পুরুলিয়া: রাজ্যে সম্প্রতি শতক ছুঁয়েছে পেট্রোপণ্যের দাম। করোনা কালে যখন সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে তখন কী করে সাহায্যের হাত না বাড়িয়ে কী করে জ্বালানির দাম বাড়িয়ে অসহনীয় আচরণ করছে সরকার তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। মাত্রাতিরিক্ত পেট্রোপণ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে বাস টেনে নিয়ে অভিনব প্রতিবাদে পথে নামল তৃণমূল (TMC)।
রাজ্য় সড়কের উপর দিয়ে চলছে বাস। কিন্তু অন্য সব বাসের মতো এই বাস যাত্রীবাহী নয়। এমনকী পেট্রল-ডিজেলেও চলছে না এই বাস। বরং, এই বাস টেনে নিয়ে চলছেন মানুষ! দড়ি দিয়ে বাস বেঁধে হেঁটে হেঁটে নিয়ে যাচ্ছেন তৃণমূলের কর্মী সমর্থকেরা! শনিবার, এমন অভিনব প্রতিবাদের সাক্ষী থাকল পুরুলিয়া শহর। ঘোড়ায় টানা গাড়ি এমনকী গরুর গাড়িও দেখেছেন অনেকে। সম্প্রতি, পেট্রোপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে শহর হোক বা গ্রামের একাধিক স্থানে গরুর গাড়ি নিয়ে প্রতিবাদ করতে দেখা গিয়েছে ঘাসফুল সমর্থকদের। খোদ, তৃণমূল (TMC) বিধায়ক মদন মিত্র কামারহাটির রাস্তায় গরুর গাড়ি চালিয়ে নিয়ে গিয়েছেন। তৃণমূলের প্রতীকী প্রতিবাদ পন্থায় গরুর গাড়ি এখন ‘হিটলিস্ট’। সেখানে ‘মানুষের টানা বাস’ বোধহয় নজিরবিহীন। এদিন বাসের সামনে ব্যানার, পোস্টার নিয়েও মিছিল করতে দেখা যায় তৃণমূল সমর্থকদের।
পুরুলিয়ার জেলা সভাধিপতি সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে অনুরোধ তিনি তার ‘আচ্ছে দিন’ ফেরত নিয়ে নিন। আমাদের পুরনো দিনগুলিই ভাল ছিল। এখন যা অবস্থা তাতে বেঁচে থাকাই মুশকিল হয়ে পড়েছে। তেলের দাম যেভাবে বেড়েছে তাতে আর কদিন পর এভাবেই মানুষকে চলতে হবে। কারণ, বাস-গাড়িতে চড়ার ক্ষমতা সাধারণ মানুষের থাকবে না। এমনকী খেতে পাবে কি না তাও সন্দেহ আছে।” এদিন পুরুলিয়া ছাড়াও রঘুনাথপুর, মানবাজার এবং ঝালদাতেও তৃণমূলের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ মিছিল করা হয়।
উল্লেখ্য, মোদী সরকার বরাবরই আন্তর্জাতিক বাজারে অশোধিত তেলের চড়া দামকেই মূল্যবৃদ্ধির কারণ হিসেবে তুলে ধরেছে। এমনকী, তেলের দাম নিয়ে ইতিমধ্যেই বঙ্গে একপ্রস্থ শাসক-বিরোধী তরজার ‘টাগ অব ওয়ার’ চলছে। নির্বাচন আবহে, ফেব্রুয়ারি নাগাদ পেট্রোপণ্যে একটাকা সেস কমিয়েছিল রাজ্য। কিন্তু, পেট্রল সংস্থাগুলি তেলের দাম বাড়ানোয় বিশেষ সুবিধা পাননি সাধারণ মানুষ। এ বার, তেলের দাম শতক ছুঁতেই ফের প্রবল হয়ে উঠছে শাসক-বিরোধী তরজা। শনিবার, বিরোধী বাম শিবিরের নেতা সূর্যকান্ত মিশ্র রাজ্য সরকারের উদ্দেশ্যে জানান, তেলের দাম বাড়লেও রাজ্য সরকার নিজেদের কর মকুব করতে পারে। আরও পড়ুন: বিজেপির ফাঁদে পা নয়, স্বাধীন রাজ্য চায় কামতাপুর প্রোগ্রেসিভ পার্টি