পশ্চিম মেদিনীপুর: মাত্র কয়েক ঘণ্টা। আর তারপর লক্ষ্মীপুজো। কিন্তু দুর্যোগ যেন কিছুতেই কাটতে চাইছে না বাঙলার (West bengal) আকাশ থেকে। আবহাওয়ার খামখেয়ালীপনায় দুর্গাপুজো কাটতেই ঘনীভূত হয়েছে নিম্নচাপ। চলছে টানা বৃষ্টি। আর এতেই লক্ষ্মী পুজোর (Laxmi Puja) আগে মুখভার চন্দ্রকোনার সবজি,ফল,ফুল বিক্রেতাদের। শুধু ব্যবসায়ী নয়, পুজোর আগে বাজারে ক্রেতার তেমন ভিড় না থাকায় দুঃশ্চিন্তায় পড়ছেন সকল ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। সমস্যায় পড়ছেন মৃৎশিল্পীরাও।
দুর্গাপুজোর রেশ এখনও কাটেনি। তার মধ্যেই বাঙালির ঘরে ঘরে আয়োজন হয়েছে কোজাগরী লক্ষ্মী পুজোর।দুর্গা পুজোর পরই ধনদেবীর আরাধনায় মেতে উঠে আমজনতা। পুজোর আগে বাজারগুলিতে তিল ধারণের জায়গা থাকে না ক্রেতা বিক্রেতাদের ভিড়ে।
প্রতিবছর এমন ছবিটাই দেখা যেত পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনা রেগুলেটেড বাজারে। চন্দ্রকোনা পৌরসভার ৫ নং ওয়ার্ড গোঁসাইবাজারে অবস্থিত জেলার বৃহৎ এই বাজার চত্বরে লক্ষ্মী পুজোর আগে সেই চেনা ছবি উধাও। গতবছর ছিল করোনা। সেই কারণে লাভের মুখ দেখেননি ব্যবসায়ীরা। এইবছর আবার নিম্নচাপ।
সকাল থেকেই এই বাজার চত্বরে থাকা সবজি,ফল থেকে ফুল বিক্রেতাদের দোকানের সামনে ক্রেতাদের সেই ভিড়ের ছবিটা উধাও। কারণ হিসাবে বিক্রেতাদের দাবি,গত এক দু’দিন ধরে আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনায় লক্ষ্মী পুজোর আগে কার্যত ফাঁকা চন্দ্রকোনার এই বৃহৎ বাজার চত্বর। বাজারে বিক্রেতাদের সবজি,ফল থেকে ফুল দুই দিন বিক্রি নেই। এইসকল বিক্রেতাদের দাবি,চড়া দামে তাঁরা সবজি,ফল থেকে ফুল সহ পুজোর উপকরণ কিনে এনে বাজারে বসলেও আগের তুলনায় ক্রেতাদের ভিড় নেই।
এর আরও একটা কারণ হল করোনার জেরে এমনিতেই সব পুজোয় অনেক কাটছাঁট হয়ে গিয়েছে। তার উপর এই বছর লক্ষ্মী পুজোর আগে টানা বৃষ্টি। এই দুইয়ে মিলে এবছর লক্ষী পুজোর বাজার মন্দা,ব্যবসায় ক্ষতি বলে দাবি ব্যবসায়ীদের। তাঁদের দাবি,আবহাওয়ার যা পরিস্থিতি পুজোর কেনাকাটার বৃষ্টি এভাবে চলতে থাকলে তাদের জিনিসপত্র অর্ধেক দামে বিক্রি করে দিতে হবে। সবজি,ফল,ফুল থেকে পুজোর উপকরণের দাম চড়া হলেও পড়ে থেকে নষ্টের আশঙ্কায় তা কম দামেই ক্রেতাদের বিক্রি করে দিতে হচ্ছে বলে দাবি চন্দ্রকোনার এই বৃহৎ বাজারের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের।
আর এতেই মুখভার সবজি থেকে ফল ও ফুল বিক্রেতাদের। এদিকে ক্রেতাদের কথা আবার ভিন্ন। অনেকে বলছেন, আগের তুলনায় এবছর জিনিসপত্রের দাম আগুন,পুজো তো আর বন্ধ করা যায় না। তবে বৃষ্টি চলতে থাকায় কেনাকাটায় ব্যাঘাত ঘটছে বলে দাবি তাঁদেরও।
অপরদিকে আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনায় সমস্যায় পড়েছে চন্দ্রকোনার মৃৎশিল্পীরাও।এবছর যেটুকু অর্ডার মিলেছে লক্ষ্মী পুজোয়,তার অর্ধেক প্রতিমার কাজ সম্পুর্ণ হয়েছে। সব মিলিয়ে দুর্গা পুজোয় বৃষ্টি তেমন প্রভাব ফেলতে না পারলেও লক্ষ্মী পুজোয় যথেষ্টই সমস্যায় ফেলেছে সাধারণ মানুষ থেকে ব্যবসায়ীদের।