দক্ষিণ ২৪ পরগনা: বাড়ির উঠোনের সামনেই খেলনা পিস্তল হাতে খেলছিল ৩ বছরের বাচ্চাটা। পাশের ঘরে কাজ করছিলেন মা। বাবা কাজে গিয়েছিলেন। আচমকাই একটা গোঙানির শব্দ শুনতে পান মা। বুঝতে পারছিলেন গলার স্বর বাচ্চারই। কিন্তু সে শব্দ বড়ই অদ্ভূত। কান্না নয় সেটি। কাছে যেতেও বোঝেননি। পরে বাচ্চাটি নাকে হাত দিতেই চক্ষু চড়কগাছ মায়ের। বাচ্চার নাকের ভিতর আটকে রয়েছে আস্ত একটা গুলি। খেলনা পিস্তলের যে গুলি এপাশ-ওপাশ ট্রিগার চেপে ছুড়ছিল বাচ্চাটা, সেটাও কোনওভাবে তার নাকে ঢুকে গিয়েছে। এদিকে নিঃশ্বাস নিতে সমস্যা হচ্ছে বাচ্চার। ধীরে ধীরে নেতিয়ে পড়ছে সে। বারুইপুরের বেতবেড়িয়ায় সেই বাচ্চার প্রাণ বাঁচাল ক্য়ানিং মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসকরা। টান টান উত্তেজনার মধ্যেই চিকিৎসকের তৎপরতায় ৩ বয়সের শিশুর নাকের ছিদ্র থেকে বার করে আনা হল গুলি। রবিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে ক্যানিং থানার আমড়াবেড়িয়া গ্রামে।
বারুইপুরের বেতবেড়িয়ার বাসিন্দা হোসেন লস্কর পেশায় দিনমজুর। তিনি ক্যানিংয়ের মাতলার আমড়াবেড়িয়া দাসপাড়ার মঞ্জিলাকে বিয়ে করেছিলেন। দম্পতির ৩ বছরের এক পুত্র সন্তান রয়েছে। চারদিন আগে ক্যানিংয়ের মামার বাড়িতে বেরাতে গিয়েছিল সে। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার রাতে প্লাস্টিকের রিভলবার নিয়ে খেলছিল বাচ্চাটা। একে-তাকে টার্গেট করে প্লাস্টিকের গুলিও ছুড়ছিল।
আচমকা একটি গুলি তার নাকের ছিদ্রের মধ্যে ঢুকে গিয়ে আটকে যায়। অদ্ভূত শব্দ শুনে। বিপদ বুঝতে পেরেই মা ছেলেকে বুকে চেপেই তড়িঘড়ি নিয়ে যান ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে। পরিবারের লোকজন রীতিমতো দিশেহারা হয়ে পড়েন। শিশুটির শ্বাস নিতেও সমস্য়া হচ্ছিল। ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে নাক-কান-গলা বিশেষঞ্জ চিকিৎসক অভিষেক বিশ্বাসের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা শুরু হয়। শেষমেশ শিশুর নাক থেকে প্লাস্টিকের খেলনা রিভলবারের গুলি বের করতে সক্ষম হন চিকিৎসকরা।
বাচ্চাটির মা বলেন, “এমনটাও সম্ভব ভাবতে পারিনি। কোলেই ছেলেটা আমার নেতিয়ে পড়ছিল। বড় বিপদ ঘটে যেতে পারত। আর কোনওদিনও এই ধরনের খেলনা দেব না হাতে।” চিকিৎসক বলেছেন, “ঠিক সময়ে নিয়ে এসেছিল। এই ধরনের বিপদ গ্রামের দিকের বাচ্চাদের সঙ্গে হয়ে থাকে। অভিভাবকদের খেলনা নির্বাচনের ক্ষেত্রেও সচেতন হতে হবে।”