পূর্ব মেদিনীপুর: নির্বাচন মিটে গিয়েছে। কিন্তু তার রেশ কাটেনি। সময়ে সময়ে দীর্ঘ হয়েছে শাসক-বিরোধী তরজা। এ বার, শুভেন্দুকে (Suvendu Adhikari) বাদ দিয়ে নতুন কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নিল স্বাধীনতা সংগ্রামীদের স্মৃতিবিজড়িত তাম্রলিপ্ত জনকল্যাণ সমিতি। আচমকা কেন এই রদবদল?
তাম্প্রলিপ্ত সমিতি সূত্রে খবর, ২০১২ সাল থেকে নিজ ক্ষমতাবলে এই সমিতির সভাপতি হয়েছিলেন শুভেন্দু। তারপর সভাপতির চেয়ার ‘আঁকড়ে’ ছিলেন ২০২১ পর্যন্ত। গত ৬জুলাই শুভেন্দুর (Suvendu Adhikari) সভাপতি পদের মেয়াদ শেষ হয়েছে। শনিবার, জনকল্যাণ সমিতির সাধারণ সভায় নতুন সভাপতির নাম প্রস্তাব করেন সমিতির কোষাধ্যক্ষ সোমনাথ বেরা। তিনি সৌমেন কুমার মহাপাত্রর নাম প্রস্তাব করেন। সমর্থন করেন সহ-সম্পাদক দীপেন্দ্র নারায়ণ রায়। মাত্র সাতদিনের মধ্যেই নয়া কমিটি গঠন করা হবে বলে জানান সদ্য় সভাতি সৌমেন মহাপাত্র।
এদিন, সেচমন্ত্রী বলেন, “সাধারণ সভায় কীভাবে সার্বিক উন্নয়ন করা যায়, তার পরিকল্পনা করা হয়েছে। যেহেতু প্রাক্তন সভাপতিকে নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে এবং তাঁর মেয়াদ শেষ হয়েছে তাই নতুন করে কমিটি তৈরি করা হবে। শুভেন্দু পরে থাকবেন কি না সেটা তাঁর ব্যাপার। তিনি জাতীয়বাদী একটি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত। কিন্তু তাঁর বর্তমান কার্যকলাপ নানা প্রশ্ন তুলেছে। তাই, তিনি তাঁর বিশ্বাসের কথা যদি ব্যক্ত করেন তো ভাল, নয়ত শুভেন্দুবাবুকে সদস্যপদ ত্য়াগ করার জন্য অনুরোধ করা হবে।”
বস্তুত, তাম্রলিপ্ত জনকল্যাণ সমিতির জন্ম হয়েছিল গান্ধী আদর্শকে মাথায় রেখে। সুশীল ধাড়া, সতীশ সামন্ত, অজয় মুখোপাধ্য়ায়রা গান্ধীবাদকে আপন করে এই সমিতি তৈরি করেন। শুভেন্দুও বারবার বলেছেন তিনি সুশীল ধাড়া ও সতীশ সামন্তের জীবনী পড়ে উদ্বুদ্ধ। তাঁদের আদর্শ মেনেই তিনিও পাণিগ্রহণ করেননি। আজও ‘অকৃতদার’ তিনি। নির্বাচন আবহে, তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন শুভেন্দু। গেরুয়া শিবির আবার গান্ধীর হত্যাকারী নাথুরাম গডসের ‘পূজারি’। ফলে, শুভেন্দুর অবস্থান নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন জনকল্যাণ সমিতির সদস্যরা। অধিকাংশ সদস্যই আর শুভেন্দুকে সভাপতির পদে দেখতে নারাজ। ফলে, শুভেন্দুকে ছাড়াই একরকম রদবদল হচ্ছে কমিটির। যদিও এ বিষয়ে অধিকারী পুত্রের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
ঘটনায়, তমলুকের বিজেপি জেলা সভাপতি নবারুণ নায়েক বলেন, “গোটা রাজ্যে নিজেদের লোককে বসাতে চাইছে তৃণমূল। শুভেন্দুবাবুকে সাধারণ মানুষ ভালবাসেন। তাই তাঁকে পদ দেওয়া হয়েছিল। শুভেন্দুবাবুকে লোকের মন থেকে বের করা যাবে না। স্বাধীনতা সংগ্রামীদের জায়গায় রাজনীতি করছেন। এটাই তৃণমূলের ধর্ম।” আরও পড়ুন: শেষ দেখে ছাড়লেন মমতা, রবীন মান্না ‘হত্যাকাণ্ডে’ সিআইডির জালে ১ বিজেপি কর্মী