পূর্ব বর্ধমান: এক সময় জেলায় তৃণমূলের (Trinamool Congress) দাপুটে নেতা হিসাবেই পরিচিতি ছিল। অভিযোগ, পরে দলের সঙ্গে মনোমালিন্য হয়। দল ছেড়ে বিজেপিতে যান বর্ধমানের সুজিত ঘোষ। রাজনীতিতে ‘ট্রেন্ড’ই আছে, এ দলে না পোষালে অন্য দল। সেখানেও ‘মন না টিকলে’ ঘর ওয়াপসি! রবিবার তেমনই হল সুজিতের ক্ষেত্রেও। যদিও সুজিত ঘোষের দাবি, তিনি বিজেপিতে কোনও দিনই সে অর্থে যোগ দেননি। জোর করে তাঁকে টানা হয়েছিল।
বর্ধমানের ডাকাবুকো নেতা হিসাবেই পরিচিত ছিলেন সুজিত ঘোষ। ২০১৪-১৫ সালে দলের উচ্চ নেতৃত্বের সঙ্গে তাঁর বিবাদ হয় বলে অভিযোগ। সে কারণে দল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন। ২০১৬ সালে তৃণমূল ছাড়েন। এরপরই ধীরে ধীরে বিজেপি শিবিরে ঘেঁষতে থাকেন সুজিত। এমনকী বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য পদও নাকি পেয়ে যান তিনি। সেই সুজিত ঘোষই রবিবার আবারও তৃণমূলে ফিরলেন।
দলে ফিরে সুজিত ঘোষের বক্তব্য, বিজেপির তরফে তাঁকে ভুল বোঝানো হয়েছিল। তিনি সেভাবে বিজেপিতে সক্রিয় ছিলেন না। মমতা বন্দোপাধ্যায়ের কর্মকাণ্ডে অনুপ্রাণিত হয়েই আবার পুরনো দলে ফেরার সিদ্ধান্ত নেন বলে জানান এদিন।
এদিন তিনশোর বেশি সমর্থক নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করেন সুজিত ঘোষ। পাশাপাশি বর্ধমান জেলা কংগ্রেসের এসসিএসটি সেলের সম্পাদক তথা আইনজীবী কৈলাস পাসোয়ান এদিন তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান দেন। বেশ কয়েকজন আইনজীবী-সহ শতাধিক কংগ্রেস কর্মী নিয়ে তিনি তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করলেন বলে জানান।
এদিন বর্ধমানের সংস্কৃতি লোকমঞ্চে তাঁদের হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেন বর্ধমান জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় ও রাজ্যের মন্ত্রী তথা বর্ধমান জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি স্বপন দেবনাথ।
তৃণমূলে ফেরার পর সুজিত ঘোষের প্রতিক্রিয়া, “২০১৬ সাল পর্যন্ত আমি তৃণমূল করেছি। শারীরিক অসুস্থতার কারণে আমি বসে যাই। আবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুপ্রেরণায় দলে ফিরলাম। বিজেপিতে যোগদান করিনি কোনওদিনই। ২০১৯ সালের পর দু’ একজন খুব চাপ দিয়েছিল নানা ভাবে। বিজেপিতে যোগদান যেটা, বিজেপির হয়ে কাজকর্ম, যাওয়া-আসা কোনওদিনই ছিল না। একদিন জোর করায় গিয়েছিলাম। আমি তৃণমূলেই ছিলাম, তৃণমূলে আছি, তৃণমূলে থাকব। সব দলেই দ্বন্দ্ব থাকে। দল তো একটাই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল। ভুল বোঝাবুঝি, রাগ তো সংসারে হয়ই। বাড়িতেও হয়। তারপরও তো সেখানেই থাকি।”
বর্ধমান সদর জেলা বিজেপির সম্পাদক শ্যামল রায় এ প্রসঙ্গে বলেন, “আমরা খবর পেলাম সুজিত ঘোষ যোগ দিয়েছেন। এটা নিয়ে বলার তো কিছুই নেই। তৃণমূল থেকে এসেছিলেন। বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য হিসাবে ছিলেন। কোনও কাজই করেননি। বেনো জল যত বেরোবে ততই আমাদের সুবিধা। আমরা এসব নিয়ে মোটেই চিন্তিত নই।”
আরও পড়ুন : Tathagata Roy: টুইটার, ফেসবুকে বদলে গেল তথাগত রায়ের ‘ব্যক্তিগত পরিচিতি’, দল ছাড়ছেন?