কাটোয়া: শুক্রবার পুলিশের চোখের সামনেই আদালত (Katwa Court) চত্বর থেকে পালিয়েছিল আসামী। ‘ধর-ধর’ করে ততক্ষণে আওয়াজ উঠলেও, চোখের নিমেষে উবে যায় সে। যদিও, তার খোঁজে একটানা তল্লাশি চালিয়েছিল পুলিশ। কিন্তু টিকিও ছুঁতে পারেননি তাঁরা। তবে সবাইকে অবাক করে ঠিক তার পরের দিন অর্থাৎ শনিবার কাটোয়া আদালতে (Katwa Court) আত্মসমর্পণ করল সে।
জানা গিয়েছে, গতকাল এক আত্মীয়র বাড়িতে লুকিয়ে ছিল সে। এরপর উকিলের পরমর্শ মতো আজ কাটোয়া আদালতে গিয়ে আত্মসমর্পণ করে। এই বিষয়ে ওই আসামীর স্ত্রী জানান যে তাঁর স্বামী দোষীসাবস্থ হতেই জেল হবে তা বুঝে গিয়েছিলেন। কিন্তু তার জেলে হলে ছেলে ও পরিবারের কী হবে সেই চিন্তা করেই পালিয়ে যায়।
ধৃত ওই ব্যক্তি জানান, “আমি বাড়িতে পালিয়ে গিয়েছিলাম। পুলিশ ধরতে পারেনি। পরে আমি নিজেই এসেছি। প্রতিদিন উকিল ডেকে নিয়ে যায় আমায়। কালকে ডাকেনি। সেই কারণে আমি দৌড়ে চলে গিয়েছিলাম। এবার পিছন থেকে সকলে বলল ধর-ধর-ধর। ভয়ে পালিয়ে বাড়ি চলে গিয়েছিলাম। আসামীর স্ত্রী বলেন, “আসলে সংসারে আমরা আলাদা খাই। সেই কারণে ভয় পেয়ে গিয়েছিল। ভেবেছিল আমাদের সংসার চলবে কী করে। ও দোষ করেনি।”
উল্লেখ্য, গতকাল ভরা এজলাসে চলছিল শুনানি। দীর্ঘ সওয়াল-জবাবের পর অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করেছিলেন বিচারক। কিন্তু, ঠিক তারপরেই আদালত চত্বরে যা ঘটল কাণ্ড। বিচারকের মুখে ধর্ষণের রায় শোনার পরেই কোর্ট থেকে সকলের চোখকে ফাঁকি দিয়ে পালায় আসামি। দীর্ঘক্ষণ খোঁজাখুঁজি করেও হদিস মেলেনি তার। প্রসঙ্গত, ২০১০ সালের এপ্রিল মাসে কেতুগ্রাম থানা এলাকার বিশেষভাবে সক্ষম এক নাবালিকাকে ধর্ষণ করার অভিযোগে। কয়েকদিনের মধ্যে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে আদালতে পেশ করে।
একমাস জামিনে মুক্ত হলেও ধর্ষণের মামলার শুনানি শেষ হয় ২০২২ সালের নভেম্বর মাসে। শুক্রবার ছিল আদালতে রায় ঘোষণার দিন। দুপুরে কাটোয়া মহকুমা আদালতের অতিরিক্ত দায়রা বিচারক সুকুমার সূত্রধরের এজলাসে আইনজীবীকে সঙ্গে করে অভিযুক্ত হাজির হয়। বিচারক ওই ব্যক্তিকে ধর্ষণের মামলায় দোষী সাব্যস্ত করেন। এরপর তাঁকে লকআপে ঢোকানোর প্রস্তুতি শুরু হয়। অভিযোগ, ঠিক তখনই এজলাসের অন্যান্য কর্মীদের অন্যমনস্কতার সুযোগে এজলাস ছেড়ে চম্পট দেয় সে।