পশ্চিম মেদিনীপুর : নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগ দীর্ঘদিনের। মামলা-মোকদ্দমাও চলছিল অনেক দিন ধরেই। কিন্তু অতি সম্প্রতি মন্ত্রী পরেশ অধিকারীর মেয়ের নিয়োগে বেনিয়মের অভিযোগ ওঠায় নতুন করে শুরু হয়েছে চর্চা। এসএসসি থেকে প্রাথমিক, নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে কার্যত উত্তাল রাজ্য-রাজনীতি। এরই মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল বাম আমলের একটি চিঠি। গ্রুপ ডি পদে চাকরি দেওয়ার জন্য আবেদন জানানো হয়েছে ওই চিঠিতে। যদিও ভাইরাল হওয়া চিঠির সত্যতা যাচাই করেনি Tv9 বাংলা, তবে এই চিঠিকে হাতিয়ার করে বামেদের বিরুদ্ধে তোপ দাগতে শুরু করেছে শাসক দল।
ভাইরাল হয়েছে সিপিএমের লেটার হেডে লেখা একটি চিঠি, যেটি আসলে চাকরির সুপারিশ। চিঠিটি দেখা বোঝা যাচ্ছে, সেটি ২০০৮ সালের ২৭ ডিসেম্বর লেখা হয়েছিল। ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী) পাচরা লোকাল কমিটির প্যাডে লেখা সেই চিঠি। বাম নেতা খগেন্দ্রনাথ মাহাতকে চিঠিটি লেখা হয়েছে।
চিঠিতে লেখা রয়েছে, ‘আমি শ্রী মোহিতলাল হাজরা, গ্রাম পালজাগুল, পোস্ট জাগুল।’ নিজেকে দুঃস্থ পরিবারের সন্তান ও বামপন্থী বলে পরিচয় দিয়েছেন চিঠির প্রেরক। তিনি জানিয়েছেন দীর্ঘদিন ধরে বামপন্থী আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত তিনি। কারও চাকরির সুপারিশের কথা বলে তিনি লিখছেন, ‘একে আপনার কাছে পাঠালাম। ধেড়ুয়া অঞ্চল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের গ্রুপ ডি পদে যে লোক নেওয়া হবে, সেই বিষয়ে যাতে একে নেওয়া যায় তার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণে অনুরোধ করছি। পরে আপনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে নেব।’
কার চাকরির জন্য সুপারিশ করছেন, তা বোঝা না গেলেও এটুকু স্পষ্ট যে, চাকরি যাতে দেওয়া যায়, সেই জন্যই বাম নেতাকে চিঠি লিখেছেন তিনি। ২০০৮ সাল অর্থাৎ তখনও রাজ্যে ক্ষমতায় বামেরা। সেই সময়েই ওই চিঠি লেখা হয়েছিল বলে দাবি শাসক দলের।
এই বিষয়ে তৃণমূলের জেলা সভাপতি সুজয় হাজরা বলেন, ‘সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে বলে দেখছি। আসলে সিপিএম কী করেছিল সেটা নিশ্চয় সকলের জানা। এ ভাবেই চাকরি হত।’ তাঁর দাবি, যে ২৬৯ জনের নামের তালিকা বাতিল হয়েছে তাতেও বামফ্রন্টের নেতাদের পরিবারের সদস্য রয়েছেন। এ দিকে, বিজেপি জেলা সহ সভাপতি অরূপ দাস বলেন, ‘মুদ্রার এপিঠ ওপিঠ হল তৃণমূল আর সিপিএম। আসল মেধাবীরা বঞ্চিত হচ্ছে। চিঠি দিয়ে গোপনে নিয়োগ চলছে।’ তবে একসময়ের দাপুটে সিপিএম নেতা তথা সিপিএমের জেলা সম্পাদক সুশান্ত ঘোষ বিষয়টাকে খুব অস্বাভাবিক বলে ভাবছেন না। তিনি বলেছেন, ‘জনপ্রতিনিধির কাছে যে কেউ আবেদন বা সুপারিশ করতেই পারে। তা নিয়ে হইচই করার কিছু নেই।’