কালনা: রোজ বিকাল হলেই আকুলি বিকুলি করত বাচ্চাগুলো। মাঠে যাবে, খেলা করবে, ঝালমুড়ি খাবে, ফের সন্ধ্যায় ফিরবে। গ্রামের পরপর তিনটি বাড়ির বাচ্চা মেয়েগুলো রোজ বিকালে খেলতে যেত মাঠে। কিন্তু শেষ দু’দিন হল, তাদের মাঠে যেতে চাইত না। এমনকি ঘর থেকেও বের হত না। প্রথমটায় বিশেষ আমল দেননি পরিবারের সদস্যরা। কিন্তু বাড়ির খুদেদের আচরণে একটা অস্বাভাবিকত্ব লক্ষ্য করতে পারছিলেন বাবা-মা। আর তিন খুদের ক্ষেত্রেই সেটা ‘কমন’। তখনই চেপে ধরেন বাড়ির লোক। বেরিয়ে আসে আসল তথ্য। পাড়ার যে ‘দাদা’র মোবাইলে কার্টুন দেখত তারা, সেই ‘দাদা’রই বিরুদ্ধে ওঠে বিস্ফোরক অভিযোগ। কার্টুন দেখানোর জন্য ‘দাদা’ কোলে বসাত, তারপরই ‘নোংরামো’ করত। মেয়েদের কাছ থেকে জানতে পারেন পরিবারের সদস্যরা। একই সঙ্গে তিন শিশু কন্যার যৌন হেনস্থার অভিযোগ উঠল গ্রামের এক যুবকের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে পূর্বস্থলীতে।
জানা গিয়েছে, গ্রামের একটি খেলার মাঠে প্রতিদিনই ওই তিন বাড়ির মেয়ে খেলতে যেত। প্রত্যেকেরই বয়স আট বছরের মধ্যেই। পরিবারের বক্তব্য, রবিবার তারা শেষ খেলতে গিয়েছিল। বাড়ি ফেরার পর থেকে সেভাবে ঘরের বাইরে বের হচ্ছিল না। মাঠেও বিকালে যাচ্ছিল না। এরপরই চাপের মুখে বাবা-মায়ের কাছে সবটা খুলে বলে তারা।
অভিযোগ, গ্রামের বছর বাইশের এক যুবক ওই তিন শিশু কন্যাকে মোবাইলে কার্টুন দেখানোর নামে ডাকে। তারপর তাদের যৌন হেনস্থা করা হয় বলে অভিযোগ। ইতিমধ্যেই ওই যুবকের বিরুদ্ধে পূর্বস্থলী থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে পরিবারের তরফে। পূর্বস্থলী থানা অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে। তার কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
শিশুর মা বলেন, “আমি তো প্রথমে ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। বাকি দুটো বাচ্চার মায়ের সঙ্গেও কথা বলি। তবুও সাহস করে থানায় যাই। না হলে পরবর্তীতে ওই ছেলেটা আরও সাহস পেয়ে যাবে। ও ভাবতেই পারে, আমাদের কিছু করার নেই। মন্দিরে বসিয়ে কার্টুন দেখাচ্ছিল ও। সেখানেই ওসব করে। আমাদের মেয়েরা ভয়ে পালিয়ে আসে।”
এক গ্রামবাসী বলেন, “মন্দিরেই এসব। ভাবা যায়? কোথায় পরিস্থিতি দাঁড়িয়ে! এখন তো ঘর থেকে মেয়েদেরকে বার করতেই ভয় লাগছে।” অভিযুক্তের কড়া শাস্তির দাবি জানিয়েছেন গ্রামবাসীরা।