Drainage system: পঞ্চায়েত উদাসীন! জমি বাঁচাতে নিকাশি নর্দমা তৈরি করলেন কৃষকরা
Bhangar: ব্লক প্রশাসন সূত্রে খবর, ২০২১-২২ অর্থবর্ষে ভগবানপুর পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে সাতুলি ও কৃষ্ণমাটি এলাকায় ৫০-৬০ ফুট কংক্রিটের নিকাশি নালা তৈরি করা হয়। কোন এক অজ্ঞাত কারণে সেই কাজ মাঝপথে বন্ধ হয়ে যায়।
ভাঙড়: দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলার সব্জি ভান্ডার বলা হয় ভাঙড়কে। অথচ সব্জি বাঁচাতে পঞ্চায়েত প্রশাসনের কোনও উদ্যোগ নেই বলে অভিযোগ। জমিতে নিকাশি নালা নেই। তাই সামান্য বৃষ্টিতেই ভগবানপুর অঞ্চলের সাতুলিয়া, কৃষ্ণমাটি, পিঠাপুকুর-সহ বিভিন্ন গ্রামের ফসলের মাঠ জলের তলায় চলে যায়। এ জন্য ফসল বাঁচাতে কৃষকরা নিজেরাই নিকাশি ব্যবস্থা ঠিক করতে উদ্যোগী হলেন। চাঁদা তুলে পাইপ লাইন বসানো শুরু করেছেন তাঁরা। ভাঙড়ের সাতুলিয়া গ্রামের কৃষকরা নিয়েছেন এই উদ্যোগ।
ভাঙড়ে উৎপাদিত আম, জাম, কাঠাল, লিচু, কলার পাশাপাশি ফুলকপি, টম্যাটো, বাঁধাকপি, ক্যাপসিক্যাম, লঙ্কা, পেঁপে, লাউ, কুমড়ো ভিন রাজ্যের পাশাপাশি বিদেশেও রফতানি করা হয়। এলাকার চাষিদের অভিযোগ ভাঙড় ২ ব্লকের ভগবানপুর, চালতাবেড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের কৃষ্ণমাটি, সাতুলিয়া, ভগবানপুর সহ আশপাশের এলাকায় কয়েক হাজার বিঘা কৃষিজমি রয়েছে। অভিযোগ, ওই সমস্ত এলাকায় জল নিকাশি ব্যবস্থা খুবই খারাপ। প্রতি বছরই বর্ষার সময়, প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ওই সমস্ত এলাকায় কৃষি জমিতে এক হাঁটু জল জমে যায়। চালতাবেড়িয়া ও ভগবানপুর পঞ্চায়েতের উপর দিয়ে ভাঙড় কাটা খাল ও শোনপুর বাগজোলা খাল বয়ে গিয়েছে। কৃষকদের দাবি, কংক্রিটের নিকাশি নালার মাধ্যমে কৃষি জমির জল বের করে ওই দুই খালের সঙ্গে সংযোগ করে দিলে কয়েকশো কৃষকরা উপকৃত হবেন। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে গত কয়েক বছর কয়েকশো বিঘা কৃষি জমির ফসল নষ্ট হয়ে গিয়েছে। এর ফলে কোটি কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। কিন্তু পঞ্চায়েত বা পঞ্চায়েত সমিতি সম্পূর্ণ উদাসীন। কেউ কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে অভিযোগ। তাই কৃষকরা গাঁটের কড়ি খরচ করে নর্দমা তৈরির ব্যবস্থা করেছেন।
ব্লক প্রশাসন সূত্রে খবর, ২০২১-২২ অর্থবর্ষে ভগবানপুর পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে সাতুলি ও কৃষ্ণমাটি এলাকায় ৫০-৬০ ফুট কংক্রিটের নিকাশি নালা তৈরি করা হয়। কোন এক অজ্ঞাত কারণে সেই কাজ মাঝপথে বন্ধ হয়ে যায়। স্থানীয় কৃষকদের অভিযোগ, ওই এলাকায় প্রায় ৩০০-৪০০ ফুট নিকাশী নালা তৈরির প্রয়োজন রয়েছে। পঞ্চায়েত ও ব্লক প্রশাসনকে বারবার জানিয়েও কোন কাজ হচ্ছে না। বাধ্য হয়ে এলাকার চাষিরা নিজেদের পকেট থেকে চাঁদা দিয়ে কংক্রিটের ওই নালার সঙ্গে প্রায় ১৭০ থেকে ১৮০ ফুট মাটি খুঁড়ে প্লাস্টিক পাইপ বসিয়ে জুড়ে দেয়। এজন্য তাঁদের প্রায় লক্ষাধিক টাকা খরচ হয়।
বিষয়টি নিয়ে ভগবানপুর অঞ্চল তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি ইব্রাহিম মোল্লা অবশ্য দাবি করেছেন ১০০ দিনের কাজের অধীনে ওই কাজ হয়েছে। কিন্তু কেন্দ্র ওই প্রকল্পের টাকা আটকে রাখায় কাজ বন্ধ রয়েছে। তবে নিকাশি নালার প্রয়োজনীয়তার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন তিনি। তিনি বলেছেন, “১০০ দিনের কাজে ৭০-৮০ দিন নিকাশি নালার কাজ হয়েছিল। কেন্দ্র টাকা বন্ধ করে দেওযায় সেই প্রকল্পের কাজ করা যাচ্ছে। কিন্তু ওই নিকাশি নালার প্রয়োজন রয়েছে। কৃষকরা নিজেই কাজে হাত দিয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি খুব শীঘ্রই গোটা কাজ সম্পন্ন করার।”