Digha Hilsa: মার্চেও দিঘায় উঠছে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ, লুটেপুটে নিচ্ছেন খাদ্য রসিকরাও

TV9 Bangla Digital | Edited By: সায়নী জোয়ারদার

Mar 22, 2022 | 9:17 AM

Digha: এবার বর্ষাতেও ভালই ইলিশ উঠেছিল। তবে দাম ছিল চড়া। বসন্তের ইলিশ তুলনামূলক সস্তা মনে করছেন সৈকত শহরের রসনাপ্রিয় বাঙালি।

Digha Hilsa: মার্চেও দিঘায় উঠছে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ, লুটেপুটে নিচ্ছেন খাদ্য রসিকরাও
বাজারে ভর্তি ইলিশ মাছ। নিজস্ব চিত্র।

Follow Us

পূর্ব মেদিনীপুর: ইদানিং শোনা যায় বাংলা থেকে ঋতুরঙ্গ উধাও হয়ে গিয়েছে। কখন যে বর্ষাকাল আর কখন যে শীতকাল গুলিয়ে গিয়েছে সমস্ত হিসাব। গত ডিসেম্বর-জানুয়ারিতেও বৃষ্টি হয়েছে বাংলায়। মার্চের গরমেও ভোরের দিকে শিরশিরানি অনুভূত হচ্ছে। তাও সই! কিন্তু তা বলে বর্ষার রূপালি শস্য ভরা বসন্তেও সমুদ্রে ভেসে আসবে তা ভাবতেই পারছেন না দিঘার মৎস্য ব্যবসায়ীরা। গত কয়েকদিন ধরে দিঘার বাজারে বিকোচ্ছে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ। গন্ধে ম ম করছে বাজারগুলি। দামও নাগালের মধ্যেই।

এবার বর্ষাতেও ভালই ইলিশ উঠেছিল। তবে দাম ছিল চড়া। বসন্তের ইলিশ তুলনামূলক সস্তা মনে করছেন সৈকত শহরের রসনাপ্রিয় বাঙালি। এদিকে বর্ষা না হওয়া সত্ত্বেও ইলিশের দেখা পেয়ে বেজায় খুশি মৎস্যজীবীরাও। বড় সাইজের ইলিশ দেখে মন ভরছে ক্রেতাদেরও। সস্তায় বিকোচ্ছেও দেদার। স্থানীয় মৎস্যজীবীরা মানছেন, ‘বর্ষার মরসুমেও এত সস্তায় ইলিশ পাওয়া যায়নি।’

দিঘা মোহানার বিভিন্ন আড়তে চকচক করছে ইলিশের ঝাঁক। ১ কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ৮০০ টাকায়। দেড় কেজি থেকে ২ কেজি হলে তার দাম পড়ছে ১০০০-১৫০০ টাকা। এমনকী ৫০০-৭০০ গ্রামের ইলিশও পাওয়া যাচ্ছে। দাম পড়ছে ৫০০ টাকার ধারেকাছে।

দিঘা ফিশারম্যান অ্যান্ড ফিশ ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক শ্যামসুন্দর দাসের কথায়, “গত দু’ সপ্তাহ ধরে রোজ ২ থেকে ৩ কুইন্টাল করে ইলিশ উঠছে গভীর সমুদ্র থেকে। এর আগে কখনও মার্চ মাসে ইলিশ আমরা দেখিনি। বেশিরভাগ ইলিশের ওজনই ৫০০ থেকে ৭০০ গ্রাম। এক-দেড় কেজি ওজনের ইলিশও উঠছে। সবথেকে বড় কথা হল, স্বাদে হার মানাচ্ছে বর্ষার ইলিশকে।”

মানুষও উপচে পড়ে ইলিশ কিনছেন। এলাকার লোকজনও মনে করতে পারছেন না বসন্তকালে এমন ইলিশের সমারোহ। সস্তায় ইলিশ কিনতে ভিড় জমাচ্ছেন দিঘায় বেড়াতে আসা পর্যটকরাও। সোমবার দিঘা মোহানার আড়তে পেল্লাই সাইজের ইলিশ দেখে চমকে উঠেছিলেন বর্ধমান থেকে বেড়াতে আসা অলোক তপাদার ও তাঁর বন্ধুরা। চোখের সামনে এমন প্রলোভন দেখে নিজেদের সামাল দিতে পারেননি। দেড় কেজি ওজনের একটা ইলিশ হাতে ঝুলিয়ে ফিরেছেন।

দিঘা ফিশারম্যান অ্যান্ড ফিশ ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের কর্মকর্তা তথা স্থানীয় আড়তদার নবকুমার পয়ড়্যা জানান, “গত কয়েকদিনে ভাল পরিমাণে ইলিশ আমদানি হয়েছে। বর্ষাতেও এত কম দামে এমন চেহারার ইলিশ মেলেনি। স্বাদও দারুণ।” কিন্তু কেন এ সময় ইলিশ উপচে পড়ছে সমুদ্রের জলে? এমনকী সে মাছের স্বাদ নিয়েও কোনও অভিযোগ নেই খাদ্যরসিকদের। আবহাওয়া পরিবর্তন কি কোনওভাবে এই অসময়ে ইলিশ আমদানির কারণ? কাঁথির সহ মৎস্য অধিকর্তা (সামুদ্রিক) সুরজিৎ বাগও অবাক হয়ে গিয়েছেন এ কথায়। সুরজিৎবাবু বলেন, “আমার চাকরি জীবনের অভিজ্ঞতায় এই সময় কখনও ইলিশ উঠতে দেখিনি। এর আগে নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসেও ইলিশের দেখা মিলেছিল। জীবনে এই প্রথমবার দেখলাম অসময়ে বড় মাপের ইলিশ উঠতে।”

যদিও এই অসময়ে ইলিশ প্রাপ্তির ঘটনায় অস্বাভাবিক কিছুই দেখছেন না মহিষাদল রাজ কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক শুভময় দাস। তিনি বলেন, “ইলিশ গভীর সমুদ্রের মাছ। মা ইলিশ বছরে দু’বার ডিম দেয়। বর্ষাকাল ও শীতকালে। বর্ষায় যারা ডিম পাড়ে তারাই এখন গভীর সমুদ্র থেকে উপকূলের দিকে আসছে। সবকটাই পরিণত মাছ। এরা ঠান্ডা পছন্দ করে, তাই গভীর জলে থাকে। সহজে এদের ধরাও সম্ভব না। তবে সমুদ্রের তলদেশ ছেঁচে (বটম ট্রলিং) এই ইলিশ শিকার করা হচ্ছে। ইলিশ সংরক্ষণে যা নিষিদ্ধ হওয়া জরুরি।”

আরও পড়ুন: Konnagar Municipality: তৃণমূল কাউন্সিলরের জামিন করিয়েছেন বিজেপির আইনজীবী, দল ধরাল শোকজ নোটিস

Next Article