পূর্ব মেদিনীপুর: সোমবার কাঁথি থানায় তলব করা হয়েছে সৌমেন্দু অধিকারীকে। এদিন ৬ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে জিজ্ঞাসাবাদ পর্ব চলে। এরইমধ্যে সৌমেন্দুর আইনজীবীর অভিযোগ, তাঁর মক্কেলকে দীর্ঘ সময় ধরে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। অথচ অনাহারে রাখা হয়েছে। আইনজীবী অনির্বাণ চক্রবর্তীর কথায়, বাড়ি থেকে এক কাপ চা, বিস্কুট খেয়ে বেরিয়ে আসেন সৌমেন্দু অধিকারী। এরপর আর কিছুই খাননি তিনি। যদিও এই অভিযোগ নিয়ে কথা বলতে নারাজ তদন্তকারীরা। এদিনও প্রায় সাত ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় সৌমেন্দুকে। ফের শুক্রবার তলব করা হয়েছে।
শুক্রবারই কাঁথি পুরসভার পথবাতি দুর্নীতি মামলায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় শুভেন্দু অধিকারীর ভাই সৌমেন্দু অধিকারীকে। তিনি কাঁথি পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান ছিলেন। প্রায় ১০ ঘণ্টা কাঁথি পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের মুখে পড়েন তিনি। এরপর ফের সোমবার তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এদিন ফাইল নিখোঁজ সংক্রান্ত একটি অভিযোগের ভিত্তিতে তলব করা হয় তাঁকে। প্রায় সাত ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ চলে। বিকেল ৫টায় কাঁথি থানা থেকে বেরিয়ে আসেন তিনি।
এরইমধ্যে বিস্ফোরক অভিযোগ করেন সৌমেন্দু অধিকারীর আইনজীবী অনির্বাণ চক্রবর্তী। তিনি বলেন, “আমি আমার মক্কেলের (প্রাক্তন চেয়ারম্যান সৌমেন্দু অধিকারী) সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পাইনি। কাঁথি থানার তদন্তকারী অফিসারের সঙ্গে দেখা করেছি। খাবারের বিষয়ে খোঁজখবর নিতে দেখলাম আমার মক্কেল অনাহারে রয়েছেন। কারণ কাঁথি থানার পুলিশের তরফে হোটেল থেকে খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। সেই খাবারে আপত্তি জানান সৌমেন্দু অধিকারীর নিরাপওার দায়িত্বে থাকা কেন্দ্রীয় জওয়ানরা। সৌমেন্দু অধিকারীর বাড়ি থেকে খাবার নিয়ে আসা হয়। সেখানে পাল্টা আপত্তি জানান কাঁথি থানার তদন্তকারী আধিকারিকরা। ফলে তাঁকে এখনও চা আর বিস্কুট খেয়েই থাকতে হয়েছে। ১০টায় ঢুকেছেন। দিনের পর দিন ওনাকে পুলিশ ডাকছে, উনি থানায় আসছেন তদন্তের স্বার্থে। কিন্তু দিনের পর দিন অনাহারে থেকে যাচ্ছেন। এর আগের দিনও খাননি। আজও একই কারণে খেতে পারলেন না।”
এ প্রসঙ্গে সৌমেন্দু অধিকারী থানা থেকে বেরিয়ে এসে বলেন, “না না অনাহার আর কী? বাড়ি থেকে চা বিস্কুট খেয়ে এসেছি। বাইরের খাবার খাই না। আর নিয়ম অনুযায়ী এখানে বাড়ির খাবার অ্যালাও নয়। কী করা যাবে আর! এ নিয়ে আমি কোনও অভিযোগ করছি না।” এদিন হাতে বই নিয়ে থানায় ঢোকেন সৌমেন্দু। কারণ হিসাবে তাঁর আইনজীবী বলেন, আগের দিন জিজ্ঞাসাবাদ চলাকালীন ওনাকে অনেকক্ষণ বসে থাকতে হয়েছে। একটা ঘরে একাই বসেছিলেন। তাই সময় কাটানোর জন্য এদিন বই নিয়ে আসেন।
সৌমেন্দুর আইনজীবীর বক্তব্য, সেই নিয়ে বই ঢোকার অনুমতি দেয়নি পুলিশ। আইনজীবী অনির্বাণ চক্রবর্তী বলেন, “আমার মক্কেল তদন্তে সবরকম সহযোগিতা করছেন। আদালতের নির্দেশ মেনে যখন ডাকা হচ্ছে, আসছেন। কিন্তু দিনের পর দিন এভাবে বসিয়ে রাখা হচ্ছে। এটা তো সম্পূর্ণভাবে হেনস্তা করা।” এ প্রসঙ্গে সৌমেন্দু অধিকারী বলেন, “এখানে বই পড়াও মানা, খবরের কাগজ পড়াও মানা। এ সমস্ত বিধি নিষেধ আছে নাকি। কোনও দাগী আসামীও তো বই, খবরের কাগজ পড়ার সুযোগ পায়। কেন এটা করলেন জানি না। দেখা যাক। আদালতকে জানাব।”