মগরাহাট : ভোট গণনার দিন আক্রান্ত হয়েছিলেন। তারপর থেকেই শারীরিক অসুস্থতা। আজ সকালে হাসপাতালে প্রাণ হারালেন বিজেপির মগরাহাট পশ্চিম কেন্দ্রের প্রার্থী মানস সাহা। বিজেপি নেতার মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ফের একবার রাজ্যের বিরুদ্ধে ভোট পরবর্তী হিংসায় উস্কানি দেওয়ার অভিযোগে সরব অর্জুন সিংরা।
এদিকে মানস সাহার মৃত্যুর খবর পেয়ে ঠাকুরপুকুরের ওই হাসপাতালে আসেন বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং। মানস সাহার পরিবারের লোকজনের সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ কথা বলেন। কএবারের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির টিকিটে মগরাহাট পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্রের প্রার্থী হয়েছিলেন মানস সাহা। তিনি বিজেপির মথুরাপুর সাংগঠনিক জেলার সহ সভাপতি। চলতি বছরের ২ মে ডায়মন্ড হারবার মহাবিদ্যালয়ের ভোট গননা কেন্দ্রে থেকে ফেরার পথে দুষ্কৃতীদের হাতে আক্রান্ত হয়েছিলেন মানস সাহা সহ বেশ কয়েকজন বিজেপির কর্মী ও সমর্থক। অভিযোগ, দুষ্কৃতীরা প্রত্যেকেই তৃণমূল আশ্রিত।
সেই দিন থেকেই তিনি অসুস্থ ছিলেন মানস সাহা। বুধবার সকালের দিকে শারীরিক অসুস্থতা বাড়তে শুরু করায় পরিবারের লোকেরা তাঁকে ঠাকুরপুকুরের এক বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান । আজ দুপুরে হাসপাতালেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
মানস সাহার বিপরীতে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী ছিলেন প্রাক্তন সংখ্যালঘু উন্নয়ন দফতরের প্রতিমন্ত্রী গিয়াসউদ্দিন মোল্লা। আজ ঠাকুরপুকুরের বেসরকারি হাসপাতালে বেলা দশটা কুড়ি নাগাদ মৃত্যু হয় মগরাহাট পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী মানস সাহার। ঠিন পরিস্থিতিতে তাঁদের পাশে থাকার আশ্বাস দেন। পাশাপাশি সেখানে উপস্থিত বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে কথাও বলেন সাংসদ অর্জুন সিং। তিনি জানান, মানস সাহার পরিবারের লোকেরা যদি থানায় এফআইআর দায়ের করেন, তাহলে এই মামলা তিনি ভোট পরবর্তী হিংসার অভিযোগের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেওয়ার দাবি জানাবেন।
উল্লেখ্য,জাতীয় মানবাধিকার কমিশন রাজ্যের ভোট পরবর্তী হিংসা পরিস্থিতি নিয়ে যে রিপোর্ট তৈরি করেছে, তাতে স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে, অভিযুক্তদের মাত্র তিন শতাংশকেই গ্রেফতার করেছে রাজ্য পুলিশ। অথচ রাজ্যের দাবি, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের এই রিপোর্ট একেবারেই বিভ্রান্তিকর। ভোট পরবর্তী হিংসার মামলায় অভিযুক্তদের ৫৮ শতাংশকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে সুপ্রিম কোর্টে জমা করা হলফনামায় জানিয়েছে রাজ্য।
ভোট পরবর্তী হিংসার মামলায় এখনও পর্যন্ত ১৪০০-র থেকেও বেশি মামলা রুজু হয়েছে বলে দাবি। এছাড়া আরও বলা হয়েছে, মোট অভিযুক্ত রয়েছে ৮ হাজার ১৫২। এদের মধ্যে গ্রেফতার, আত্মসমর্পণ কিংবা আদালতে জামিন পেয়েছে এমন সংখ্যা ৫ হাজার ১৫৮। পাশাপাশি ২ হাজার ৯৮৩ জনকে নোটিস পাঠিয়েছে রাজ্য।
রাজ্যের বক্তব্য, মানবাধিকার কমিশনের এই ভুলে ভরা রিপোর্টের উপর ভিত্তি করেই কলকাতা হাইকোর্ট সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। ফলে ভোট পরবর্তী হিংসার মামলায় সিবিআই তদন্তের আদৌ কোনও প্রয়োজনীয়তা আছে কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলে রাজ্য। কিন্তু মগরাহাট পশ্চিমের বিজেপি প্রার্থীর মৃত্যু আবারও রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসার অভিযোগের দিকেই ইঙ্গিত দিচ্ছে।