পূর্ব বর্ধমান: বাড়িতে আসছে চিঠি। প্রেরকের জায়গায় ইউনিক আইডেন্টিফিকেশন অথরিটি অব ইন্ডিয়া বা ইউআইডিএআই (UIDAI) লেখা। চিঠিতে লেখা আধার কার্ড ‘ডিঅ্যাক্টিভেটেড’। জামালপুর ব্লকের জৌগ্রাম, আবুজহাটি-সহ একাধিক গ্রামে আসছে চিঠি। ইউআইডিএআই-এর রাঁচির আঞ্চলিক কার্যালয় থেকে এই চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে অভিযোগ। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে হইচই পড়ে গিয়েছে এলাকায়। ভয় পাচ্ছেন অনেকেই। আধার ডিঅ্যাক্টিভ মানে তো নাগরিকত্ব নিয়েও প্রশ্ন উঠে যায়। যদিও ব্লক আধিকারিকের বক্তব্য, এ ধরনের ভয়ের কোনও কারণ আছে বলে তাঁর মনে হচ্ছে না।
স্থানীয় বাসিন্দা বিপুল বিশ্বাসের কথায়, “১০-১২ বছর হল এখানে এসেছি। ভোটার কার্ড, আধার কার্ড সবই করেছি আমরা। অথচ এখন দেখছি নোটিস এসেছে। পোস্ট অফিস থেকে এসেছে। বলছে আধার কার্ড সক্রিয় নয়। আমার বাড়িতে ১৬ জন সদস্য। ৮ জনের নামে চিঠি এসেছে।” এদিকে এরকম চিঠিকে কেন্দ্র করে হইচই পড়ে গিয়েছে এলাকায়।
ডাকযোগে যে চিঠি এসেছে, সেখানে আধার কার্ডের নম্বর উল্লেখ করে বলা হয়েছে, কার্ডগুলি নিষ্ক্রিয়। এদিকে আধার নিষ্ক্রিয় হওয়া মানে ব্যাঙ্ক থেকে রেশন, সমস্ত ক্ষেত্রেই সমস্যার মুখে পড়তে হবে। হচ্ছেও তেমনটাই। তবে এই কার্ড চালু করতে নিকটবর্তী ইউআইডিএআই অফিসে গিয়ে যোগাযোগ করার পরামর্শও দেওয়া হয়েছে চিঠিতে।
আবুজহাটি-১ গ্রামপঞ্চায়েত প্রধান রমজান শা বলেন, “পরিবারগুলো খুবই চিন্তায় আছে দেখলাম। অনেকের রেশন বন্ধ হয়ে গিয়েছে। অনেকেই টাকা তুলতে পারছেন না। আমাদের বিধায়ক অলোক মাজিকে জানিয়েছি বিষয়টা। বিধানসভায় উনি বলবেন বিষয়টা।”
আধার নিয়ে ব্লক প্রশাসনও কার্যত অন্ধকারে। জামালপুর ব্লকের বিডিও পার্থসারথি দে জানান, ঘটনাটি জানার পর তিনি এই বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়েছেন। কিন্তু এখনো পর্যন্ত কোন তথ্য পান নি।এমনকি আধারের টোল ফ্রি নম্বরেও( ১৯৪৭) ফোন করে জানার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু ওই নম্বরে যোগাযোগ করতে পারেন নি।তবে তার ধারণা এই আধার নিক্রিয়ের সঙ্গে সিএএর কোন যোগ নেই।
তবে বিজেপি নেতা মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্রের বক্তব্য, “আবুজহাটি গ্রাম ও আশেপাশের গ্রামে প্রায় ১০০ লোকের আধার বাতিলের যে নোটিস এসেছে এতে ভয়ের কিছু নেই। ২০১৪ সালে আধার কার্ড তৈরি হয়েছিল। সেই সময় সেভাবে তথ্য যাচাই হয়নি। ১০ বছর হয়ে গিয়েছে। কে আছে, কে নেই, কে বাইরে চলে গিয়েছে এই তথ্যটা আপডেট হওয়া খুব দরকার। তাই কেন্দ্র নোটিসও দিয়েছিল আধার আপডেটের জন্য। সেটা যারা করেনি তাদের কাছেই নোটিস আসছে। এটা করে নিলে এই নোটিস আসবে না। প্রতিটা অঞ্চলে কেন্দ্র সিএসসি সেন্টার করে দিয়েছে। সেখানে গিয়েই আপডেট করাতে পারে।”
জামালপুরের বিডিও পার্থসারথি দে জানান, ঘটনাটি জানার পর তিনি এই বিষয়ে খোঁজ খবর নেন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোন তথ্য তিনি পাননি। এমনকী আধারের টোল ফ্রি নম্বরেও (১৯৪৭) ফোন করে জানার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু ওই নম্বরে যোগাযোগ করতে পারেননি। তবে তিনি মনে করছেন, তথ্য সংক্রান্ত কোনও কারণে এমনটা হতে পারে। সিএএর সঙ্গে এর কোনও যোগই নেই।