর পাল্টে গিয়েছে ছবিটা। বন্যার জলে প্লাবিত ঘাটালের বিস্তীর্ণ এলাকা। প্রায় একমাস ধরে খারাপ অবস্থা ঘাটালের। ঘাটাল পাঁশকুড়া রাজ্য সড়কের বরদা চাতাল থেকে জল কমলেও এখনও জলমগ্ন ঘাটাল পৌরসভা কার্যালয়। পৌরসভার ১৭ টি ওয়ার্ডের মধ্যে এখনও ১৪ টি ওয়ার্ড জলমগ্ন। অজবনগর গ্রাম পঞ্চায়েত মনসুকস গ্রাম পঞ্চায়েত-সহ বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকাতেও এখনও জল। যাতায়াতের একমাত্র উপায় ডিঙি বা নৌকায় অসুস্থ ব্যক্তি ও প্রসূতিদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। বোটের মাধ্যমে এনডিআরএফ ও পুলিশকর্মীরা উদ্ধারকাজ চালাচ্ছেন।
শুধু তাই নয়, দাসপুর ১ ও ২ ব্লকের বেশ কয়েকটি গ্রাম পঞ্চায়েত এখনও জলমগ্ন। চন্দ্রকোণা ১ ও ২ ব্লকের কৃষি জমি জলের তলায়।