Bomb Blast in Khejuri: ‘বাঁচব কি না জানি না’, মুড়িমুড়কির মতো রাতভর ফাটল বোমা, চলল গুলি, তপ্ত খেজুরি!
TMC BJP Clash: মঙ্গলবারই খেজুরিতে বিজেপি ও তৃণমূলের দুটি সভা হওয়ার কথা ছিল। বিজেপির সভাস্থল থেকে অনতিদূরেই ছিল তৃণমূলে সভা। এদিকে, বিজেপির সভা শেষ হওয়ার পরেই উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়।
পূর্ব মেদিনীপুর: ফের উত্তপ্ত খেজুরি। রাতভর চলল বাড়ি ভাঙচুর, বোমাবাজি, গুলিবর্ষণ। ঘটনায় তৃণমূল-বিজেপি একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন। এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে বিশাল পুলিশবাহিনী ও র্যাফ। বুধবার, হার্মাদ দিবস উপলক্ষ্যে তৃণমূল (TMC) ও বিজেপি (BJP) পৃথক পৃথক সভা করেন। এরপর রাত থেকেই ফের উত্তপ্ত হয়ে ওঠে খেজুরি।
জানা গিয়েছে, খেজুরি ২ নম্বর ব্লকের কটকা, দেবীচক, গোরাহাট ও জলপাই ও মুণ্ডমারির একাধিক গ্রামে ভাঙচুর করা হয় বাড়িঘর। রাতভর বোমাবাজি ও গুলিবর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ। বোমাবাজির ফলে ভেঙে যায় একের পর এক বাড়ি। আচমকা বোমাবাজির জেরে আতঙ্কিত এলাকাবাসী। ঘটনাস্থলে মোতায়েন করা হয় বিশাল পুলিশবাহিনী।
স্থানীয় এক গ্রামবাসীর কথায়, “সারারাত ধরে বোম পড়ছে। আওয়াজে ঘুমোতে পারিনি। কে বা কারা এসব করেছে জানি না। অনেক বাড়ি ভেঙে গিয়েছে। আমরা বাঁচব কি না জানি না।” যদিও, বোমাবাজির ঘটনায় একে অন্যের দিকেই আঙুল তুলেছে তৃণমূল-বিজেপি।
কাঁথি সাংগঠনিক জেলার বিজেপি সাধারণ সম্পাদক তাপস দলাই বলেন, “রাতের অন্ধকারে এলাকা দখল করতে তৃণমূলের কিছু হার্মাদ বাহিনী বিজেপি কর্মীর বাড়ি লক্ষ্য করে বোমাবাজি করে। ভাঙচুর করে একের পর এক বাড়ি। এলাকার মানুষদের লক্ষ করে গুলি চালায়। পুলিশকেও জানানোর পর কোনওরকম ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন।”
পাল্টা, এলাকার তৃণমূল নেতা তথা জেলা পরিষদের সদস্য পার্থপ্রতিম দাস বলেন, “কিছু বিজেপির হার্মাদ এলাকা দখল করতে বোমাবাজি করেছে। রাতভর বিজেপির দুষ্কৃতীরা তৃণমূল কর্মীদের বাড়ি লক্ষ্য করে বোমাবাজি করে। পুলিশকে বিষয়টি জানিয়েছি।”
যদিও খেজুরি থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত এক পুলিশ আধিকারিক বলেন ” পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এখনোও পর্যন্ত কোন লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি। গোটা এলাকায় পুলিশি টহল চলছে “।
মঙ্গলবারই খেজুরিতে বিজেপি ও তৃণমূলের দুটি সভা হওয়ার কথা ছিল। বিজেপির সভাস্থল থেকে অনতিদূরেই ছিল তৃণমূলে সভা। এদিকে, বিজেপির সভা শেষ হওয়ার পরেই উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়। বিজেপি বিধায়ক শান্তনু প্রামাণিক জানান, তাঁর ভাইয়ের খোঁজ পাওয়া যায়নি। এলাকার তৃণমূল নেতারা অপহরণ করেছে বলেই তাঁর অভিযোগ।
একসময় ‘হার্মাদ মুক্তি দিবসে’র সূচনা করেছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। তারপর থেকে তৃণমূল এই দিন পালন করে আসছে। সেই উপলক্ষ্যেই সভা হয় তৃণমূলের। এ দিকে, রাজ্যের আইন- শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে সরকারকে বার্তা দিতেই বিজেপির সভার আয়োজন করা হয়েছিল। সেই সভায় বক্তব্য রাখেন শুভেন্দু অধিকারী। অভিযোগ, সেই সভা শেষে এ দিন যখন বাড়ি ফিরছিলেন বিজেপি কর্মীরা, তখনই হামলা হয়। বেশ কয়েকটি গাড়ি ভেঙে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। এরপরই পুলিশ পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। তবে, বিক্ষোভ সামাল দিতে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছে পুলিশও।
ঘটনায় রাস্তায় বসে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন বিজেপি কর্মীরা। সামনের সারিতেই ছিলেন মহিলা কর্মীরা। তাঁদের দাবি, অন্তত তিনজনের কোনও খোঁজ নেই। সেই তিনজনকে ওই জায়গায় আনা হলেই অবরোধ তুলবেন তাঁরা। দোষীদের অবিলম্বে শাস্তির দাবিও জানান তাঁরা। রাত থেকে বাড়ি বাড়ি গিয়ে হামলা চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন কর্মীরা। তাঁদের কথায়, “পুলিশ তো হার্মাদ। তৃণমূলের সভায় যাতে কোনও অসুবিধা না হয়, তার জন্য পুলিশ অবরোধ তোলার চেষ্টা করছে”।
খেজুরির তৃণমূল নেতা তথা বিধানসভা নির্বাচনের তৃণমূল প্রার্থী পার্থ প্রতিম দাস বলেন, “এরা তো বরাবরই অভিযোগ করে।” তৃণমূল যাতে সভা না করতে পারে তার জন্যই বিজেপির এই বিক্ষোভ বলে দাবি করেছেন তিনি। অন্যদিকে, এলাকার বিজেপি নেতা তরুণ মাইতি জানান, পুলিশের অনুমোদন নিয়েই সভা করছিল বিজেপি। তিনি বলেন, ‘এটা কী ধরনের গণতন্ত্র? আমরা কি মিটিং করব না? ওনাদের অভিযোগ থাকতেই পারে, ওনারা থানায় জানান। এটা কী অবস্থা?’ খেজুরিতে এ দিন তৃণমূলের সভায় উপস্থিত ছিলেন একাধিক নেতা। তাই পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তৃণমূল নেতৃত্ব।
আরও পড়ুন: Dilip Ghosh: ‘রেডিমেড প্রার্থী নয়’, আদি সংগঠনে ‘আস্থা’ খুঁজছেন দিলীপ