বর্ধমান: ৯ বছর কেটে গিয়েছে অপেক্ষা করতে করতে। এখনও কোনও আশার আলো দেখা যাচ্ছে না। প্রতিশ্রুতিই সার! তাই বাহ্যিক সাজগোজ, আনন্দ অনুষ্ঠানের মধ্যেও ভিতরের যন্ত্রণাটা কুরে কুরে খায়। তাই তো অতিথিদের সামনেই চাকরির দাবিতে সুর চড়িয়েছেন নববধূ। এমনটাই বললেন ভাতারের ছাতনী গ্রামের অভয়া রায়। সম্প্রতি তাঁর বিয়ের আসরের একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয়, যেখানে দেখা যায় চাকরির দাবিতে স্লোগান দিচ্ছেন তিনি ও তাঁর সহযোদ্ধারা। অভয়ার দাবি, চাকরিতে বঞ্চনার বিরুদ্ধে যে প্রতিবাদ, তা প্রত্যন্ত অঞ্চের মানুষের কাছেও পৌঁছে যাক, এমনটাই চেয়েছেন তিনি।
বাড়িতে রয়েছেন তাঁর অসুস্থ বাবা। বছর দশেক আগে দুর্ঘটনায় আহত হওয়ার পর থেকে আর পুরোপুরি সুস্থ হননি তিনি। অভয়া একাই ছিলেন পরিবারের উপার্জনক্ষম সদস্য। ওই ঘটনার পর যখন পরিবারের আর্থিক অবস্থা খারাপ হতে শুরু করে, তখন হাল ধরেন অভয়াই। চাকরির আশায় ২০১৪ সালে টেট পরীক্ষা দেন তিনি। পরে জমি বিক্রির টাকায় ডিএলএড উত্তীর্ণ হন। টেট পাশ করার পর ৯ বছর কেটে গেলেও শুধু প্রতিশ্রুতি ছাড়া জোটেনি কিছুই। দিনের পর দিন ধরনা মঞ্চেও বসে থেকেছেন অভয়া। তাই এবার বিয়ের আসরকেই প্রতিবাদের জন্য বেছে নিয়েছেন তিনি।
‘নিয়োগ চাই নিয়োগ চাই, আমাদের বঞ্চনা মানছিনা মানবো না, বিয়ের আসর থেকে দিচ্ছি ডাক বঞ্চিতরা চাকরি পাক।’ এই স্লোগানই তুলেছিলেন অভয়া। এই ঘটনায় হৈচৈ পড়ে গিয়েছে পূর্ব বর্ধমানের ছাতনী গ্রামে।
TV9 বাংলার মুখোমুখি হয়ে অভয়া বলেন, বিয়ের দিনেও বেকারত্বের যন্ত্রণা ভুলে থাকতে পারিনি। প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর বিয়ে করব ভেবেছিলাম। সে তো আর হল না। বাইরে আনন্দ থাকলে, ভিতরে রয়েছে ৯ বছরের যন্ত্রণা। তিনি আরও বলেন, আমি তো বিয়ে করেছি। অনেকে তো বিয়ের কথা ভাবতেও পারেন না। অভয়ার দাবি, তিনি যে প্রত্যন্ত গ্রামে থাকেন, সেখানে অনেকেই এই নিয়োগ দুর্নীতির কথা জানেন না। অভয়া চান, তাঁরা জানুক। বিয়ের মণ্ডপ থেকে তাঁর এই প্রতিবাদে সমর্থন জানিয়েছে অভয়ার পরিবারও।