বর্ধমান: প্রশাসনের নিয়ম কোভিডে মৃতদের দেহ সৎকার করা হবে রাত দশটার পর। সেক্ষেত্রে কোনও রকম সৎকার্যের নিয়মাবলি মানা হবে না, কেবল দাহ করা হবে দেহ। কিন্তু প্রশাসনের সেই নিয়মকে কার্যত বুড়ো আঙুল দেখিয়েই কোভিডে মতৃদের দেহ সৎকার করা নিয়েও গজিয়ে উঠল দালালচক্র। অতিমারি এই পরিস্থিতির মধ্যেও রমরমিয়ে চলছিল এই দালালদের ব্যবসা। TV9 বাংলার প্রতিনিধির ক্যামেরার ধরা পড়ল বর্ধমানের (Bardhaman) নির্মল ঝিল শশ্মানের সেই ছবি।
করোনা আতঙ্কে মানুষ এখন জুবুথুবু। প্রত্যেক দিন মানুষের মধ্যে বাড়ছে প্রিয় জনকে হারানোর ভয়। এই পরিস্থিতির মধ্যেও এক শ্রেণির মানুষ ব্যবসা শুরু করে দিল। বিষয়টা ঠিক কীরকম? বর্ধমান শহরের রেনেসাঁয় এক নার্সিংহোমে মিলল এরকমই দালালচক্রের হদিশ।
অভিযোগ বিস্ফোরক। কোভিডে যে সমস্ত মানুষের মৃত্যু হচ্ছে, তাঁদের পরিবারের লোকজনকে রীতিমতো ভুল বোঝাচ্ছেন এই দালালরা। তাঁদের কাছ থেকে চাওয়া হচ্ছে মোটা অঙ্কের টাকা। সেই টাকার বিনিময়েই কোনও স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই দাহ করা হচ্ছে কোভিড রোগীর দেহ। সেখানে সমস্ত ধর্মীয় বিধি মেনে দেহ দাহ করা হচ্ছে।
সোমবার রাতে এরকমই করতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়ে গেলেন দালালচক্রের পাণ্ডা। স্থানীয়দের সন্দেহ ছিল দীর্ঘদিন। সোমবার রাতে তাঁরাই ওই দালালকে হাতেনাতে ধরে রীতিমতো উত্তম মধ্যম দেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। অভিযোগ, কোনও রকমের কোভিড বিধির তোয়াক্কা না করেই প্রশাসনের নাকের ডগাতেই নার্সিংহোমের কয়েকজন কর্মী ও অ্যাম্বুলেন্স চালক মিলে এই ভাবে দিনের পর দিন দেহ দাহ করছেন।
আরও পড়ুন: নজিরবিহীন! সরকারি হাসপাতালের মধ্যেই শক্তিশালী বোমা, নদিয়ায় এই কাণ্ডের তদন্তে দিশেহারা পুলিশও
এ বিষয়ে অভিযুক্তের বক্তব্য, “আমি জানতামই না কোভিড পেসেন্ট। রোগীর বাড়ির লোকও আমাকে কিছু জানাননি। এখানে এসেই জানতে পারলাম।”
এই ঘটনার পর বর্ধমান পৌরসভার এক্সিকিউটিভ অফিসার অমিত গুহর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “ঘটনার কথা শুনেছি। আমরা পৌরসভার পক্ষ থেকে জেলা পুলিশকে একটি আবেদন জানিয়েছি। সন্ধ্যা ৬ টা থেকে সকাল ৬ টা পর্যন্ত শ্মশানে পুলিশ ক্যাম্প বসানো হয়। এছাড়াও এ ধরনের ঘটনা যাতে না ঘটে সেজন্য সিএমওএইচ-কে পৌরসভা থেকে চিঠি করা হয়েছে। কোনও নার্সিংহোমে কোভিডে মৃত্যু হলে, সেই তথ্য পৌরসভাকে জানানো বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।”