পুরুলিয়া: তপন কান্দু খুনে সিবিআই-এর জেরার মুখোমুখি হতে পারেন ঝালদা থানার আইসি সঞ্জীব ঘোষ। গত ১৫ তারিখেই দু’বার করে তলব করা হয় আইসিকে। সেদিন সরকারি গাড়িতেই এসেছিলেন তিনি। তবে পরিচয় গোপন করতে গাড়ির কালো কাচ তুলে দেন। পুলিশের স্টিকারও সরিয়ে দেন। কালো সেলুটেপ দিয়ে ‘পুলিশ’ স্টিকার ঢেকে রাখা হয়েছিল। দেড়টা পর্যন্ত চলে জিজ্ঞাসাবাদ। তারপর তাঁকে ফের বিকাল পাঁচটা নাগাদ সিবিআই-এর অস্থায়ী ক্যাম্পে ঢুকতে দেখা যায়। প্রায় সাড়ে ন’টা পর্যন্ত চলে জিজ্ঞাসাবাদ। একই দিনে দু’বার তলব নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।
ঝালদার আইসি-র ভূমিকা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ ছিল কলকাতা হাইকোর্টেরও। কলকাতা হাইকোর্ট প্রশ্ন তুলেছিল, যেখানে আইসি-র ভূমিকা নিয়ে এত প্রশ্ন উঠছিল, সেখানে রাজ্য পুলিশ কেন আইসিকে হেফাজতে নেয়নি? তাঁর যে মোবাইল ফোন থেকে হুমকি ফোন গিয়েছিল, সেটি কেন বাজেয়াপ্ত করা হয়নি? তদন্তভার হাতে নেওয়ার তিন দিনের মধ্যে আইসি-কে তলব করল সিবিআই। সূত্রের খবর, আইসির বয়ান রেকর্ড করা হবে, ভিডিওগ্রাফি করা হবে। প্রশাসনিক পদে থেকে এক জন ব্যক্তি কীভাবে একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে দল বদলের জন্য চাপ দিতে পারেন, সেটাই খতিয়ে দেখতে চাইছেন সিবিআই আধিকারিকরা।
তপন কান্দুর স্ত্রী পূর্ণিমা কান্দু প্রথম থেকেই এই ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রকাশ করে আসছিলেন। পুলিশের তরফ থেকেও তাঁদের হুমকি দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ করছিলেন তিনি। আইসি-র বিরুদ্ধেই নির্দিষ্ট করে অভিযোগ ছিল তাঁর। পুরভোটে তপন কান্দু জিতলেও, আইসি তাঁকে বারবার তৃণমূলে যোগ দেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছিলেন বলে অভিযোগ। এক্ষেত্রে উল্লেখ্য, কলকাতা হাইকোর্টেও এই বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তোলে। তাই সিবিআই তদন্ত নেওয়ার পরই প্রথমে এই আইসি-কেই জিজ্ঞাসাবাদ করতে চেয়েছিল। তপন কান্দুর খুনের দিন অর্থাৎ ১৩ মার্চ থেকে ৮ এপ্রিল পর্যন্ত ঝালদা থানার জিডি খাতা খতিয়ে দেখতে চান তদন্তকারীরা। কে কে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন, ক’টা এফআইআর, ক’টা জেনারেল ডায়েরি দায়ের হয়েছিল, সবই খতিয়ে দেখবে সিবিআই।