তমলুক: পূর্ব মেদিনীপুর জেলার সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের ডাকে জেলাশাসক অফিসের সভাঘরে রবিবার একটি সভার আয়োজন করা হয়েছিল। সেই সভায় উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী মানস রঞ্জন ভুঁইয়া, কারামন্ত্রী অখিল গিরি, মন্ত্রী হুমায়ুন কবীর, ক্ষুদ্র কুটির শিল্প নিগমের চেয়ারম্যান সৌমেন মহাপাত্র, বিধায়ক তরুণ মাইতি-সহ বিশিষ্ট জনেরা। এই সভা থেকেই ডিএ আন্দোলনকারীদের হুঁশিয়ারি দিলেন অখিল গিরি। তাঁর এই মন্তব্য ঘিরে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। অখিলের মতে, ডিএ-র দাবিতে যাঁরা আন্দোলন করছেন, ধর্নায় বসেছেন তাঁরা ডিউটি করছেন না। তাই তাঁদের বেতন না দেওয়ার পক্ষে সওয়াল করেছেন রাজ্যের কারামন্ত্রী। অখিলের পাশাপাশি মানস ভুঁইয়া যাঁরা অন্তর্ঘাত করছেন তাঁদের দিকে নজর রাখার কথা বলেছেন। মন্ত্রীর বক্তব্যের পাল্টা ডিএ আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, তাঁদের নায্য প্রাপ্য ডিএ দিলেই ধর্নায় বসার প্রয়োজন হবে না।
রবিবারে ওই সভা থেকে অখিল গিরি বলেছেন, “যাঁরা ধর্নায় বসেছেন তাঁরা তো নিজেদের ডিউটি করছে না। আমি বলব তাঁরা যেন বেতন না পান। মুখ্যমন্ত্রী নিজে দুঃখ প্রকাশ করেছেন যে ভূমি দফতর এবং ফার্মেসির দফতরের কর্মচারীদের কাজে তিনি অখুশি। আমি নিজেই তিন-চারটি বিএলআরও-র নাম দিয়ে এসেছি সরানো জন্য। স্বর্গে গেলেও তো ঢেঁকি, ধান ভাঙে। পুলিশের এক আধিকারিক গিয়েছিল। সেখানেও কুড়ি হাজার টাকা নিয়ে নিয়েছে। টাকা না দিলে কেউ কাজ করছে না। সরকারি হাসপাতালে আমি রাতে দেখলাম একটা ওষুধ লাগবে সেই ওষুধ হাসপাতালে রয়েছে তবু দিল না। বাইরে থেকে কিনে আনতে বলছে। সরকার তাহলে যে ওষুধটা দিল। তাহলে সেটার কী হল? এতে সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে।” ডিএ প্রতিবাদকারীদের ব্যাপারে অখিল গিরি বলেছেন, “অফিস করবে না, দিনের পর দিন কামাই করবে। দিয়ে বেতন নিয়ে নেবে? বেতন কেটে নেওয়া হোক। অফিস করো, কাজ করো, দিয়ে বেতন নাও। দিনের পর দিন অফিস কামাই করে ধর্নায় বসছে, আন্দোলন করবে। দায়িত্ব পালন না করে, অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে গেলে হবে না।”
অখিল গিরির বেতন কেটে নেওয়া মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ করেছেন ডিএ আন্দোলনকারীরা। এ নিয়ে ডিএ আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, তারা ন্যায্য দাবিতেই ১০৯ দিন ধরে আন্দোলনে সামিল হয়েছেন। সরকার কেন তাদের রাজ্য দাবি পূরণ করছেন না, সে প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা। এ ব্যাপারে ডিএ আন্দোলনকারী বলেছেন, “মঞ্চের অখিল গিরির এই মন্তব্য ঠিক নয়। উনি সরকারকে বলুক সরকার আমাদের বকেয়া মহার্ঘ ভাতা দিয়ে দিতে। তাহলে আমরা আর আন্দোলনে বসে থাকব না। আর বেতন কাটার কোন প্রশ্নই নেই।” তিনি আরও বলেছেন, “আন্দোলনকারীরা নিজেদের ব্যক্তিগত ছুটি নিয়ে ধর্না দিচ্ছেন। সঞ্চিত ছুটি থেকে ছুটি নেওয়ার অধিকার অখিল গিরি কেড়ে নিতে পারেন না। আমরা মন্ত্রীকে চ্যালেঞ্জ করছি পারলে আপনি বেতন কেটে দেখান।”