Ajay Chakrabarty on Burdwan Medical College: ‘নিজেই গায়ে আগুন লাগানোর চেষ্টা করেছিলেন সন্ধ্যারানি’, বর্ধমান হাসপাতাল-অগ্নিকাণ্ডে নয়া তথ্য!
Purba Bardhaman: শনিবার দুপুরে স্বাস্থ্য ভবন থেকে আরেকটি বিশেষজ্ঞ টিম পাঠানো হয় যার মধ্যে অন্যান্য আধিকারিকদের সাথে ফরেনসিক মেডিসিনের বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ছিলেন|
পূর্ব বর্ধমান: বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (Burdwan Medical College Hospital) ঝলসে রোগী মৃত্যুর ঘটনায় এবার পদক্ষেপ স্বাস্থ্য দফতরের। বর্ধমানে (Burdwan) যায় দফতরের একটি দল। স্বাস্থ্য অধিকর্তা, স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিকর্তাকে একটি রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী জানিয়েছেন, ওই ওয়ার্ডে অক্সিজেন চলছিল এবং বাতাসে অক্সিজেনের মাত্রা বেশি হয়েছিল, সেখান থেকেই দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ে। শুধু তাই নয়, ওই বৃদ্ধা নিজেই গায়ে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করছিলেন, সেখান থেকেই ছড়িয়ে পড়ে আগুন, এমনটাই ধরা পড়েছে সিসিটিভিতে।
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, হাসপাতালের ওই কেবিনের সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করে ধরা পড়েছে সন্ধ্যারানি নামের ওই বৃদ্ধা নিজেই নিজের গায়ে আগুন দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। তার বিছানা থেকে একটি লাইটারও পাওয়া গিয়েছে। মুখে অক্সিজেনের নল তো ছিলই উপরন্তু ওই কোভিড ওয়ার্ডে অক্সিজেনের মাত্রাও অনেক বেশি ছিল। ফলে দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ে।
তবে প্রশ্ন উঠছে, ওই ওয়ার্ডে থাকা বাকি ৩ জন রোগিণীকে কীভাবে বাঁচানো সম্ভব হল? কী করেই বা কেবল একটি শয্যাতেই আগুন লাগল, সেই আগুন ছড়াল না? কেন কোনও নার্স বা স্বাস্থ্যকর্মী সেখানে উপস্থিত ছিলেন না? উঠছে এমন হাজারও প্রশ্ন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের যদিও দাবি, এটা পুরোটাই দুর্ঘটনা। হাসপাতালের কোনও নার্স বা স্বাস্থ্যকর্মীর আচমকা ওভাবে বোঝা সম্ভব হয়নি যে ওই বৃদ্ধা এইভাবে গায়ে আগুন লাগানোর চেষ্টা করবেন।
ইতিমধ্য়েই শনিবার দুপুরে স্বাস্থ্য ভবন থেকে আরেকটি বিশেষজ্ঞ টিম পাঠানো হয় যার মধ্যে অন্যান্য আধিকারিকদের সাথে ফরেনসিক মেডিসিনের বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ছিলেন| তাঁরা আরও বিস্তারিত তদন্ত করেন। সেই দ্বিতীয় রিপোর্ট এখনও পেশ করা হয়নি। স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী জানিয়েছেন, প্রাথমিকভাবে এটা স্পষ্ট যে অক্সিজেনের মাত্রাতিরিক্ত উপস্থিতির জেরেই আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। বাকি রোগিণীরা অনেক দূরে দূরে ছিলেন, ফলে অত দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়তে পারেনি। অতি দ্রুত বাকি রোগীদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়।
বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শনিবার ভোরের দিকে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। হাসপাতালের কোভিড ওয়ার্ডের ৬ নম্বর ব্লকে এই ঘটনায় এক রোগীর মৃত্যু হয়। সন্ধ্যা মণ্ডল নামে বছর ষাটের ওই মহিলা গলসির বাসিন্দা ছিলেন। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ প্রবীর সেনগুপ্তের বক্তব্য অনুযায়ী, “কোভিড জেনারেল ওয়ার্ডে সাড়ে তিনটের সময়ে সার্জারির চিকিৎসকরা গিয়ে সন্ধ্যা মণ্ডলকে দেখে আসেন। তারপর পাঁচটা নাগাদ খবর পেয়ে সেখানে গিয়ে দেখা যায় সন্ধ্যা মণ্ডলের বেডটাই দাউ দাউ করে জ্বলছে। অক্সিজেন সিলিন্ডার ছাড়া তো আর কোনও কিছু ছিল না ওখানে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
এদিকে বর্ধমান হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ডের জেরে রাজ্যের সমস্ত হাসপাতালে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা খতিয়ে দেখার নির্দেশ জারি করা হল। রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম জানান, সম্প্রতি অগ্নিকাণ্ড নিয়ে সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালের অগ্নিনির্বাপক পরিকাঠামো খতিয়ে দেখতে নির্দেশিকা জারি হয়েছিল। বর্ধমানের ঘটনার পরে সবক’টি হাসপাতালকে আরও এক দফায় অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে। কোথাও কোনও গণ্ডগোল থাকলে দ্রুত তা ঠিক করে নেওয়ার কথাও বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: Halisahar Blast Case: একা অর্জুন নন! পাশে শুভেন্দু, সিপিএম, হালিশহর বিস্ফোরণকাণ্ডে NIA তদন্তের দাবি