তমলুক: তিন তলা বাড়ি, কাচ লাগানো ব্যালকনি। ছোটখাটো প্রাসাদ বললেও ভুল হবে না। বাড়ির মালিক যিনি, সেই তৃণমূল নেতার নাম রয়েছে আবাস যোজনার তালিকায়! বাড়ি দেখে অবাক হয়ে গেলেন খোদ জেলাশাসকও। তৃণমূল নেতার পরিবারের দাবি, টালির চাল, পলিথিনে ঘেরা ঘরে থাকতেন তাঁরা। তাই আবাস যোজনাক জন্য আবেদন করেছিলেন। কিন্তু, কয়েক বছরে আর্থিক পরিস্থিতি বদলে গিয়েছে তাঁদের। তাই তৈরি হয়েছে এই বাড়ি।
বাড়িটির মালিকের নাম অভিজিৎ মণ্ডল। তমলুকের গণপতি নগরের পান ব্যবসায়ী তিনি। সম্প্রতি সুপার চেকিং হওয়ার সময় ওই আবাস যোজনার উপভোক্তার বাড়ি দেখে চমকে যান খোদ জেলাশাসক। তড়িঘড়ি তালিকা থেকে নাম সরানোর নির্দেশ দিয়েছেন তমলুকের বিডিও।
তমলুকের জেলাশাসক অফিস থেকে মাত্র ৫০০ মিটার দূরে উত্তর সোনামুই পঞ্চায়েতের গণপতি নগরে বাড়ি অভিজিৎ মণ্ডলের। ২০১৮ সালে সার্ভের ভিত্তিতে তাঁর নাম আবাস তালিকায় যুক্ত হয়। শুধু তালিকায় নাম ছিল তাই নয়, প্রায়োরিটি লিস্টে তাঁর নাম ছিল। সুপার চেকিং-এ গিয়ে জেলার দুই শীর্ষ অফিসারের চক্ষু চড়কগাছ।
অভিজিৎ মণ্ডলের স্ত্রী এবং পুত্রবধূ জানান, ২০১৮ সালে তাঁদের অবস্থা এখনকার মতো ছিল না। তাঁরা কুঁড়ে ঘরে বাস করতেন। তাই তাঁরা আবাস যোজনার বাড়ির জন্য আবেদন করেছিলেন। গত বছর এই বাড়ি নির্মাণ হয়েছে। ৬ বছরে অবস্থার উন্নতি হয়েছে তাঁদের, তাই তাঁরা পাকা বাড়ি বানাতে পেরেছেন। পুত্রবধূ বলেন, “সেই সময় ব্যবসা বন্ধ হতে বসেছিল। মুসুর ডাল খাওয়ার মতো ক্ষমতা ছিল না। পরে গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে কর্মীরা এলে জানানো হয়েছিল যে বাড়ির আর প্রয়োজন নেই। তারপরও নাম কাটা হয়নি।”
তৃণমূলের দাবি, শাসক দলেক ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য এই কাজ করা হয়েছে। তৃণমূলের রাজ্য যুব সহ সভাপতি পার্থ সারথি মাইতির দাবি, তৃণমূলকে দুর্নীতিগ্রস্ত প্রমাণ করার জন্য এমন নোংরা খেলায় নেমেছে বিজেপি। তবে বিজেপির দাবি, এই অভিযোগ মিথ্যা। বিজেপির জেলা সহ সভাপতি দেবব্রত পট্টনায়ক বলেন, “যে যত কাটমানি দেবে, তাঁর তালিকায় অগ্রাধিকার থাকবে। এতদিনে বাড়িটাও তৈরি হয়ে যেত।”