নন্দীগ্রাম: একটা সময়ে এই নন্দীগ্রাম থেকেই মুখ্যমন্ত্রী হয়ে ওঠার উত্তরণ শুরু করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গত বিধানসভা নির্বাচনেও এই এলাকায় ছিল নির্বাচনের এপিসেন্টার। ২০১৮’র পর ২০২২ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচন। এবার বিরোধীরা প্রার্থী দিতে পারলেন না। কংগ্রেস, সিপিএম, বিজেপি কিংবা অন্য দল প্রার্থীই দিতে পারেনি বলে সূত্রের খবর। জানা গিয়েছে, শুধুমাত্র তৃণমূলের তরফে জমা পড়েছে মনোনয়ন। নন্দীগ্রাম- ১ ও ময়না ব্লকের এমন ৪ গ্রামসভা আসনে বিনা লড়াইয়ে জয় হাসিলের অপেক্ষায় তৃণমূল প্রার্থীরা। উল্লেখ্য, ২০১৮ সালেও বিরোধীরা অভিযোগ করেছিলেন, তাঁরা প্রার্থী দিতে পারেননি বিভিন্ন জায়গায়। সে সময় শাসকদলে নন্দীগ্রামের দায়িত্বে ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী।
সূত্রের খবর, ময়না ব্লকের তিলখোজা গ্রাম-পঞ্চায়েতের ৩৯ নম্বর আসনে মনোনয়ন জমা করেছেন তৃণমূল প্রার্থী রেহানা বেগম। তাঁর ডানে কিংবা বামে আর কোনও প্রার্থী নেই। একই চিত্র নন্দীগ্রাম- ১ ব্লকের কালীচরণপুর ৯ নম্বর গ্রাম-পঞ্চায়েতের ২২৯, ২৩৪ ও ২২৮ নম্বর গ্রামসভা আসনে। তৃণমূলের তরফে তমলুক সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের সভাপতি তথা তমলুকের বিধায়ক সৌমেন মহাপাত্র জানিয়েছেন এ খবর।
উল্লেখ্য, এই ২২৯, ২৩৪ ও ২২৮ নম্বর হল নন্দীগ্রামের সেই এলাকাগুলি যেখান থেকে জমি আন্দোলনের সূচনা হয়েছিল। পরিসংখ্যান বলছে, হলদি নদীর পাড়ে কালীচরণপুর, ৭ ও ৯ নম্বর জালপাই, ভূতারমোড় ও গড়চক্রবেড়িয়া মূলত সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকা। এই এলাকার মধ্যেই পড়ে উক্ত তিনটি বুথ। এই এলাকায় বিজেপি প্রার্থী দেয়নি।
বৃহস্পতিবার মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিনেও ৪ আসনে বিরোধীদের তরফে কোনও মনোনয়ন জমা পড়েনি বলে দাবি করা হয়েছে তৃণমূলের তরফে। আগামী ১৭ জুন স্ক্রুটিনি। তাতে সব কিছু ঠিক থাকলে সরকারি ভাবে জয়ী ঘোষণা করা হবে তৃণমূলের ৪ প্রার্থীকে।
এ প্রসঙ্গে রাজ্য তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেছেন, “২০১৮ সালে বিজেপির অভিযোগ ছিল শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে তাঁদের মনোনয়ন দিতে দেওয়া হয়নি। তৃণমূল এখন শুভেন্দু মুক্ত। বিরোধীরা স্বাধীনভাবে নন্দীগ্রাম- সহ গোটা পূর্ব মেদিনীপুরে মনোনয়নে অংশ নিয়েছেন। কোথাও কোনও অশান্তি বা বাধা দেওয়ার অভিযোগ নেই। তাও বিরোধীরা প্রার্থী দিতে না পারলে ওঁদের সমস্যা। প্রার্থী তো আর তৃণমূল ঠিক করে দেবে না। ফলে যা হওয়ার হয়েছে।”
নন্দীগ্রাম- ১ ও ২ ব্লকের মোট ১৭ টি অঞ্চলের মধ্যে অন্তত ১৫ টি গ্রাম-পঞ্চায়েত তৃণমূল জয়ের লক্ষ্যে এগিয়ে গিয়েছে বলে দাবি করেন কুণাল। মনোনয়নের শেষ দিনেই বিজয়োল্লাসে মাতেন নন্দীগ্রামের তৃণমূল কর্মী সমর্থকরা। নন্দীগ্রাম এক নম্বর ব্লকের কালীচরণ পুর অঞ্চলের বেশ কয়েকজন প্রার্থী ও কর্মী সমর্থকরা সবুজ আবির খেলেন।
যদিও নন্দীগ্রামের বিজেপি নেতা অভিজিৎ মাইতি বলেন, “কিছু কিছু এলাকায় ভয়ের পরিবেশ তৈরি করছে ওঁরা। মানুষ গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করতে পারলে ওঁরা ক্ষমতাচ্যুত হবেই।”