SIR in Bengal: গায়ে আগুন দিয়ে আত্মঘাতী মহিলা, SIR আতঙ্ক নিয়ে চাপানউতোর
Woman commits suicide: মৃতার বড়দি আস্তুরা খাতুন ও বৌদি সাবিনা খাতুনের অভিযোগ, এসআইআর আতঙ্কেই গায়ে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছেন মাস্তুরা। আস্তুরা বলেন, "আমরা ফর্ম জমা দিলেও আমার বোন প্রথম থেকে আতঙ্কে ছিল। ওকে বললাম, ফর্ম ফিলাপ না করলে তো ভোটার তালিকায় নাম থাকবে না। কোনও সরকারি সুযোগ সুবিধা পাবি না। আতঙ্কে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয়।"

ভাতার: ফের এসআইআর আতঙ্কে আত্মহত্যার অভিযোগ। এবার ঘটনাস্থল পূর্ব বর্ধমানের ভাতার। এসআইআর আতঙ্কে এক মহিলা গায়ে আগুন লাগিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন বলে পরিবারের দাবি। মৃতার নাম মস্তুরা খাতুন(৪০)। ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক চাপানউতোর বেড়েছে। মহিলার আত্মহত্যার জন্য নির্বাচন কমিশনকে নিশানা করেছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। অন্যদিকে, বিজেপির অভিযোগ, এসআইআর নিয়ে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে তৃণমূলই।
মস্তুরার বাড়ি ভাতারের ভূমশোড় গ্রামে। পরিবারের বক্তব্য, এসআইআর ফর্ম পূরণ করা নিয়ে দ্বিধাগ্রস্ত ছিলেন মস্তুরা। ফর্ম পূরণ করতে চাইছিলেন না। আতঙ্কে ছিলেন।গতকাল মস্তুরার বড়দি আস্তুরা খাতুন বুঝিয়ে তাঁকে ফর্ম ফিলাপ করান। অভিযোগ, এরপরই এসআইআর আতঙ্কে গভীর রাতে গায়ে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন মস্তুরা। তড়িঘড়ি তাঁকে উদ্ধার করে ভাতার স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
মৃতার বড়দি আস্তুরা খাতুন ও বৌদি সাবিনা খাতুনের অভিযোগ, এসআইআর আতঙ্কেই গায়ে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছেন মাস্তুরা। আস্তুরা বলেন, “আমরা ফর্ম জমা দিলেও আমার বোন প্রথম থেকে আতঙ্কে ছিল। ওকে বললাম, ফর্ম ফিলাপ না করলে তো ভোটার তালিকায় নাম থাকবে না। কোনও সরকারি সুযোগ সুবিধা পাবি না। আতঙ্কে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয়।” অন্যদিকে মৃতার বৌদি সাবিরা বলেন, “রাতে হঠাৎ উঠে দেখি প্রায় সবটা পুড়ে গিয়েছে। হাসপাতালে নিয়ে যেতে যেতেই সব শেষ।” মৃতার নাম ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় ছিল। স্বাভাবিকভাবেই তাঁর নাম উঠত তালিকায়। তারপরও আতঙ্কে থাকার কারণ নিয়ে তাঁর খুড়তুতো ভাই সাবিরুল ইসলাম জানান, কেবলমাত্র লক্ষ্মীর ভান্ডার এবং রেশনের সাহায্যে তাঁর দিন চলত। তাঁর অভিযোগ, এসআইআর নিয়ে ধারাবাহিক প্রচারে ভীত হয়ে পড়েছিলেন মাস্তুরা। ভয় পেতেন। তাই এই ঘটনা।
ঘটনার খবর পেয়ে পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যান ভাতারের বিধায়ক মানগোবিন্দ অধিকারী। রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস বলেন, “কমিশনের কাছে জানতে চাই আর কত প্রাণ যাবে? ২ বছরের কাজটা তড়িঘড়ি করে ২ মাসের মধ্যে শেষ করতে গিয়ে প্রায় ৪৫ জন মানুষ আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন। আর কত রক্ত গেলে বিজেপি এবং নির্বাচন কমিশন এটা বন্ধ করবে?” তিনি সাধারণ মানুষকে আতঙ্কিত না হতে আবেদন করেছেন।
অন্যদিকে এই ঘটনার জন্য তৃণমূলকে নিশানা করে বিজেপি বিধায়ক লক্ষ্মণ ঘোড়ুই বলেন, “তৃণমূল প্রথম থেকেই এই প্রক্রিয়ার বিরোধিতা করেছে। তারা আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। বিএলও-দের ভয় দেখাচ্ছে। মৃতের পরিবারগুলোকেও ভয় দেখাচ্ছে। এসআইআর ঠিকভাবে হলে ওদের সর্বনাশ হবে, এই ভয়েই তৃণমূল এসব প্রচার করছে।” এদিকে পুলিশ একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য বর্ধমান মেডিক্যালে পাঠিয়েছে।
