কাটোয়া: দৃশ্য ১: ঘড়ি দশটা পেরিয়েছে বেশ কিছুক্ষণ হল। সমষ্টি করণ আধিকারিকের অফিসে তখন ভিড় বাড়ছে বিভিন্ন টেবিলে। জায়গায় জায়গায় সরকারি সাহায্যের আশায় হাজির হওয়া সাধারণ মানুষ। কিন্তু হায়! টেবিল যে খালি…সরকারি বাবুরা তখনও আসেননি অফিসে।
দৃশ্য ২: এগারোটা ছুঁইছুঁই ঘড়িতেও ভরেনি অফিসের সব টেবিল। কেউ কেউ অবশ্য এসেছেন এই কিছুলক্ষণ হল। বেশ ভরা ভরা অফিস যখন দেখা দিল তখন ঘড়ির কাঁটা পাক্কা সাড়ে এগারোটা। এরপর শুরু হল ঢিমেতালে কাজ।
কাটোয়া ১ নম্বর ব্লক ডেভলপমেন্ট অফিসের একটাই নিত্য দিনের ছবি। যেখানে কর্মীদের আসার ঠিক নেই। ছোট থেকে বড়, একেক আধিকারিকের একেক রকম সময়। এমনকী সময়ে আসেন না খোদ বিডিও এবং জয়েন্ট বিডিওরাও। অফিস টাইমের চেয়েও এত কেন দেরি? প্রশ্ন করতেই কেউ মুখ লুকালেন তো কেউ আঁটলেন কুলুপ। অনেকের অজুহাত, ট্রেন লেট, কাজ ছিল, আজকেই একটু দেরি হল ইত্যাদি ইত্যাদি।
অনেকের দাবি, বেতন ঠিকঠাক দিলে অফিসেও ঠিকঠাক আসবেন বলে যুক্তি খাড়া করলেন। কেউ কেউ ‘আজকেই জয়েন করতে এসেছি’ বলে কোনওমতে এড়ালেন ক্যামেরা। বাবুদের এই খামখেয়ালিপনার মাঝে প্রতিনিয়ত ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। সামান্য সরকারি পরিষেবার আশায় ঘন্টার পর ঘন্টা তাঁদের দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে রোদের মধ্যে। সরকারি পরিষেবার জন্য আসা মালতি বাগচী বলেন, ‘পৌণে এগারটা বাজলো কোনওবাবুর দেখা নেই। যার যখন ইচ্ছা হয় তিনি তখন আসেন। এই গরমে আমাদেরকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকতে হয় তাঁদের আসার অপেক্ষায়। কিছু করার নেই আমরা নিরুপায়।’
হায়দার আলি শেখ নামে এক ব্যক্তি বলেন, ‘এগারোটা বাজে অথচ ঘর ফাঁকা। আমরা আশায় দাঁড়িয়ে আছি। কী বলবো? সবটাই মেনে নিতে হয়।’
এদিকে,কাটোয়া ১ নম্বর ব্লক অফিসের সরকারি কর্মী ও আধিকারিকদের খামখেয়ালি পোনা নিয়ে প্রশ্ন করা হয় কাটোয়ার মহকুমা শাসক অর্চনা পি ওয়াংখেড়েকে। তিনি বলেন, ‘আমি বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখব। প্রয়োজনে কথা বলব বিডিওর সঙ্গে। দপ্তর কেন নির্দিষ্ট সময়ের পরে চালু হচ্ছে তা খতিয়ে দেখা হবে।’