পূর্ব মেদিনীপুর: পূর্ণিমা কোটালের জেরে সৈকত শহরে প্রবল জলোচ্ছ্বাস। কার্যত জলমগ্ন দিঘার সৈকত, রাস্তাঘাট, বাজার এলাকায়। জেলা প্রশাসন সতর্ক রয়েছে। ইতিমধ্যে জেলাশাসক, পূর্ব মেদিনীপুর জেলা এবং ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট দফতরের পক্ষ থেকে পাওয়া খবরের ভিত্তিতে, বঙ্গপোসাগরে ঝোড়ো আবহাওয়া এবং বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টা প্রতি ৪৫ কিমি বা তার বেশি থাকার সম্ভাবনার জন্যে পশ্চিমবঙ্গ উপকূলের মৎস্যজীবীদের ১৫জুলাই পর্যন্ত সমুদ্রে পাড়ি দিতে নিষেধ করা হচ্ছে। সমস্ত মৎস্য খুটি, সংগঠনকে বিষয়টি সমস্ত সমুদ্রগামী যে কোনও প্রকার ফিশিং ভেসেলগুলিকে জানানো হয়েছে। যদিও বৃহস্পতিবারের মতন সমুদ্র সৈকতে এদিন পর্যকদের যেতে দেওয়া কড়াকড়ি করেছে দিঘার দুই থানাই। চলছে নজরদারির।
তবে এর মধ্যেই পর্যটকদের মধ্যে উদ্দীপনা দেখা দিল। তবে মাইকিংও শুরু করেছে পুলিশ। পর্যটকদের ইতিমধ্যে সমুদ্রে না নামার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, নিম্মচাপ ও কোটালের প্রভাব দক্ষিণ ২৪ পরগনার সুন্দরবন এলাকার কাকদ্বীপ মহকুমায় সবচেয়ে বেশি পড়েছে। গত দু’দিনে জলোচ্ছ্বাসের জেরে একাধিক নদী ও সমুদ্র বাঁধ ভেঙে জল ঢুকেছে লোকলয়ে। নিরাশ্রয় হয়ে পড়েছে শতাধিক মানুষ। নোনা জলে প্লাবিত হয়েছে চাষের জমি, পুকুর। নষ্ট হয়েছে বাড়িতে থাকা চাল, ডাল সহ মজুত খাদ্যসামগ্রী। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত সাগর ব্লক। এই ব্লকের বঙ্কিমনগর, বোটখালি ও মহিষামারিতে জল ঢুকেছে মাটির বাঁধ ভেঙে। জল ঢুকেছে বাঁধ উপচেও। বঙ্কিমনগরের পঞ্চাশটির বেশি কাঁচাবাড়ি জলমগ্ন হয়ে যায়। বাসিন্দাদের পাশের স্কুলে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থ গঙ্গাসাগরের কপিলমুনি মন্দিরের সমুদ্রতট।
গত দু’দিনের জলোচ্ছ্বাসে তটের বড় অংশ ভাঙনের জেরে সাগরে মিশে গিয়েছে। উপড়ে পড়েছে বিদ্যুতের খুঁটি, গাছ। জল ঢুকেছে কপিলমুনি মন্দিরের সামনে থাকা দোকানে। গতকাল মন্দিরের কাছাকাছি জল চলে আসে। জলোচ্ছ্বাসের জেরে ক্ষতি হয়েছে মৌসুনির বালিয়াড়া ও সল্টঘেরির কোটেজগুলি। অন্যদিকে সেচ দফতরের পক্ষ থেকে তড়িঘড়ি বেহাল বাঁধ মেরামতির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সাগরের বঙ্কিমনগরে স্থানীয় বাসিন্দারাও বাঁধ মেরামতিতে হাত লাগিয়েছে। তবে আজও সকাল থেকে জোয়ারের জেরে জলোচ্ছ্বাস দেখা দিয়েছে সুন্দরবনের উপকূলে। শুক্রবার সকাল থেকে জেলার আকাশ আংশিক মেঘলা। দফায় দফায় বৃষ্টিও চলছে।