Suvendu Adhikari: ‘মুখ্যমন্ত্রী হতে বিহার থেকে পিকে-কে তুলে এনেছেন’, কটাক্ষ শুভেন্দুর
Mamata Banerjee: উপনির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর মুখ্যমন্ত্রী ঘনিষ্ঠমহলে জানিয়েছিলেন মহালয়ার পরেই তিনি শপথ নিতে চান। কিন্তু শপথবাক্য পাঠ করাবেন কে তা নিয়ে শুরু হয় জটিলতা।
পূর্ব মেদিনীপুর: সদ্যই ভবানীপুর উপনির্বাচনে স্বরেকর্ড ভেঙে জয়যুক্ত হয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ইতিমধ্যেই তাঁর বিধায়ক হিসেবে শপথ গ্রহণের কথা। কিন্তু, সেই শপথ গ্রহণে ইতিমধ্যেই ‘জটিলতা’ দেখা যায়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ফের মুখ্যমন্ত্রীকে (Mamata Banerjee) সরাসরি নিশানা করলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)।
বুধবার, মহালয়ার সকালে একটি অনুষ্ঠানে এসে শুভেন্দু বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার জন্য তো বিহার থেকে পিকে-কে তুলে এনেছেন দিদিমণি। নিজের কেন্দ্রে ভোটার বানিয়েছেন। বহিরাগতদের এনে রিগিং করে ভোটে জিতেছেন। তাঁর তো এখন শপথ গ্রহণে সমস্যা হবেই।”
উপনির্বাচনে খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কেন্দ্র ভবানীপুরেই ভোটার তালিকায় নাম ওঠে ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরের। প্রশান্ত কিশোরের (Prashant Kishore) ভোটকেন্দ্র হতে পারে ২২২ নম্বর সেন্ট হেলেন স্কুল এমনটাই শোনা গিয়েছিল। ভোটার লিস্টে যে এপিক নম্বর থাকে, তা দিয়ে নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে সার্চ করলেই সেই ভোটারের বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়। এ ক্ষেত্রে ভোটার লিস্টে থাকা প্রশান্ত কিশোরের এপিক নম্বর দিয়ে যখন নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে সার্চ করা হয়েছে, তখন প্রশান্ত কিশোর নাম এবং তাঁর পোলিং বুথ পাওয়া যায়।
প্রসঙ্গত, উপনির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর মুখ্যমন্ত্রী ঘনিষ্ঠমহলে জানিয়েছিলেন মহালয়ার পরেই তিনি শপথ নিতে চান। কিন্তু শপথবাক্য পাঠ করাবেন কে তা নিয়ে শুরু হয় জটিলতা। ভারতীয় সংবিধান অনুযায়ী, রাজ্যের মন্ত্রী, বিধায়কদের শপথবাক্য পাঠ করাবার দায়িত্ব রাজ্যপালের। তবে তিনি চাইলে অন্য কাউকে দিয়েও শপথবাক্য পাঠ করাতে পারেন। এই ‘অন্য কেউটি’ হতে পারেন বিধানসভার স্পিকার। বিধানসভার ক্যাবিনেট সদস্যদের তাই শপথবাক্য পাঠ করান রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। বাকি বিধায়কদের ক্ষেত্রে বিধানসভায় পোর্টেম স্পিকার সুব্রত মুখোপাধ্যায় এবং স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়কে শপথ বাক্য পড়ান ধনখড়।
এরপর বিধানসভার স্পিকারের হাতেই বাকি বিধায়কদের শপথবাক্য পাঠ করানোর অধিকার দিয়েছিলেন ধনখড়। কিন্তু, কিছুদিন আগে, রাজভবন থেকে বিধানসভার সচিবালয়ে একটি চিঠি আসে। সেই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, অধ্যক্ষকে শপথবাক্য পাঠ করানোর যে অধিকার রাজ্যপাল দিয়েছিলেন তা প্রত্যাহার করে নেওয়া হচ্ছে। অর্থাত্, নির্বাচিতদের শপথবাক্য পাঠ করাবেন রাজ্যপালই। ফলে, পরিস্থিতি জটিল হচ্ছে দেখে পাল্টা রাজভবনে চিঠি পাঠানো হয় বিধানসভা থেকে। কিন্তু সেই চিঠির উত্তর আসেনি।
প্রশাসনিক সূত্রে শোনা যাচ্ছিল, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চাইছিলেন না কোনও ভাবেই এই শপথ নিয়ে জটিলতা তৈরি হোক। কোথাও কোনও অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি হোক। তিনি চাইছেন গোটা প্রক্রিয়াটি শান্তিপূর্ণ ভাবে সমাপ্ত হোক। রাজ্যপাল সোমবারই গ্যাজেট নোটিসের অপেক্ষার কথা বলেছেন। এরপর থেকেই রাজভবন থেকে কোনও প্রতিক্রিয়া আসে কি না, তার দিকেই তাকিয়ে থাকতে হয়েছে প্রশাসনকে।
অবশেষে যদিও স্বস্তি মিলেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। শপথগ্রহণ পর্ব ঘিরে যে জটিলতা তৈরি হয়েছিল, তাতে এবার নিজেই ইতি টেনেছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় (Jagdeep Dhankhar)। ৭ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) দুপুর ২ টোর সময় মুখ্যমন্ত্রী এবং বাকি দুই বিধায়ককে শপথবাক্য পাঠ করাবেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান আয়োজিত হবে বিধানসভা ভবনেই।
Governor WB Shri Jagdeep Dhankhar would administer oath/affirmation to the elected members to the WBLA, viz., MAMATA BANERJEE , JAKIR HOSSIAN and AMIRUL ISLAM at the premises of the West Bengal Legislative Assembly on 7 October, 2021 at 11.45 hours. pic.twitter.com/Zp30Jt02k9
— Governor West Bengal Jagdeep Dhankhar (@jdhankhar1) October 5, 2021
Raj Bhawan response on the administration of Oath/Affirmation to the Members elected to the WBLA in bye-election from 159-Bhabanipur A/C, and the adjourned poll in 56-Samserganj and 58-Jangipur A/Cs held on 30 September, 2021. Once Gazetted Governor would take call. pic.twitter.com/db2tS4pdbY
— Governor West Bengal Jagdeep Dhankhar (@jdhankhar1) October 4, 2021
প্রথমে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, জাকির হুসেন এবং আমিরুল ইসলামের শপথ গ্রহণের সময় ঠিক করা হয়েছিল বৃহস্পতিবার বেলা পৌনে বারোটার সময়। তবে মঙ্গলবার বিকেলে রাজ্যপাল একটি টুইটে জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার বেলা পৌনে বারোটার বদলে দুপুর দুটোর সময় তিনি শপথবাক্য পাঠ করাবেন মুখ্যমন্ত্রী এবং বাকি দুই বিধায়ককে।
এ বিষয়ে বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এটা রাজ্যপালই জানেন কী করবেন। তবে আমার মনে হয়, আমাদের যে সংসদীয় রীতিনীতি বা সাংবিধানিক রীতিনীতি তা উনি নিশ্চয়ই ভাঙবেন না। তা মাথায় রেখে উনি সিদ্ধান্ত নেবেন।”
বিধানসভার পরিষদীয় দফতর থেকে এর আগে রাজভবনে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছিল, ৭ অক্টোবর বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার মধ্যে শপথবাক্য পাঠ করানোর জন্য। তাদের দাবি, শপথবাক্য রাজ্যপাল বিধানসভায় এসে পাঠ করান। তবে এবার রাজ্যপাল টুইট থেকে স্পষ্ট, তিনিও আর কোনও জটিলতা বাড়াতে চাইছেন না। বিধানসভায় গিয়েই তিনি মমতা ও বাকি দুই বিধায়কের শপথবাক্য পাঠ করাবেন। তবে ১২ টার মধ্যে তা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন রাজ্যপাল। বৃহস্পতিবার দুপুর ২ টোয় তিনি বিধানসভায় শপথবাক্য পাঠ করাবেন।
আরও পড়ুন: Anubrata Mondal: ‘রবীন্দ্রনাথও আত্মহত্যা করতেন’, বিশ্বভারতীর পড়ুয়াদের ‘লাগামহীন নেশায়’ তোপ কেষ্টর!
আরও পড়ুন: Kaliachak: ফের ‘কুরুক্ষেত্র’ কালিয়াচক, আচমকা বোমা ফেটে জখম ২ শিশু!