ভাঙড়: বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক। জেরে গৃহবধূকে শ্বাসরোধ করে খুনের অভিযোগ উঠল স্বামীর বিরুদ্ধে। ঘটনাকে কেন্দ্র করে কার্যত রণক্ষেত্রের চেহারা নিল কাশীপুরের পোলেরহাট এলাকা। পুলিশের সঙ্গে মৃতের পরিবারের সদস্যদের ধস্তাধস্তি। পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। মৃতদেহ আটকে রেখে চলে বিক্ষোভ। পুলিশ দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানোর চেষ্টা করলে, তা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন পরিবারের সদস্যরা। ঘটনার আহত হয়েছেন পাঁচ পুলিশ কর্মী। মৃত গৃহবধূর নাম মরিয়ম বিবি (৩৫)।
বছর ১৫ আগে শাকশহর গ্রামের মরিয়মকে বিয়ে করেছিলেন পোলেরহাটের বাসিন্দা আরশেদ আলি মোল্লা। দুই মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে তাঁদের। পরিবারের সদস্যরা জানাচ্ছেন, সম্প্রতি আরশেদ আলি মোল্লার অন্য এক মহিলার বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সেই ঘটনা ইদানীং জানতে পেরে গিয়েছিলেন মরিয়ম। তা নিয়েই অশান্তি শুরু হয় পরিবারে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, ইদানীং রোজই অশান্তি লেগে থাকত পরিবারে। প্রায় প্রতিদিনই তাঁদের বাড়ি থেকে চিৎকার-চেঁচামেচি শুনতে পেতেন প্রতিবেশীরা। মরিয়ম নিজেও প্রতিবেশীদের সেকথা জানিয়েছিলেন। মাঝেমধ্যে এক-আধবার ঝামেলা মেটানোর চেষ্টা করতেন প্রতিবেশীরাও। কিন্তু আরশেদ তাতে আরও বিরক্ত হতেন বলে দাবি প্রতিবেশীদের। একান্ত পারিবারিক বিবাদ ভেবে তেমনিভাবে শুক্রবার রাতের ঝামেলাকেও বিশেষ আমল দেননি প্রতিবেশীরা।
শনিবার সকালে মা ঘুম থেকে উঠছে না দেখে, তাঁকে প্রথমে ডাকতে যান ছেলে-মেয়ে। তারপর খবর যায় প্রতিবেশীদের কাছে। মরিয়মের সাড়া না পেয়ে বিপদ আঁচ করতে পারেন প্রতিবেশীরা। পরে চিকিৎসকও মৃত্যু নিশ্চিত করেন। এদিকে ঘরে দেখা যায় না আরশেদকে। আরশেদ ফেরার হওয়ায় সন্দেহ আরও বাড়ে স্থানীয়দের।
এই ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে আরশেদ আলির প্রেমিকাকে স্থানীয় বাসিন্দারা প্রথমে ধরে ফেলেন। পরে তাঁকেই পুলিশের হাতে তুলে দেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় কাশীপুর থানার পুলিশ। পুলিশকে ঘিরেই বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন স্থানীয় বাসিন্দারা। দেহটি আসলে পুলিশ জিরানগাছা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিল। কিন্তু পুলিশের গাড়ি আটকে দেহ তাঁদের হাতেই তুলে দেওয়ার দাবি জানান স্থানীয় বাসিন্দারা।
পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পুলিশের সঙ্গে মৃতের পরিবারের সদস্যদের হাতাহাতি শুরু হয়। ঘটনায় পাঁচ পুলিশ কর্মী আহত হন বলেও খবর। এক জনের আঘাত গুরুতর। আহত হন নিহতের পরিবারের এক সদস্যও। প্রত্যেকেই জিরানগাছার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আরশেদ আলি মোল্লার খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে কাশীপুর থানার পুলিশ। মৃতের ছেলে বলেন, “আমার বাবার সঙ্গে অন্য মহিলার সম্পর্ক রয়েছে। তাতেই খুন হতে হয়েছে আমার মাকে।”
আরও পড়ুন: ‘দিলীপ ঘোষকে দেখলে লোক এমনিই ভিড় করে, আমি পিছানোর মানুষ নই’, পুলিশের সঙ্গে তুমুল বচসা
আরও পড়ুন: জগদ্দল- দত্তপুকুর খুনে অভিযুক্তরা এখনও অধরা, খোঁজ দিতে পারলেই মোটা টাকার পুরস্কার