পূর্ব মেদিনীপুর: অবিভক্ত মেদিনীপুরের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) প্রথম দিকের সৈনিক হিসেবে বরাবরই তিনি আস্থার পাত্র। তবে এতদিন অধিকারীদের দাপটে পূর্ব মেদিনীপুরে দলীয় রাজনীতিতে যেন কিছুটা কোণঠাসা ছিলেন অখিল গিরি (Akhil Giri)। অধিকারীরা দল ছাড়তেই তাঁকে সামনের সারিতে নিয়ে আনেন মমতা। তারপর থেকেই লাগাতার অধিকারী পরিবারকে নিশানা করেছেন রাজ্যের মত্স্যমন্ত্রী। রবিবার, দলীয় সভায় যোগ দিয়ে ফের রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে (Suvendu Adhikari) নিশানা করলেন অখিল।
তৃণমূলের দলীয় সভা থেকে অখিল বলেন, “রাজ্যের বিরোধী দলনেতা এত বড় বড় কথা বলেন। তিনি তো মুখ্যমন্ত্রীকে ‘মূর্খ’ বলে বেড়ান। তা ওঁ তো বিশাল পণ্ডিত! ওঁকে বরং সকলে শংসাপত্র দেখাতে বলুন। এত বড় বড় কথা বলেন এদিকে সব ডিগ্রি তো ভুয়ো। দম থাকলে কাগজ দেখান। আমি খোলা চ্যালেঞ্জ করছি। আমি দায়িত্ব নিয়ে বলছি, রাজ্যের বিরোধী দলেনতা বিহার থেকে জাল শংসাপত্র আনিয়েছেন।” যদিও, মত্স্যমন্ত্রীর এ হেন মন্তব্যের বিরুদ্ধে কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি নন্দীগ্রামের বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী। এমনকী, বিজেপির সাংগঠনিক জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে যোগাযোগ করেও তাঁদের পাওয়া যায়নি।
প্রসঙ্গত, শুভেন্দু অধিকারী দল ছাড়ার পরও পূর্ব মেদিনীপুরে তৃণমূলের যে ক্ষয় রোধ করা গিয়েছে তার কৃতিত্বের অনেকটাই প্রাপ্য অখিলবাবুর। তার ‘পুরস্কার’ও মিলেছে। ‘মা মাটি মানুষ’-এর সরকারে মন্ত্রিসভার স্বাধীন দায়িত্ব প্রাপ্ত মৎস দফতরের দায়িত্ব পেয়েছেন রামনগরের বিধায়ক। মন্ত্রিত্ব পাওয়ার পরেব পরেই অধিকারীদের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছিলেন প্রথমবার মন্ত্রী হওয়া অখিল গিরি।
মন্ত্রিত্ব পাওয়ার খবরে তিনি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, শুধু বিজেপি নয়, এবারের লড়াই ছিল অধিকারী পরিবারের বিরুদ্ধেও। আর মন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার পর Tv9 বাংলাকে অখিল জানান, “আমার উপর মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী যে আস্থা রেখেছেন তার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। এই জেলায় শুরু থেকেই রাজনৈতিকভাবে অধিকারীদের বিরুদ্ধে একটা ঠান্ডা লড়াই চালিয়েছি। যা আগামীদিনেও চলবে।” তবে এই লড়াইয়ের পথে উন্নয়ন থামবে না বলেও জানান তিনি।
শুভেন্দু প্রসঙ্গ উঠতেই অখিল গিরির সপাট প্রতিক্রিয়া, “বিধানসভায় বিরোধী দলের নেতা করা হয়েছেন শুনেছি। নীতি-আদর্শের লড়াই হবে বিধানসভায়।” কিন্তু জেলার রাজনৈতিক কার্যকলাপের সঙ্গে অন্য কোনও কাজ মিশবে না বলে দাবি তাঁর। অখিল গিরির কথায়, “মৎস্য দফতরের অনেক কাজ। সেই দফতরের কাজ মিটিয়ে জেলার রাজনৈতিক বিষয়ে নজর দেব।” তারপর থেকে নরমে-গরমে নানা সময়েই অধিকারী পরিবারের বিরুদ্ধে সুর ঘনিয়েছেন মত্স্যমন্ত্রী। এ বার, সরাসরি শুভেন্দু অধিকারীর শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলায় নতুন করে শাসক-বিরোধী সংঘাতের ছায়া স্পষ্ট হচ্ছে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
আরও পড়ুন: Dengue: আপনার সর্বনাশ, মশার পৌষমাস! রাজ্যে ক্রমেই থাবা বসাচ্ছে ডেঙ্গু
আরও পড়ুন: Udayan Guha on BSF: ‘সীমান্ত থেকে গ্রামের ভেতরে ঢুকে খবর নিচ্ছে…২০২৪-এর জন্য কি তৈরি হচ্ছে BSF?’