বর্ধমান: বাড়-বাড়ন্ত কমছে না করোনার। দেশ বা রাজ্যে প্রতিদিনই লাফিয়ে বেড়েছে করোনার গ্রাফ। করোনাকে দমাতে ফের কঠোর পদক্ষেপ করেছে রাজ্য সরকার। রবিবারই ঘোষণা হয়েছে আংশিক লকডাউন। একাধিক বিধি-নিষেধের পাশাপাশি বলা হয়েছে ৩ থেকে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত সন্ধে ৭টার পর চলবে না লোকাল ট্রেন। আর ট্রেনে থাকবেন ৫০ শতাংশ যাত্রী। কিন্তু সরকারি নির্দেশিকাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে কার্যত উল্টো ছবি ধরা পড়ল বর্ধমান স্টেশনে।
ট্রেনের চিত্র কী?
প্রচুর মানুষের গন্তব্যে পৌঁছতে লোকাল ট্রেন হল একমাত্র ভরসা। এবার আজ সকাল থেকেই বর্ধমান-হাওড়া কিংবা বর্ধমান-আসানসোল লাইনের লোকাল ট্রেনগুলিতে ছিল বাদুড়ঝোলার মতো ভিড়। আর সামাজিক দূরত্ব? তার কথা না বলাই ভালো। ট্রেন প্ল্যাটফর্মে আসা মাত্রই ঠেলাঠেলি করে উঠছেন যাত্রীরা। কারোর মাস্ক ঝুলছে নাকে কারোর আবার নেই! তাই পঞ্চাশ শতাংশ যাত্রী নিয়ে যে কার্যত লোকাল ট্রেন চলাচল করা সম্ভব নয় তা জানিয়ে দিলেন যাত্রীরা।
এক যাত্রী বললেন, “এটা অসম্ভব ব্যাপার। ট্রেন চললে ভিড় হবেই। পঞ্চাশ শতাংশ যাত্রী নিয়ে ট্রেন চলবে এটা একদম অযৌক্তিক। এইভাবে কখনোই হবে না।”
এখানেই শেষ নয়, পাশাপাশি সন্ধে সাতটার পর থেকে বন্ধ চলবে না লোকাল ট্রেন। যা চলবে তাও আবার স্টাফ স্পেশাল। ফলে ভিড় যে তখন আরও বাড়বে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। আর এক নিত্যযাত্রী বললেন, “এই সিদ্ধান্তে তো অসুবিধে হচ্ছেই। আমার শুধু নয়। প্রত্যেকের অসুবিধে হবে। কেউ যদি সাতটার মধ্যে ট্রেন ধরতে না পারে তাহলে তাকে হয় পরের দিন সাকলবেলা অথবা বাস ধরে যে কোনও ভাবে যেতে হবে। সেখানে করোনা বিধি থাকবে না? সন্ধের পর লোকাল ট্রেনের সংখ্যা বাড়ানো দরকার। কারণ তখন ভিড় বেড়ে যাবে।”
রুজিরুটির টানে অনেকেই বিভিন্ন জায়গা থেকে বর্ধমান শহরে আসেন। তাঁদের বেশিরভাগই যাতায়াত করেন লোকাল ট্রেনে। সন্ধ্যা সাত টার পর লোকাল ট্রেন না চললে তাদের বিস্তর সমস্যার মধ্যে পড়তে হবে বলে জানাচ্ছেন নিত্যযাত্রীরা।
এদিকে, সন্ধে ৭টার পর চলবে না লোকাল ট্রেন। সরকারি এই নির্দেশিকায় ছড়িয়েছে সাধারণের মধ্যে একাধিক বিভ্রান্তি। যাত্রীদের অধিকাংশের বক্তব্য রেলের তরফে স্পষ্ট করে বিষয়টি বলে দেওয়া হয়নি। লোকাল ট্রেনগুলির যাত্রা সন্ধে ৭টার মধ্যে শেষ হবে, এর অর্থটা কী? যাত্রীদের মনে ধোঁয়াশা, প্রান্তিক স্টেশনগুলির ক্ষেত্রে কী হবে নিয়ম? সেটাও তো স্পষ্ট নয় নির্দেশিকায়। যার কারণে সোশ্যাল মিডিয়াতেও এই নিয়ে তৈরি হয়েছে একাধিক ট্রোল, নেট দুনিয়ায় ঘোরাফেরা করছে একাধিক প্রশ্ন।