দক্ষিণ ২৪ পরগনা: প্রতিটা দিন ছিল তার কাছে দুঃস্বপ্নের মতো। যে বয়স বাবার কাছে আবদারের, সেই বাবাকে দেখলেই লুকোতে চাইত ছোট্ট মেয়ে। চোখে-মুখে সর্বক্ষণ কেমন একটা ভয়ের ছায়া। কাউকে কিচ্ছুটি বলতেও পারত না সে। গুটিয়ে থাকত। দিনের পর দিন এভাবেই যৌন হেনস্থার শিকার হতে হত নাবালিকা রিয়া (নাম পরিবর্তিত) কে। কিন্তু সে জানাবে কাকে? অভিযুক্ত যে নিজের বাবা!
না, আর সহ্য করা যায়নি এই যন্ত্রণা। সাহস করে একদিন মাকেই সব খুলে বলে ছোট্ট মেয়েটি। তার পর থানা-পুলিশ এবং মামলা। অবশেষে মেয়ের উপর যৌন নির্যাতনের ঘটনায় বারুইপুর আদালতে দোষী সাব্যস্ত হল বাবা। তাকে ২০ বছরের কারাবাস দিল আদালত।
এদিন মেয়ের যৌন হেনস্থার অভিযোগে অভিযুক্ত বাবাকে ২০ বছরের জেল এবং ১০ হাজার টাকার সাজা ঘোষণা করে বারুইপুর আদালত। পাশাপাশি অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাবাস দেওয়া হয় তাকে। কোভিড পরিস্থিতির মধ্যে মাত্র ১৩ মাসেই সংশ্লিষ্ট মামলার সাজা ঘোষণা করলেন বারুইপুর মহকুমা আদালতের অ্যাডিশনাল ডিস্ট্রিক্ট ও সেশন বিচারক সন্দীপ কুমার মান্না।
সোনারপুর এলাকার বাসিন্দা সাজাপ্রাপ্ত ধনঞ্জয় হালদারের বিরুদ্ধে অভিযোগ, দিনের পর দিন তার যৌন লালসার শিকার হত নাবালিকা মেয়ে। প্রায় প্রতিদিনই পরিবারের সদস্যদের অলক্ষে মেয়ের উপর যৌন নির্যাতন করে গিয়েছে সে বলে অভিযোগ। একদিন সমস্ত ঘটনার কথা মাকে খুলে বলে মেয়ে। স্বামীর বিরুদ্ধে থানায় যান ওই মহিলা। ঘটনায় বারুইপুর মহিলা থানায় অভিযোগ দায়ের হয় ২০২০ সালের ১১ জুলাই।
এমন ভয়ঙ্কর অভিযোগ পেয়ে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। অভিযোগ দায়েরের পরপরই অভিযুক্ত বাবা ধনঞ্জয় হালদারকে থেকে গ্রেফতার করা হয়। তার বিরুদ্ধে পকসো আইনে মামলা রুজু করে সোনারপুর পুলিশ। ধনঞ্জয় রাজমিস্ত্রীর কাজ করত বলে জানা গিয়েছে। বারুইপুর মহিলা থানার আইসি কাকলী ঘোষ কুন্ডুর তত্ত্বাবধানে কৃষ্ণা দাস এই ঘটনার তদন্ত করেন। চলে বিচার প্রক্রিয়া। অবশেষে শনিবার অভিযুক্ত বাবার ঘোষণা করল বারুইপুর আদালত। আরও পড়ুন: আত্মীয়ের বাড়ি থেকে ছেলে সহ ‘অপহৃত’ স্ত্রী! পুলিশের কাছে ছুটলেন স্বামী, তারপর.