পূর্ব মেদিনীপুর: একটানা দু’বছর করোনার জের। যার ফলে লকডাউন। আর এই লকডাউনে বিগত দু’বছরে স্তব্ধ হয়েছে সব কিছু। মার খেয়েছে ব্যবসা। ক্ষতি হয়েছে পর্যটনের। আর এর সঙ্গে জড়িত অগনিত মানুষের কাজ চলে গিয়েছে। বর্তমানে করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। তবুও, যেন পর্যটন কেন্দ্রগুলি স্বাভাবিক হতে পারছে না। আর তার উদাহরণ পূর্ব মেদিনীপুর। জেলার মানুষের কাছে ভ্রমণ ও প্রয়োজনের অংশ হিসেবে পরিচিত যে ট্রেনগুলি করোনার সময় বন্ধ করা হয়েছিল তা এখনও চালু করা হয়নি।
সাগরকন্যা সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস। বাঙালির পরিচিত শব্দ দিপুদা (দিঘা,পুরী,দার্জিলিং) এর প্রথম দু’টি শব্দ যুক্ত ছিল এই ট্রেনটির সঙ্গে। প্রত্যেক শনিবার হলেই ট্রেনটি পুরী থেকে রওনা দিত দিঘায় উদ্দেশে। রবিবার দিঘায় পৌঁছে ফের রওনা দিত পুরী। আরও একটি ট্রেন ছিল যা বিশেষ ট্রেন হিসেবে পরিচিত ছিল পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মানুষের কাছে। কারণ ট্রেনটি হলদিয়া-চেন্নাই সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস। যেটির জন্য প্রত্যেক শনিবার জেলার প্রচুর মানুষ হলদিয়া,তমলুক বা খড়গপুর রেল স্টেশনে অপেক্ষা করতেন। কেউ বেড়াতে যেতেন, কেউ বা চিকিৎসার প্রয়োজনে চেন্নাই পাড়ি দিতেন। গত প্রায় দুই বছরেরও বেশি সময় পূর্ব মেদিনীপুর জেলাবাসী পাচ্ছেন না এই ট্রেনের সুবিধা।
এছাড়াও বন্ধ রয়েছে হাওড়া-দিঘা-হাওড়া কান্ডারী এক্সপ্রেস, দিঘা-হাওড়া-দিঘা এসি সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস, দিঘা-পাঁশকুড়া লোকাল, পাঁশকুড়া-দিঘা লোকাল এর মত গুরুত্বপূর্ণ ট্রেনগুলি। এই সবকটি ট্রেনই বন্ধ সেই করোনার মহামারীর সময়ের প্রথম লকডাউন থেকে।
রাজ্য সরকারের বিধিনিষেধ শিথিল এবং পরবর্তীতে উঠে যাওয়ার পরও এই ট্রেনগুলি বন্ধ থাকায় ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে পর্যটক থেকে শুরু করে জেলার মানুষজনকে। স্টেশনে বাড়ছে লম্বা লাইন। সেই সঙ্গে আগের মতো সেই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত সহ ভিনরাজ্যের পর্যটকদের সমাগম ও দেখছেন না হোটেল মালিকরা। কিছুটা হলেও ক্ষতি হচ্ছে পর্যটন শিল্পেরও। সমস্যায় পড়ছেন অটো, টোটো ব্যবসায়ীরাও।
এক যাত্রী বলেন, “খুবই অসুবিধায় পড়েছি। চাইব আরও ট্রেন বাড়াক। এক্সপ্রেস পেলে আরও আগে পৌঁছে যেতে পারতাম। এখন ছোট-ছোট বাচ্চা নিয়ে সমস্যায় পড়েছি। পরিস্থিতি যখন আগের থেকে ভালো হয়ে গিয়েছে চাইব আরও ট্রেন বাড়াক।” যদিও গোটা বিষয়টিতে কোনও রেল আধিকারিকের প্রতিক্রিয়া মেলেনি।