Bomb Blast: বোমা মজুত দেখে ফেলেছিল শিশুরা, ‘মুখ বন্ধ করতে’ কলকাতায় পাঁচ নাবালকের দিকে ছোড়া হল বোমা
Narendrapur: আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় নরেন্দ্রপুর থানার পুলিশ।
দক্ষিণ ২৪ পরগনা: দুষ্কৃতীদের ছোড়া বোমার আঘাতে পাঁচ নাবালকের জখম হওয়ার অভিযোগ উঠল। নরেন্দ্রপুর থানা (Narendrapur) এলাকার দাসপাড়ার ঘটনা। জানা গিয়েছে, আহতদের সকলেরই বয়স ১০-১২ বছরের মধ্যে। শুক্রবার দুপুরে মাঠে খেলতে এসেছিল তারা। সেই সময় এই ঘটনা। আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় নরেন্দ্রপুর থানার পুলিশ। এই ঘটনায় চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এই ঘটনায় চাঞ্চল্যকর অভিযোগ সামনে এসেছে। আহতদের পরিবারের দাবি, মাঠে খেলতে গিয়ে বাচ্চারা দেখে মাঠে বোমা মজুত করা হচ্ছে। সেই সময় দুষ্কৃতীরা তাদের মাঠ থেকে চলে যেতে বলে। অভিযোগ, ওই পাঁচ নাবালক কথা শুনতে চায়নি। এরপরই দুষ্কৃতীরা তাদের লক্ষ্য করে পর পর দু’টি বোমা ছোড়ে। পাঁচজনকে আহত অবস্থায় নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে।
দাসপুরের ওই মাঠে রয়েছে টিনের গুমটি। শুক্রবার দুপুরে সেখানেই বোমা মজুত করা হচ্ছিল বলে অভিযোগ এলাকার লোকজনের। পাঁচ নাবালক যায় ওই টিনের গুমটির কাছে। সুতলি বোমা দেখতে পায় তারা। এদিকে সে সময় ভিতরে কয়েকজন ছিল। ওই বাচ্চারা তাদের নানারকম প্রশ্ন করতে থাকে। শিশুদের প্রশ্নে বিরক্ত হয়ে ওই দুষ্কৃতীরা তাদের এলাকা ছেড়ে চলে যেতে বলে।
কিন্তু শিশুমন তাতে রাজি হয়নি। অভিযোগ, এরপরই ওই নাবালকদের লক্ষ্য করে বোমা ছুড়ে মারে দুষ্কৃতীরা। আহতরা পরিবারের লোকজনকে এমনটাই জানিয়েছে। নরেন্দ্রপুরের দাসপাড়ার লোকজনের অভিযোগ, সন্ধ্যা নামলেই এখানে অচেনা লোকজনের ভিড় বাড়ে। এলাকার লোকজনের কথায়, মাঠটি মূলত পরিত্যক্ত। মাঝেমধ্যে বাচ্চারা খেলতে আসে। এদিনও খেলতে এসেছিল তারা। এরপরই এই ঘটনা।
কারও হাতে, কারও পায়ে ক্ষত আছে বলে এলাকার লোকজন জানিয়েছেন। তবে সকলেই স্থিতিশীল বলে জানা গিয়েছে। তবে এই ঘটনার পর ভয় পেয়ে গিয়েছে তারা। আতঙ্কিত পাড়ার লোকজনও। সন্ধ্যার পর এলাকায় অসামাজিক কাজকর্ম চলে বলে ইতিমধ্যেই অভিযোগ তুলেছেন তাঁরা। কিন্তু দিনের আলোতেও যে এলাকা নিরাপদ নয় তা ভাবতে পারছেন না।
স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, “আমার ছেলে জানাল এখানকার টিনের ঘরটা থেকে ওদের দেখে বোমা ছুড়েছে। একটা ফাটেনি। তারপরেরটা যেই মেরেছে দেওয়ালে গিয়ে ছেলে লুকিয়ে পড়েছে। সে সময় পাঁচজন ছিল ওরা। তারপর রক্তাক্ত অবস্থায় ওরা দৌড়ে পালায়। ছেলে বলছে, টিনের ঘর থেকে লোকগুলো বলছিল আর এলে লাশ ফেলে দেবে।”
ইতিমধ্যেই এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক তরজাও শুরু হয়েছে। এই ঘটনা প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা বলেন, “আমরা বারবারই বলে আসছি এ রাজ্যে সবথেকে সফল শিল্প হচ্ছে বোমা শিল্প। সেই বোমা শিল্প যে কুটির শিল্পের আকার নিয়েছে, এলাকায় এলাকায় সমাজ বিরোধীদের দৌরাত্ম্যে শিশুদের পর্যন্ত আহত হয়ে হাসপাতালে যেতে হচ্ছে এর থেকে বোঝা যাচ্ছে রাজ্যে একটা অযোগ্য সরকার চলছে।”
মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, “আমার মনে হয় যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পুলিশ ব্যবস্থা নিক। এগুলো একেবারে বন্ধ করা দরকার। দুষ্কৃতীদের রাস্তাঘাটে নয়, জেলের ভিতর থাকার কথা। যারা এসব কাজ করছে, সেই সব সমাজবিরোধীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হোক। আর কেন হঠাৎ এগুলো বাড়ছে, এটার পিছনে কী আছে সেটাও দেখতে হবে।”
সিপিআইএম নেতা শমীক লাহিড়ি বলেন, “রাজ্যের প্রশাসনের মাথায় দুষ্কৃতীদের মদতদাতারা বসে আছে। রাজ্যটা দুষ্কৃতীরা শাসন করবে না তো কে করবে? শিশুদের পর্যন্ত নিষ্কৃতি নেই। একটা বাড়িতে বোমা মজুত করছিল। বাচ্চারা দেখে ফেলায় বোমা মারবে?”