নন্দীগ্রাম: রবিবার মধ্যরাতে ঘূর্ণিঝড়ের সতর্কতা। উপকূলবর্তী এলাকায় সতর্কতা আবহাওয়া দফতরের। শুক্রবার বিকালে থেকেই আকাশের মুখ ভার হলদিয়া, নন্দকুমার এলাকায়। ইয়াস, আমফান মতো ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষতির চেহারা দেখেছ এলাকাবাসী। সেই স্মৃতি কিছুটা ফিরে আসছে এলাকার মানুষের মনে। ট্রলার চালক থেকে ব্যবসায়ী সকলের মুখেই অতীতের কথা। তবে ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে তৎপর প্রশাসন। ভোটের মধ্যেই দুর্যোগ মোকাবিলায় হচ্ছে দফায় দফায় বৈঠক। কিন্তু, তাতে চিন্তা দূর হচ্ছে কী? ভোটের আবহে সাগরের এক ট্রলার চালকের বক্তব্য, যে পুনর্বাসন এর কথা বলা হয় তা ঠিক মত পাওয়ায় যায় না। সব মিলিয়ে ভোটের আবহে ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস মিলে যেন এক অজানা উৎকণ্ঠার পরিবেশ উপকূলের শহর হলদিয়া রিভার সাইড এলাকায়।
এদিকে আবার ভোটের দামামা ইতিমধ্যেই বেজে গিয়েছে। রাত পোহালেই ভোট কাঁথি, তমলুকে। ভোট এলেই পরিযায়ী শ্রমিক থেকে কর্মজীবী মানুষ, সকলকেই দেখা যায় নিজের বাড়ি বা এলাকায় ফিরতে, কারণ ভোট দিতে হবে যে। একই ছবি দেখা গেল নন্দীগ্রামেও। যে কোনও নির্বাচন সামনে এলেই বারংবার রাজনৈতিক সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে নন্দীগ্রাম। একাধিক পালা বদলের সাক্ষী থেকে এই নন্দীগ্রাম। এদিনের সম্ভাব্য দুর্যোগের পূর্বাভাস নিয়ে আলোচনা করতে করতেই নিজেদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে হলদিয়া ফেরিঘাট থেকে নন্দীগ্রামের উদ্দেশে রওনা হলেন বহু গ্রামের বাসিন্দারা। সারে সারে দাঁড়ানো বাইক, সকলের মুখেই এক কথা ভোট দিতে যাচ্ছি বাড়ি তথা নন্দীগ্রামে।
পশ্চিমের অষ্ট গ্রামে সূর্য তখন মাঝ নদীতে তার সোনালি পদচিহ্ন ফেলে অস্ত যাওযার উপক্রম করছে। শেষ বিকালের সেই সোনালি রোদ গায়ে মেখে বাড়ির পথ ধরেছে নন্দীগ্রামের মানুষ। একদিন আগে আবার এই নন্দীগ্রামেই ঝরেছে হানাহানির রক্ত। পুড়েছে বাড়ি। ঘর ছাড়া কত শত মানুষ। এই নন্দীগ্রামকে এবার ভোটের মাঝে শান্ত রাখতে তৎপর নির্বাচন কমিশন। কিন্তু, ওই শান্ত নদীর বুকে শেষ বিকালের ছবির মতো আঁকা সূর্যের প্রতিচ্ছবি দেখলে কে বলবে একদিন আগে এই নন্দীগ্রামই ফের হয়ে উঠেছিল রণক্ষেত্র। এদিকে এতসবের মাঝে আবার প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঠেকাতে প্রস্তুত উপকূল রক্ষী বাহিনীও। শুক্রবার রাত থেকেই হলদিয়ার হেডকোয়ার্টারে ঝড়ের গতিপথ এবং আনুষঙ্গিক কাজকর্ম খতিয়ে দেখছেন উপকূল রক্ষী বাহিনীর কর্তারা। চলছে একটানা নজরদারি।