দীঘা: হোটেল সম্প্রসারণের জন্য বস্তি দখলের চেষ্টা। তৃণমূলের নাম নিয়ে চলছে দাদাগিরি। হোটেলের জন্য জমি ছাড়তে যদি জায়গা না ছাড়া হয়, তাহলে বেঁচে থাকাই দায় হয়ে উঠবে। এমন হুঁশিয়ারিই দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ বস্তির বাসিন্দাদের। অভিযোগ, বস্তি দখলে ব্যর্থ হয়ে নানাভাবে বস্তিবাসীকে হেনস্থা করা হচ্ছে। ওল্ড দিঘার এক হোটেল মালিকের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ উঠেছে। সৈকত সরণি লাগোয়া পশ্চিম গদাধরপুর বস্তির কাছে এই ঘটনা ঘটছে বলে অভিযোগ। শনিবার দুপুরে এলাকায় উত্তেজনা ছড়ানোর অভিযোগে অভিযুক্ত হোটেল মালিক অরবিন্দ দে ও তাঁর ছেলে ড্যানিয়েল দে-কে আটক করে দীঘা থানার পুলিশ।
বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে, পানীয় জল সরবারহ বন্ধ করে বস্তিবাসীর জীবন অতিষ্ঠ করে তোলার অভিযোগ উঠেছে ওই হোটেল মালিকের বিরুদ্ধে। বস্তির একাধিক মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যে মামলাও করা হয়েছে বলে অভিযোগ। হোটেল মালিকের এমন অত্যাচারের হাত থেকে রেহাই পেতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপের দাবিতে শনিবার বিকেলে দীঘা থানার সামনে জমায়েত করেন বস্তিবাসী।
এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে রামনগর ১ ব্লকের বিডিও বিষ্ণুপদ রায় জানিয়েছেন, হোটেল মালিকের এই দাদাগিরি কোনওভাবেই বরদাস্ত করবে না প্রশাসন। বস্তির মানুষজনের সঙ্গে কথা বলে অভিযুক্ত হোটেল মালিকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন তিনি।
বস্তির অসহায় পরিবারগুলির পাশে থাকার আশ্বাস দেন রামনগর ১ ব্লক তৃণমূলের সভাপতি তথা পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি নিতাইচরণ সার। তিনি বলেন, ‘বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া, পানীয় জল সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ার ঘটনা সমর্থনযোগ্য নয়। খুবই জঘন্যতম অপরাধ। বস্তির মানুষ পুলিশে অভিযোগ জানিয়েছেন। আশা করি বস্তির অসহায় মানুষজন সুবিচার পাবেন।’ এ দিকে হোটেল সম্প্রসারণের জন্য উপকূল বিধি না মানারও অভিযোগ উঠেছে হোটেল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। সমুদ্র থেকে ২০০ মিটারের মধ্যে অবস্থানের জন্য বস্তি ও সংলগ্ন এলাকায় বহুতল নির্মাণ কিংবা হোটেল সম্প্রসারণের ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে প্রশাসনের।
জানা গিয়েছে, ৪০ টি পরিবারের ৩০০ মানুষের বসবাস পশ্চিম গদাধরপুর বস্তিতে। ৫০- ৬০ বছর কিংবা তারও বেশি সময় ধরে তাঁদের বসবাস সেখানে। সমুদ্রের একেবারে গায়েই অবস্থান বস্তির। তার ঠিক পিছনে রয়েছে অরবিন্দ দে-র হোটেল। কিন্তু সামনের বস্তির জন্য লোকসানে চলছে ব্যবসা। তাই হোটেল সম্প্রসারণের কাজ শুরু করেছেন তিনি।
স্থানীয় শেখ সিরাজুল, লক্ষ্মণ চরণ দাস, মালা দাস, হাসিনা বিবিরা বলেন, ‘পুরুষের পর পুরুষ আমরা এখানে বসবাস করছি। এতদিন কিছু ছিল না। মাস দেড়েক ধরে নিজেকে বস্তির মালিক বলে দাবি করছেন ওই হোটেল মালিক। আমাদের বস্তি ছেড়ে দিতে বলা হচ্ছে। আমরা প্রতিরোধ করছি বলেই আমাদের নানা ভাবে হেনস্থা করা হচ্ছে।’ বস্তির মালিকানার বৈধ কোনও কাগজপত্র দেখাতে চাননি অরবিন্দ দে। শুধুমাত্র জনৈক আইনজীবীর একটি আইনি নোটিসকে পুঁজি করে তিনি দাবি করেছেন, টাকা দিয়ে বস্তি কিনে নিয়েছেন তিনি। তিনিই বস্তির মালিক। হুমকি দিয়ে বলেছেন, যে প্রতিরোধ করবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন তিনি।
আরও পড়ুন: Dog Raped in Dhupguri: সরকারি বাংলোর পিছনে কুকুরকে ধর্ষণ, হাতেনাতে ধরা পড়তেই বললেন…